Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক সংকটে মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা

| প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৈয়দ নাজমুল ইসলাম, উজিরপুর (বরিশাল) থেকে : উজিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫ উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত। এই হাসপাতালের পূর্বে বাবুগঞ্জ, পশ্চিমে বানারীপাড়া, উত্তরে আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা। উজিপুর হাসপাতালটি নিকটবর্তী হওয়ায় ও যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভাল থাকায় আশেপাশের উপজেলার  রোগিরা এখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে ডাক্তার-নার্সসহ অন্যান্য জনবল সংকট। চিকিৎসাসেবার বেহাল দশার কারণে সড়কের পাশে, হাট-বাজার, বিভিন্ন স্টেশনে ফার্মাসিগুলোর হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে রোগিরা যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে রোগীরা সুস্থতার চেয়ে হয়রানি হচ্ছে বেশি। এই হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকলেও নিয়মিত দেখা যায় অর্ধশতাধীক ঔষধ কোম্পানির মেডিকেল রিপ্রেজেনটিভদের। এই হাসপাতালে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডগুলোতে গিয়ে অপরিষ্কার নোংরা গন্ধ যুক্তো বিছানায় পরে রোগিদের রোগ যন্ত্রণায় কাত্রাতে দেখা যায়। এ বিষয় রোগিরা বলেন মাঝের মধ্যে সকাল ১০/১১টার দিকে কম বয়সি একজন ডাক্তার এসে ২/১ জন রেগি দেখে চলে যায়, কথা বলতে চাইলে রাগ হয়ে যান। যখন খুশি তখন নাম মাত্র খাবার দেন। স্থানীয় একাদিক ব্যক্তি ইনকিলাবকে বলেন, ডা. শামছ উদ্দিন প্রায় ২০ বছর ধরে এই হাসপাতালটি ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান মনে করে তার খেয়াল খুশি মতো পরিচালনা করছেন। তারা আরো বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২.৩০ মিনিট পর্যন্ত ফি ছাড়া রোগী দেখার নিয়ম থাকলেও ডাঃ শামছ উদ্দিন তা মানছেন না। রোগীদের বিভিন্ন রোগের সমস্যার পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা হাসপাতালে থাকলেও রোগিরা বাইরের ডায়াগনিস্টিক সেন্টারগুলোতে যেতে বাধ্য হন। সেখান থেকে হাসপাতালের ডাক্তার কমিশন পান ৪০%। এতে ডাক্তার লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন অসহায় রোগিরা। অনুসন্ধানে আরো অনেক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে, ১৯৯৫ সনের ৭ জানুয়ারি উজিরপুর হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে ডা, একেএম শামছ উদ্দিন যোগদান করেন। ২০০৯ সালের ২৩ মে বদলি হলেও উজিরপুর ছাড়েননি। ২০১২ সালের ৯মে পুনরায় উজিরপুর হাসপাতালে বদলি হয়ে আসেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে হাসপাতালটি নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছেন। ৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে ১০ জনের তালিকা থাকলেও ৫টি পদই শূন্য। ১ জন প্রশিক্ষণে। মেডিসিনের ২জন ডাক্তার থাকলেও প্রশিক্ষণের জন্য চিকিৎসক সওকত আলী দীর্ঘদিন ছুটিতে। একজন মেডিসিনের চিকিৎসক সব্যসাচী দাস সানী, সে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে (ভর্তিরত) রোগী দেখেন। বহির বিভাগের দায়িত্বও পালন করেন সব্যসাচী। এসব রোগি দেখে আবার দুপুর ১ টার মধ্যে বর্হিবিভাগ বন্ধ করেন। সার্জারিতে রয়েছেন ডাক্তার আরিফ উদ্দিন খান। আয়ুবেদী ডাক্তার হিসেবে আছেন নুসরাত জাহান। শূন্য পদে জুনিয়ার কনসালটেন্ড (মেডিসিন), জুনিয়ার কনসালটেন্ড (গাইনী), জুনিয়ার কনসালটেন্ড (এ্যনেসথিসিয়া), মেডিকেল অফিসার ২জন। ডেন্টাল সার্জন এর পদ শূন্য, ডেন্টাল টেকনিশিয়াল প্রেশনে ঢাকা থাকেন। ল্যাব টেকনিশিয়ানের ২টি পদের মধ্যে ১শূন্য, ফার্মাসিস্ট ২পদের মধ্যে ১ টি শূন্য, ওয়ার্ড বয় ৩ পদের মধ্যে ২টি শূন্য, কুক মসালচী ২পদের ১টি শূন্য, আয়া ২ পদের মধ্যে ১টি শূন্য, অন্যটি ডেপুটিশনে, ঝাড়–দার ৫পদের মধ্যে ৩টি শূন্য, দীর্ঘদিন  এক্সে মেশিন অকেজো। আল্ট্রা¯েœাগ্রাম টেকনিশিয়ান পদ শূন্য, ইসিজি টেকনিশিয়ান পদ শূন্য, ল্যাবরেটরি ২টি পদের মধ্যে ১ টি শূন্য। এ বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. একেএম শামছ উদ্দিন-এর কাছে জানতে চাইলে পদ শূন্যের বিষয় বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করেও কোন লাভ হয়নি। তিনি বলেন, বরিশাল অঞ্চলে হাসপাতালে ৬৮ ভাগ পদই শূন্য আছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোন  রোগিকেই পরীক্ষার জন্য বাইরে যেতে বলি না। হাসপাতাল থেকে কোন রোগি বাইরে পরীক্ষার জন্য গেলে সেখান থেকে আমাদের ১৫% কমিশন দেয়। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন এখানে কর্মরত আছি। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূত কোন কাজ করিনি।
 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ