Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তার বালুচরে সবুজের সমারোহ

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা : ভরা তিস্তা নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। তিস্তার ধূ-ধূ বালুচর পরিণত হয়েছে সবুজের সমারোহ। তিস্তার বুকে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদ বদলে দিয়েছে প্রকৃতির রূপ। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তা নদী বর্তমানে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত নদী খনন এবং ড্রেজিং না করায় দিনের পর দিন পলি জমি ভরে উঠেছে খরস্রোতা অগভীর তিস্তা নদী। পরিণত হয়েছে ধূ-ধূ বালুচরে। নদী ভাঙনে বাপ-দাদার বসতভিটা ছেড়ে ভিন্ন জেলায় চলে যাওয়া পরিবারগুলো ফিরে এসে তিস্তার বালুচরে শুরু করেছে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদ। বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে-ফিরে দেখা গেছে সবুজের বৈচিত্র রূপ। বিশেষ করে আলু, মরিচ, বেগুন, গম, ভুট্টা, তিল, তিসি, কাউন, তামাক, পিয়াজ, রসুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, টমেটো, সিম, বাদাম, গাজর, মুলা, ইরিবোরো, নানাবিধ শাকসবজি চাষাবাদে ভরে উঠেছে ধূ-ধূ বালুচর। হরিপুর রিয়াজ মিয়ার চরের কৃষক ফয়জার রহমান জানান- আজ থেকে ৫ বছর আগে তিস্তার কড়াল গ্রাসে জমি-জিরাত হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করছিলাম। তিস্তার বালুচর জেগে ওঠায় আবার ফিরে এসে বাপ-দাদার জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছি। চলতি মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে আলু, ১ বিঘা জমিতে পিয়াজ ও ১ বিঘা জমিতে শাকসবজি চাষাবাদ করেছি। ইতোমধ্যে আলু বিক্রি শুরু করেছি। আমি আশা করছি ৪ বিঘা জমির ফসলের আয় দিয়ে আমার ১ বছরের সংসারের খরচ চলবে। তিনি  আরও বলেন- ওইসব ফসল উঠানোর পর ইরিবোরো চাষাবাদ করবো। বেলকা ইউনিয়নের কৃষক একরামুল হক লাল মিয়া বলেন- আমি ২ বিঘা জমিতে গম এবং ১ বিঘা জমিতে বেগুন চাষাবাদ করেছি। গত ২ মাসে আমি ২০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। তিনি বলেন-অন্যান্য ফসলের চেয়ে তালতরকারির আবাদে খরচ কম লাভ বেশি। তারাপুর ইউনিনের কৃষক মোশারফব হোসেন বলেন- স্ত্রী-পুত্র-পরিজন নিয়ে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদ করে আসছি। এতে করে দিন মজুর নিতে হচ্ছে না। যার কারণে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হচ্ছে। এদিকে তিস্তা নদী বালুচরে পরিণত হওয়ায় নৌ-শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। অনেকেই বাপ-দাদার পেশা মাঝি-মাল্লা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশা জড়িয়ে পড়েছে। হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম জানান- আমার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডেই চরাঞ্চল। বর্তমানে চরাঞ্চলে নানাবিধ ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। চরের কৃষকরা ফসল চাষাবাদ করে সংসার পরিচালনা করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান- তিস্তার চরাঞ্চলে এখন সকল প্রকার ফসলের চাষাবাদ হচ্ছে। পলি জমে উর্বর হয়ে ওঠা বালুচরে রাসায়নিক সার প্রয়োগ ছাড়ায় ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কাইম এলাকার চেয়ে চরাঞ্চলে এখন বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে গম, ভুট্টা, আলু, পিয়াজ, ডালসহ ইরিবোরো চাষাবাদ বেশি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ