পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নতুন নির্বাচন কমিশনের সদস্য বাছাইয়ে জন্য প্রেসিডেন্টের গঠিত সার্চ কমিটিতে ক্ষুব্ধ হয়েছে বিএনপি। গতকাল বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়া নামের তালিকা দেখে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এই পুরো সার্চ কমিটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের পছন্দের। কারণ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে এই সরকার, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) নিয়োগ দিয়েছে এই সরকার। প্রো-ভিসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের নিয়োগকৃত।
নিরপেক্ষতার চরম যে নিদর্শন, মহামান্য প্রেসিডেন্ট আমাদেরকে সেটা দিয়েছেন। আমরা শুধু হতাশ হইনি, আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমরা জানি না এই সার্চ কমিটি কী ধরনের নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, তা এখনই বুঝতে পারছি। এই সার্চ কমিটি জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ফখরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, রাজনৈতিক সংকট নিরসন যদি না করা যায়, তাহলে মানুষকে প্রতারণা করে, বোকা বানিয়ে এই ধরনের সার্চ কমিটি করে কোনো দিন তার কাজ করতে সক্ষম হবে না। কারণ যে সার্চ কমিটি গঠনের সঙ্গে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কোনো প্রতিফলন নেই।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক লেবার পার্টির উদ্যোগে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র-শহীদ জিয়া-আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
সার্চ কমিটিতে স্থান পাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর শিরিন আখতারের দেয়া প্রতিক্রিয়া যা একটি বেসরকারি চ্যানেলে সম্প্রচার হয়েছেন তা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কিছুক্ষণ আগে তিনি টেলিভিশনে কী কমেন্ট করেছেন দেখুন। টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোর সম্ভাবত টেলিফোনে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেছেন, আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পবিত্র দায়িত্ব মনে করি। এখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা যে দায়িত্ব দেবেন, তাকে পবিত্র দায়িত্ব মনে করে তা পালনে সচেষ্ট হবো? বুঝেন, কী নিরপেক্ষ একটি সার্চ কমিটি গঠন হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিলো, এই কারণে যে, কেয়ারটেকার গর্ভামেন্ট সিস্টেম তখন তুলে দেয়া হয়েছিলো। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে যায়নি বিরোধী দল। যে কারণে জাতীয় পার্টি ছাড়া সব বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করেছিল। সেই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার দায়িত্ব তাকে দিয়েছেন, তিনি সেই দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করুন। সুতরাং নিরপেক্ষতার চরম যে নিদর্শন মহামান্য প্রেসিডেন্ট আমাদেরকে সেটা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা মহামান্য প্রেসিডেন্টকে মনে করি যে, তিনি হচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠান, যে প্রতিষ্ঠান এই রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অভিভাবক। তার কাছে আমরা সব সময় আশা করি, প্রত্যাশা করি, আমরা একটা নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত পাবো। দুর্ভাগ্য আমাদের, দুর্ভাগ্য এই জাতির, যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিলো এই রাজনৈতিক সংকট থেকে জাতিকে বের করার আনার, সেই সুযোগটিও তিনি গ্রহণ করলেন না। সুতরাং জাতিকে আবার আরেকটি অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়া হলো। আরেকটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে ঠেলে দেয়া হলো।
সংকট নিরসনে সরকারের অনাগ্রহতার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এই সরকার আসার পর থেকে একবারের জন্য সরকারের দিক থেকে কোনো রকমের উদ্যোগ দেখলাম না। অর্থাৎ এটা বলতে দ্বিধা নেই, সরকার চায় এই ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করুক, এই অস্থিতিশীলতাই থাকুক, এই পানি ঘোলাটে হতে থাকুক। আর এই ঘোলাটে পানির মধ্য থেকেই চমৎকার করে মাছ শিকার করবেন। অর্থাৎ ক্ষমতায় যাবেন, আর সেই ক্ষমতা তারা দখল করে থাকবেন।
‘বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব আমার নাÑ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই উক্তির জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যিনি সরকারের প্রধান এবং রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত তার কাছে জনগণ এমন মন্তব্য আশা করে না। কারণ তারা মনে করে, সরকারের প্রধানের দায়িত্ব হচ্ছে দেশকে সুষ্ঠু, শান্তিময় একটা পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যাওয়া। সংঘাতহীন, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিৎ যা যেকোনো উন্নয়নের পূর্বশর্ত। তারা (সরকার) জেনে শুনে এই কাজটা করেছেন এজন্যে তারা আবারো ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চান।
১৯৭৫ সালের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু এবং বর্তমান অবস্থার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে এই সংকট উত্তরণে সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদির পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনািপর ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আজম খান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির ফারুক রহমান, শামসুদ্দিন পারভেজ, রামকৃষ্ণ সাহা, মাহমুদ খান, অধ্যাপক মহসিন মিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।