Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

তামাক ক্ষেতে সরবরাহ করায় ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধি

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে : রাঙ্গুনিয়া পদুয়ায় তামাক ক্ষেতে সরবরাহ করায় ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধিতে দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরোচাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বোরো চাষিদের কাছ থেকে ইউরিয়া সারের দাম বাড়তি নেয়ায় তারা হিমশিম খাচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে সরকারি সারের ডিলারের নয়-ছয়ের কারণে পশ্চিম খুরুশিয়া, সুখবিলাস ও নারিশ্চা ব্লকের প্রায় দুই হাজার হেক্টর বোরোচাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় সারের অভাবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান উৎপাদন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সমস্যা উত্তরণে কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। পদুয়া গ্রামের সন্তোষ দে, মোহাম্মদ হাসান, সিরাজুল ইসলাম জানান, পদুয়া ইউনিয়নে তিনটি ব্লকে প্রায় ২২শ’ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার কৃষক বোরোচাষ করছেন। সরকারিভাবে ইউরিয়া সার প্রতিকেজি ১৬ টাকা হলেও সার ডিলার দিলিপ বড়–য়া ১৭-২৫ টাকায় বিক্রি করছেন। স্থানীয় শতশত একর জমিতে তামাক ক্ষেতে বেশি দামে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করছে। তাই প্রকৃত বোরো চাষের কৃষকরা সারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন। খুরুশিয়া ব্লকের কৃষক বেলাল হেসেন, জীবন দে, স্বপন দে জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের না পেয়ে পরামর্শের অভাবে বিগত মৌসুমে অনেক কৃষকের আমনের ফসল নষ্ট এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ফলন হয়নি। পশ্চিম খুরুশিয়া ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নয়ন বড়–য়া বলেন, চলতি মৌসুমে খুরুশিয়া ব্লকে ৭৫০ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ৪০০ কৃষক চাষাবাদ করছেন। মৌসুমের শুরুতে সরকারি ১৬ টাকা মূল্যের ইউরিয়া সার বাড়তি দামে বিক্রয়ের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের একাধিক কৃষক অভিযোগ করেছেন। সারের দাম বেশি নেয়াতে আর্থিক সংকটের কারণে কৃষকরা বোরোচাষ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন। সুখবিলাস ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিঠুন দাশ বলেন, ৮০০ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ২৫০ জন কৃষক চাষ করছেন। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে সারের দাম বাড়তি নেয়ার বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসকে জানানো হয়েছে এবং অফিস থেকে ডিলার দিলিপ বড়–য়াকে শোকজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে উপজেলা কৃষি অফিস। অভিযুক্ত পদুয়া সার ডিলার দিলিপ বড়–য়া বলেন, গত বছরের ডিসেম্ভর মাসে ৩০ টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ পান। তারমধ্যে ২০ টন সার তোলা হলেও ১০ টন সার এখন সরকারি অফিস থেকে উত্তোলন করা হয়নি। পদুয়া সার ডিলারের অধীনে ৯টি খুচরা সার বিক্রয়ের দোকান রয়েছে। সরকারি মূল্য সার কেজি ১৬ টাকা। খুচরা দোকানে বাড়তি কিছু নিতে পারে। এটা দোষের কিছু নয়, লাভ ছাড়া ব্যবসা করবে কেন। তবে সরকারি ডিলার হিসেবে ইউরিয়া সার প্রতিকেজি ১৬ টাকা বিক্রি করছি। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে ১৬ টাকা থেকে বাড়তি দাম নেয়া হয় বলে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষকদের সাথে ডিলারের ইউরিয়া মোটা দানা-ছোট দানা সার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে জানতে পারি। স্থানীয় কৃষকরা ছোট দানা ইউরিয়া সার জমিতে ব্যবহার করতে আগ্রহী। কিন্তু দেখা যায় ছোট দানার চেয়ে বড় দানা সার আরো বেশি কার্যকরী। ছোট দানা সার দ্রুত গলে যায়, ফলে তা ধানক্ষেতে পুরোপুরি কার্যকর হয় না। বড় দানা সার ২/৩দিন পর্যন্ত গলতে থাকে, এতে অনেকটা জমিতে কার্যকরী বেশি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ