Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ তিন সম্পাদককে তলব করার দাবি শামীম ওসমানের

| প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : কয়েকটি পত্রিকার নাম উল্লেখ করে ওই পত্রিকাগুলো সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের উদীয়মান নেতাদের চরিত্র হননে নেমেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। তিনি বলেছেন, এই পত্রিকাগুলো হলুদ সাংবাদিকতা করছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ তিন পত্রিকার সম্পাদককে তলব করার জন্য স্পিকারের প্রতি অনুরোধ করেন। এ সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি বলেন, আপনার বক্তব্যের সাথে আমি একমত। তবে এ চেয়ারে বসে থেকে আপনার মতো বলতে পারছি না। গতকাল বুধবার রাতে প্রেসিডেন্টের ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় তিনি এ দাবি করেন।
বক্তৃতার শুরুতেই মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আগামিতে আমরা লিটন হব। এরা কে? আমরা এদেরকে ভয় পাই না। আমি ভয় পাই, অপমৃত্যু ও অপবাদ নিয়ে মৃত্যু। লিটন কি তার মৃত্যুকে ভয় পেয়েছিল? লিটন তার মৃত্যুকে ভয় পায়নি। ভয় পেয়েছিল তার বিরুদ্ধে যে অপবাদ দিয়েছিল সেই অপবাদের। কিছু পত্রিকা, কিছু ইয়েলো জার্নালিস্ট তার বিরুদ্ধে এই অপবাদ দিয়েছিল। আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। এটা আমার এক্সটেনশন লাইফ (বর্ধিত জীবন), আল্লাহ আমার এক্সটেনশন লাইফ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ অফিসে গ্রেনেড হামলা করেছিল। আমি রক্তের ওপর পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম একজন মুসলমান হিসেবে আমার ওপর আযাব শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এরা  কারা? এই পত্রিকাগুলো কারা? এই ডেইলি স্টার, এই প্রথম আলো, তারা চরিত্র হননে নেমেছে। তারা রাইজিং লিডার। তাদের বিরুদ্ধে কোনো না কোনোভাবে লিখে দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে সূত্র বলেছে। আমি জানি না এটা আমার শেষ বক্তব্য কি না? আপনাকে শেষবারের মতো দেখছি কি না?  নেত্রী বলেছেন, গরিব মানুষের জন্য কাজ করো। মরে যাবা তো মরেই যাবা। আমি আজ একটা কথা বলতে চাই। লংমার্চের রুট পরিবর্তন করে দিয়েছিলাম, লংমার্চে বাধা দেইনি। আমি জানতে পেরেছিলাম, তাদের প্ল্যান ছিল। ফেনীর কাছে কোথাও খালেদা জিয়ার গাড়ীর পেছনে যে দুটি বাসে মাটি কাটার শ্রমিকরা ছিল। সেই গাড়িতে বোমা মেড়ে উড়িয়ে দেয়া হবে। তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর নেন। ওই বাসে ৬৫ জন শ্রমিক ছিল। আমি তাদের বাঁচিয়েছি। এরপর থেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
তিনি আরো বলেন, যখন ইচ্ছা তখন একজনের বিরুদ্ধে লেখে দেয়া হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের পর প্রথম আলোতে লেখা হলো শামীম ওসমান জড়িত। তারা কিভাবে এটা জানতে পারল, এ জন্য নোটিস করলাম। বললাম এই তথ্য কোথায় পেলেন? স্পিকার, প্রেসিডেন্টকে জানান। তারা জানাল না। আমি তথ্য সচিবের কাছে নোটিস করলাম, বললাম আপনাদের পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারা কোথায় এই তথ্য পেল? জানুন। ওখান থেকেও কোনো প্রতিকার পেলাম না। আজ সাত খুনের রায় হয়েছে। আজ প্রথম আলো কী বলবে। শেখ হাসিনার প্রশ্নে যারা বিন্দুমাত্র আপোষ করে না, তাদেরকে টার্গেট করা হচ্ছে। চরিত্র হনন করে রাস্তায় বের হতে দেবে না। আমরা যারা ৭৫’ পরবর্তিত রাজনীতিতে এসেছি , শেখ হাসিনা আমাদের মা, মাতৃতুল্য। মাহফুজ আনাম তো স্বীকারক্তি দিয়েছিল। ওয়ান ইলেভেনের সময় চাপে পড়ে অনেক কিছু ছেপে ছিল। সাংবাদিকরা সবাই খারাপ না, ৯০ ভাগ সাংবাদিক ভালো। তারা আজ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
শামীম ওসমান বলেন, নেত্রী (শেখ হাসিনা) নীলকণ্ঠি। উনি বিষ খেয়ে বিষ হজম করেন। উনার  মতো ধৈর্য্যশীল  নীলকণ্ঠি আমি হতে পারছি না। ওরা চরিত্র হনন করবে। ওরা কারা? উলফার টাকায় ওরা চলছে।
সরকারের সুযোগ-সুবিধা নেন, উপদেষ্টা হন। উনার পত্রিকায়ও সংসদ সদস্যদের চরিত্র হনন করা হয়। আর উনি অবজারভারের সম্পাদক হয়ে যান। এই ভদ্রলোক যিনি আমাদের ওপর ভর করে টিকে আছেন। এই ভদ্রলোক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিয়ে দেয়ার জন্য স্বাক্ষর করেছিলেন। কে এই লোকটা? আমাদের মধ্যে ঘুরাফেরা করেন। সংসদ সদস্যদের মাদক সম্রাট  বানানোর চেষ্টা করেন। উনার  নাম ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
কয়দিন বাঁচব জানি না। এদের কাছে মাথানত করার লোক আমি না। ইসলামে যা যা নিষিদ্ধ তার একটিও যদি আমি স্পর্শ করি গলায় জুতার মালা নিয়ে বেরিয়ে যাবো। এই সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন আমি ডেইলি স্টার, প্রথমআলো পড়ি না।  আপনার নেতারা কিভাবে ডেইলি স্টারের প্রতিষ্ঠাবাষিকীতে গিয়ে কেক কাটে। আপনি রুলিং দেন। তলব করুন। ওদেরকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা যা লিখেছে তার প্রমাণ কী? প্রমাণ দিতে না পারলে ব্যবস্থা নেন। আইন করেন, আইন করার সময় হয়েছে। ওরা খেলায় নেমে গেছে, ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আপনি হয় আমাকে প্রোটেকশন দেন, না  হয় আমাকে সাধারণ মানুষ বানিয়ে দেন। দল ও নেত্রীর ওপর যাতে দায় না আসে। তারপর দেখব সাধারণ মানুষের ক্ষমতা কত। পরে জাতীয় পার্টির ফিরোজর রশীদ তার বক্তব্য সমর্থন করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ