Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রশি টানাটানিতে কাটেনি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের অনিশ্চয়তা

| প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মিত না হওয়ায় এবং উপজেলার নির্মিত বহুতল ভবন, গুদাম ও বড় বড় মার্কেটগুলোতে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা বিরাজ করছে। এদিকে সম্প্রতি ১৫৬টি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করবে সরকার একনেকে বৈঠকে প্রায় ১৩শ কোটি টাকা ব্যয়ে সংশোধন অনুমোদন প্রকল্পের আওতায় বগুড়া জেলার ২টি উপজেলার মধ্যে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণের টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে দুপচাঁচিয়া একটি উল্লেখযোগ্য। ব্যবসা-বাণিজ্য সমাদৃত এই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভালো হওয়ায় সব দিক দিয়ে সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। এই উপজেলার অধীনেই রয়েছে দুপচাঁচিয়া ও তালোড়া দুটি পৌরসভা। উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে উত্তরে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলা, দক্ষিণে বগুড়ার নন্দীগ্রাম, পূর্বে কাহালু এবং পশ্চিমে আদমদিঘী ও নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলা অবস্থিত। উপজেলা সদরের পাশে উল্লিখিত উপজেলাগুলোর অবস্থান হওয়ায় এসব উপজেলার সকল শ্রেণির মানুষ তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, কেনাকাটা, ব্যাংক-বীমা, চিকিৎসাসেবা, লেখাপড়াসহ নৈমিত্তিক সকল কাজেই এই দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে রয়েছেÑ দুটি ডিগ্রি কলেজ, মাদ্রাসা, কয়েকটি কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বে-সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১০ থেকে ১২টি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক-বীমা, ১টি সরকারি হাসপাতালসহ ১ ডজনের অধিক বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক, অত্যাধুনিক কয়েকটি বিউটি পার্লার, সেই সাথে রাজধানী ঢাকা ও জেলা শহরের সাথে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠেছে প্রায় ডজন খানিক অত্যাধুনিক বিপণি বিতান ও মার্কেট। এসব অত্যাধুনিক ও অভিজাত বিপণি ও মার্কেটগুলোর মধ্যে দুপচাঁচিয়া নিউ মার্কেট, জোবেদা শপিং সেন্টার, আবুল চেয়ারম্যান মার্কেট, আমজাদ কমপ্লেক্স, শাখিদার প্লাজা, চাচা-ভাতিজা সুপার মার্কেট, মৌ প্লাজা, বিসমিল্লাহ সুপার মার্কেট, আলহাজ নুরুল ইসলাম সুপার মার্কেট, আলহাজ দলিল উদ্দিন মার্কেট উল্লেখযোগ্য। দুপচাঁচিয়াসহ আশেপাশের উল্লেখিত উপজেলার মানুষগুলো এখন তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য জেলা শহরে না গিয়ে এসব মার্কেটেই ভিড় করে। এদিকে উপজেলা সদরে রয়েছে কয়েকটি মোটরসাইকেল ও টিভি-ফ্রিজ ক্রয়-বিক্রয়ের শোরুম, রয়েছে কয়েকটি মোবাইল মার্কেট। এ ছাড়াও উপজেলা সদরেই ঊষা ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরি, ঊষা ফ্লাওয়ার মিল, বেশ কয়েকটি অটো রাইস মিল, স’মিল, ১টি সার কারখানা, ৩টি কোল্ড স্টোর, সরকারি খাদ্য গুদাম, বেশ কিছু চাতাল ও মিলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি শনিবার উপজেলার বিভিন্ন নিউ মার্কেট, শপিং সেন্টার, মিল কারখানা ও বহুতল ভবনগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও অগ্নিনির্বাপণ স্থাপনার ব্যবস্থাপনা নেই। যে যার খেয়ালখুশিমতো বৈদ্যুতিক তার লাগিয়েছে। অনেকে রাসায়নিক দ্রব্য মজুদ করেছে। অথচ আগুন নেভানোর জন্য এসব মার্কেট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও মিল কারখানায় স্বয়ংসম্পূর্ণ ফায়ার ফাইটিং বা অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা নেই। অপর দিকে নিয়ম মেনে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি না করায় অগ্নিকা-ের মতো ঘটনা ঘটার আশক্সঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাপ্ত এক তথ্যে জানা গেছে, কয়েক বছর পূর্বে দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে (বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে) তিশিগাড়ি নামক স্থানে সরকারিভাবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়। জায়গাটি ক্রয় নিয়ে জমির মালিক ও সরকারিভাবে শুরু হয় দর কষাকরি। দুই পক্ষের মধ্যে রশি টানাটানিতে আজ পর্যন্ত তার কোনো সুরাহা না হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় ৩ বছরের অধিক সময় ধরে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনটি নির্মানে অনিশ্চায়তার মধ্যে রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি “দৈনিক ইনকিলাব”-কে জানান, সম্প্রতি ১৫৬টি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করবে সরকার একনেকের বৈঠকে প্রায় ১৩শ কোটি টাকার সংশোধন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। তারই আলোকে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় একটি ফায়ার স্টেশন স্থাপনের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ ছাড় দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সদরের জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে। অচিরেই জায়গার মালিকের সাথে আলোচনা করে দলিল সম্পাদন কাজ শেষ করেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এতে এ উপজেলাবাসীর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দীর্ঘদিনের দাবিটি পূরণ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ