Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অপরাধী যত বড়ই হোক, দায়মুক্তি পাবে না

দুই বছর পূর্তিতে প্রধান বিচারপতি

| প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, অপরাধী যত বড় হোক না কেন, সে দায়মুক্তি পাবে না। চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার প্রভাবশালী আসামি র‌্যাবের কতিপয় কর্মকর্তা রোমহর্ষক হত্যাকা- ঘটিয়েছেন, যা সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। সুপ্রিম কোর্টের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপের ফলে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হয়। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ওই মামলার বিচার নিষ্পত্তি করায় বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেছেন।
২০১৫ সালের এ দিনে ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি অবসরে যাবেন।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের কাজের প্রতীকী ধরন অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র অভিহিত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের শৃঙ্খলার বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পক্ষে স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিঘœ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংগত কারণে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা প্রণয়ন আবশ্যক বলে এর খসড়া প্রণীত হয়েছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট প্রকাশের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সামান্য বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও তা অচিরেই দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
অন্য বিভাগে হস্তক্ষেপ করে না : বিচার বিভাগের সীমার বাইরে গিয়ে অন্য বিভাগের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। তেমনিভাবে আমিও প্রত্যাশা করি রাষ্ট্রের অন্যান্য বিভাগ বিচার বিভাগের দায়িত্ব পালনে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করবে না।
বিচার বিভাগ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে : সীমিত সম্পদ ও বাজেট সত্ত্বেও সর্বোচ্চ বিচার সেবা প্রদানে বিচার বিভাগ সাধ্যমত দায়িত্ব পালন করে জনগণের বিশ্বাস অর্জন করেছে। গণতন্ত্র সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীন মতামত ও সিদ্ধান্ত প্রদান দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করেছে।
মামলা জট : মামলা বৃদ্ধির একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো প্রচলিত আইনের অস্বচ্ছতা। ত্রুটিপূর্ণ ও সেকেলের আইনের ফলে মামলার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। দেশের নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত মামলার ভারে জর্জরিত। বিগত দু’বছরে মামলা নিষ্পত্তি বৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক।
আইনের সংস্কার : আইনের নিরন্তর সংস্কার দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির জন্য অপরিহার্য। সে লক্ষ্যে শত বছরের অধিক পুরোনো দেওয়ানি ও ফৌজদারি কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন, সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, এনআই অ্যাক্ট একেবারেই সেকেলে। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেনান্সি আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এবং অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এ অনেক ত্রুটি রয়েছে। ওই আইনগুলোর দুর্বলতার কারণে মামলার সংখ্যা অযথা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্গতকারণে এসব আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার অপরিহার্য। প্রধান বিচারপতি তার বাণীতে আরো বলেন, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও গরীব-অসহায়, হত দরিদ্র বিচারপ্রার্থীসহ আপামর বিচারপ্রার্থী জনগণকে বিচার সেবা প্রদানে সব স্তরের বিচারকগণ আরো বেশি সংবেদনশীল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ক্রমশ বাড়বে। বিচার বিভাগ এশিয়ার একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধান বিচারপতি

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ