পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে ‘সার্চ কমিটি’ নিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করছে বিএনপি। গতকাল শনিবার দুপুরে এক প্রতিনিধি সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট এখনো সার্চ কমিটি ঘোষণা করেননি। আমরা এই মুহূর্তে কোনো নেগেটিভ কিছু বলতে চাই না, প্রত্যাশাও করতে চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রের জন্য অতীতে যারা লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন প্রেসিডেন্ট তাদের মধ্যে একজন। দীর্ঘকাল তার সংগ্রামী জীবন রয়েছে, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি (প্রেসিডেন্ট) নিঃসন্দেহে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করবার জন্য বাংলাদেশের মানুষের চোখের ভাষা বুঝে এমন একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন, যে কমিটি অবশ্যই নিরপেক্ষ হবে, যোগ্য হবে এবং সঠিক নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সক্ষম হবে। আমরা এটাই প্রত্যাশা করি।
ইতিবাচক প্রত্যাশায় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা সামনের দিকে এগুতে চাই, অতীতের সমস্ত জঞ্জালগুলোকে ফেলে দিয়ে একটা সুন্দর স্বপ্নের দিকে এগুতে চাই, প্রভাতের দিকে এগুতে চাই। সেটাই বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারবে, সেটাই আমাদেরকে এই ফ্যাসিবাদ থেকে রক্ষা করতে পারবে, সেটাই আওয়ামী শাসন থেকে আমাদেরকে আলোর দিকে নিয়ে যাবে।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। সংবিধান অনুযায়ী নতুন কমিশন গঠন করতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ইতোমধ্যে ৩১টি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছেন। সংলাপে বেশিরভাগ দল সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে, তা না হওয়া পর্যন্ত সার্চ কমিটির পক্ষেই মত দিয়েছে অধিকাংশ দল।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই গত ১৮ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে এ সংলাপ শুরু হয়। সার্চ কমিটি গঠন ও ইসি নিয়োগের বিষয়ে ১৩ দফা প্রস্তাব দেয় দলটি।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন সম্মেলন কক্ষে জিয়া পরিষদের এই প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারাদেশ থেকে সংগঠনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে আজ সর্বত্র দলীয়করণ চলছে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত। ছোট-মাঝারী ব্যবসায়ীরা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা তার উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছে না। ব্যাংকগুলোকে লুট করে শেষ করে দেয়া হয়েছে, কোনো কিছু বাকী রাখে নাই এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যন্ত হাইজ্যাক করে নিয়ে গেছে তারা। বলা হচ্ছে উন্নয়ন হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। কোথায় উন্নয়ন, কার উন্নয়ন? প্রবৃদ্ধি কার বাড়ছে, কোথায় বাড়ছে? বড় লোক আরো বড় লোক হচ্ছে, গরীব আরো গরীব হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েকদিন পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদায় হবেন। আজকে পত্রিকায় তার স্টেটমেন্ট দেখলাম, বলেছেন পাঁচ বছর নির্বাচন কমিশন খুব সফল হয়েছে। সফলতার বিবরণ দেখেন- ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত- সফল। এরপরে উনি পাঁচ ভাগ ভোটকে ৪০ ভাগ করেছেন- সফল। এরপরে উপজেলা পরিষদের পাঁচ ধাপের নির্বাচনে দুই ধাপে দেখলো মোটামুটিভাবে ভালো নির্বাচন হচ্ছে, পরের তিনটি ধাপে দখল-সফল, পৌরসভা নির্বাচন দখল-সফল, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন দখল-সফল। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনেকে বলেন, অত্যন্ত সূক্ষ্ম নতুন কৌশলে সফল।
তিনি বলেন, আজকে আবার দেখলাম উনি (সিইসি) ঘোষণা করেছেন ইভিএম নয়, ডিজিটাল ভোটিং। বুঝেন- ডিজিটাল ভোটিংয়ে আমেরিকার মতো দেশে ভোট হাইজ্যাক করে চলে যায় রাশিয়া। এখন উনারা ডিজিটাল ভোট করবেন। অর্থাৎ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আওয়ামী লীগকে চিরদিন ক্ষমতায় রাখার জন্য উনারা যা যা করার করবেন।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ‘পায়ের উপর শক্ত করে’ দাঁড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান ফখরুল ইসলাম।
এদেশের মানুষ দেশকে রক্ষা করার জন্য বাইরের থেকে কাউকে ভাড়া করে আনবে না, আমাদেরকেই দাঁড়াতে হবে পায়ের উপর শক্ত করে মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। এখানে বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টি নয়, অন্যান্য দলের কথা বলছি না, দেশের মানুষের অধিকার আদায় করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমার গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্যে, আমার বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সকলকে এক হতে হবে। জিয়া পরিষদকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
প্রতিনিধি সভা করলেন, পতাকা তুললেন, পায়রা উড়ালেন, বেলুন উড়ালেন তারপরে দুই-একটা বক্তৃতা শুনে লাঞ্চ করে চলে গেলেন। তাহলে লাভ হবে না। এখান থেকে আপনারা ফিরে আমরা দেখতে চাই প্রতিটি জেলায় জেলায় সভা হচ্ছে, সেমিনার হচ্ছে।
জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রতীক, এজন্য ক্ষমতাসীনদের কাছে এতো জ্বালা যন্ত্রণা, ক্ষোভ। এজন্যই অনির্বাচিত অবৈধ সরকার ইতিহাস বিকৃত করছে, পাঠ্যপুস্তকসহ সব জায়গা থেকে জিয়াউর রহমানের নামকে মুছে ফেলতে চায়। আমরা বলতে চাই, যে মানুষের হৃদয়ে প্রথিত হয়ে আছে, তাকে কখনোই মুছে ফেলা যাবে না।
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, প্রফেসর সলিমুল্লাহ, প্রফেসর আব্দুুল কুদ্দুস, প্রফেসর মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ড. ইমতিয়াজ হোসেন, প্রফেসর ওবায়দুল ইসলাম, জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক মো. মমতাজ হোসেন, দেওয়ান মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, আব্দুল্লাহিল মাসুদ, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সেমিনার কক্ষের বাইরে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা-বেলুন উড়িয়ে প্রতিনিধি সম্মেলন-২০১৭ এর উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।