Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৪৩ বছর পর ‘নিজস্ব ভবনে’ ইসি

খোশমেজাজে নির্বাচন কমিশনাররা; উৎফুল্ল সচিবালয়ে কর্মরতরাও

| প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নতুনরা বর্তমান কমিশনের মতোই হবে -আশাবাদ সিইসির
পঞ্চায়েত হাবিব : দীর্ঘ ৪৩ বছর পর অবশেষে দাফতরিক কাজ পরিচালনার জন্য ‘নিজস্ব ভবন’ পেল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মিত ১১ তলাবিশিষ্ট সুদৃশ্য এ ভবনে গতকাল রোববার প্রথম অফিস করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্য কমিশনাররা। পাশাপাশি ইসি সচিবালয়ে কর্মরতরাও প্রথমবারের মতো অফিস করেছেন এখানে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবারই ১৯৭৩ সাল থেকে শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের দু’টি ব্লকে থাকা ইসি সচিবালয়ের সব মালামাল নতুন ভবনে স্থানান্তর সম্পন্ন হয়েছে। উৎফুল্ল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল এখানে অফিস করেছেন খোশমেজাজে।
এদিকে নিজেদের মেয়াদে নিজস্ব ভবনে উঠতে পেরে খুশি সিইসিসহ অন্য কমিশনাররাও। গতকাল নতুন অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নতুন ভবনে কাজ শুরু করার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা এতদিন অন্যের বাড়িতে ছিলাম। এখন নিজেদের বাড়িতে এসেছি। আপনারাও (সাংবাদিকরা) এতদিন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রশ্ন করতেন, এখন নতুন ভবনের রুমে বসে প্রশ্ন করতে পারবেন।’ এসময় ভবনের অসম্পূর্ণ কাজগুলো অল্প ক’দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন সিইসি।  
নতুন ইসির যাত্রা নতুন ভবন থেকেই শুরু হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে যে নির্বাচন কমিশন হবে, ওই কমিশন বর্তমান কমিশনের মতোই হবে। নারায়াণগঞ্জসহ সব নির্বাচন বর্তমান ইসি যেভাবে পরিচালনা করেছে, নতুন নির্বাচন কমিশনও একই প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, স্বাধীনতা অর্জনের ৪৫ বছর পার হলেও এতদিন নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কোনো অফিস ভবন ছিল না। দীর্ঘদিন পরিকল্পনা কমিশনের চত্বরে দু’টি ব্লকে কমিশনের কাজ চালাতে হয়েছে। তিনি জানান, পাকিস্তান আমলে সেন্ট্রাল ইলেকশন কমিশনারের অফিস ছিল ইসলামাবাদে এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রভিনসিয়াল ইলেকশন কমিশনের অফিস ছিল ঢাকার মোমেনবাগে। ১৯৭১ সালের মে-জুন মাসে প্রভিনসিয়াল ইলেকশন কমিশনের অফিসে বোমা হামলার ঘটনায় একজন নৈশ প্রহরী মারা যান। এরপর জুন ১৯৭১ সালে প্রভিনসিয়াল ইলেকশন কমিশনের অফিস সচিবালয়ে স্থানান্তরিত হয়। পরে ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিস পরিকল্পনা কমিশনের ৫ ও ৬ নম্বর ব্লকে স্থানান্তরিত হয়। এরপর ৪৩ বছর নিজস্ব ভবন ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়েছে ইসিকে।
ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশনের আমলেই ইসির নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। ২১৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির কাজ চলতি বছরের জুনে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছয় মাস আগেই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। তবে নতুন ভবন ব্যবহারের জন্য যতটা উপযোগী করার দরকার ছিল এখনো ততটা উপযোগী করা হয়নি। ভবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলেরও অভাব রয়েছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে তোলা নতুন ভবনটিতে বর্তমান ইসির পুরনো আসবাব সামগ্রীই ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া পুরাতন নষ্ট এসিগুলোও ওই ভবনে নিয়ে আসা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারের অর্থায়নে জুলাই ২০১১ থেকে জুন ২০১৭ মেয়াদে বাস্তবায়নে কন্সট্রাকশন অব ইলেকশন রিসোর্সেস সেন্টার (ইআরসি) প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় ২১৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় দু’টি বেইজমেন্ট ও ১২তলাবিশিষ্ট ১ দশমিক ২২ লাখ বর্গফুট আয়তনের ইটিআই ভবন এবং দু’টি বেইজমেন্ট ও ১১তলাবিশিষ্ট ২ দশমিক ৫৮ লাখ বর্গফুট আয়তনের নির্বাচন ভবন নির্মাণ করা হয়। দেশীয় প্রকৌশলীরা ভবনটির নকশা, স্ট্রাকচারাল ও আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, নির্মাণ এবং সুপারভিশন করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ