রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
স. ম. জাহাঙ্গীর আলম, ধনবাড়ী (উপজেলা) উপজেলা সংবাদদাতা : সরকার বিএডিসির অচল নলকূপ সচলকরণের মাধ্যমে সুলভ সেচের ব্যবস্থা করেছে। এতে একরপ্রতি সেচ খরচ কমেছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি নলকূপে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। পানির অপচয় যাতে না হয় এ জন্য ভূগর্ভস্থ সেচনালা চালু করা হয়েছে। প্রতিটি নলকূপে সেচ কমিটি গঠন করে পরিচালনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য বিএডিসি বাড়তি তিন-চার লাখ টাকা পল্লী বিদ্যুৎকে পরিশোধ করেছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে সংযোগ নিতে স্কিমপ্রতি কৃষকদের নামমাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা এককালীন জমা দিতে হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলায় গভীর নলকূপে এ পদ্ধতি চালু হয়েছে ২০১২ সাল থেকে। এ পর্যন্ত জেলার ২০৬টি গভীর নলকূপ এভাবে চলছে। এতে কৃষকরা খুবই উপকৃত হচ্ছে। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী, গোপালপুর, মধুপুর, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলায় গভীর নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার দায়িত্ব ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর। এর সদর দপ্তর ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায় অবস্থিত। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বাছাই করা ঠিকাদারের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের এ পাঁচ উপজেলার গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ ও সংযোগ প্রদানের কাজ করে থাকে। ময়মনসিংহ জেলার সরকারি দলের কয়েক পাতি নেতা এ সমিতির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করে আসছে। এসব ঠিকাদারের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উত্তর টাঙ্গাইলের সেচ গ্রাহকরা। ঠিকাদাররা বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ ও সংযোগ প্রদানে প্রকাশ্যে ঘুষ চেয়ে থাকে। তাদের দাবিমতো ঘুষ না দিলে লাইন নির্মাণের কাজ বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখে। এমনি এক অসৎ ঠিকাদারের দ্বারা চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন ধনবাড়ী উপজেলার বর্ণিচন্দবাড়ি গ্রামের গভীর নলকূপের ম্যানেজার জামাল উদ্দীন। তিনি ইনকিলাবের নিকট অভিযোগ করেন, বিএডিসি টাঙ্গাইলের ক্ষুদ্র সেচ বিভাগ তার নলকূপে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর দুই লাখ একাত্তর হাজার টাকা জমা দেন। পরে সমিতির প্রকল্প বিভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করার জন্য ১৪৬৭৬ নাম্বার একটি লট নির্ধারণ করে মুক্তাগাছার ঠিকাদার শামসুল ইসলামকে তা করার অনুমতি দেন। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ঠিকাদার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের মালামাল নিয়ে ধনবাড়ীতে আসেন। তিনি কাজ শুরুর আগেই স্কিম ম্যানেজার জামাল উদ্দীনের নিকট ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেয়ায় ঠিকাদার লাইনের ৬টি খুঁটি পুঁতে চলে যান। কিন্তু লাইনে সময়মতো বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে সংযোগ না দেয়ায় সেচ পাম্প চালু করা যায়নি। ফলে সহ¯্রাধিক একর জমিতে সেচের অভাবে বোরো আবাদ হয়নি। এবার সেচ মৌসুম শুরুর তিন মাস আগেই ম্যানেজার জামাল উদ্দীন মুক্তাগাছা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করেন। সমিতির স্টাফরা ঠিকাদার শামসুল হকের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন। ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি পুনরায় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। বহু দেনদরবারের পর লাইনে তার টানানোর জন্য ঠিকাদার পরবর্তী সময়ে মালামাল নিয়ে ওই গ্রাম যান। কিন্তু খুঁটিতে তার না টানিয়ে তিনি চলে গিয়ে জেনারেল ম্যানেজার বরাবর মিথ্যা রিপোর্ট করেন ঘটনাস্থলে তার টানাতে বাধা থাকায় তিনি কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি। সেচ স্কিমের চাষিরা অভিযোগ করেন, খুঁটিতে তার টানানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছিল না। মূলত ঠিকাদার ঘুষ না পেয়ে অসন্তষ্ট হয়ে কাজ ফেলে গিয়ে মিথ্যা রিপোর্ট করেছে। গত ডিসেম্বর মাসে সমিতির নিয়মিত মাসিক বোর্ড সভায় দুজন পরিচালক বিষয়টি উত্থাপন করেন। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখার দাবি জানান। কিন্তু সমিতির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো তদন্ত না করায় ঠিকাদার লাইন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার সাহস দেখাচ্ছে। এ ব্যাপারে স্কিম ম্যানেজার জামাল উদ্দিন প্রতিকার প্রার্থনা করে পল্লী বিদুৎ বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেও ফল পাননি। চাষিরা জানান, ইতোমধ্যে বোরো চাষের সময় চলে যাচ্ছে। কিন্তু নলকূপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় বিকল্প উপায়ে স্কিমের সামান্য কিছু জমি চাষের আওতায় এলেও সিংহভাগ একর জমি এবারো অনাবাদি থাকার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার মোবাইলে কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। সমিতির জেনালে ম্যানেজার জানান, কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।