পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের বক্তব্যকে ‘দ্বি-চারিতা’ বলেছে বিএনপি। গতকাল রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটা উনারা মেনে নেবেনÑ ক্ষমতাসীন দলের এই কথার মধ্যে দ্বৈততা আছে, এক ধরনের দ্বি-চারিতা আছে বলে আমরা মনে করি। এ কথার মানে, আমরা আগের থেকে যেটা আশঙ্কা করেছি, প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যে একটা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা প্রয়োজন, যেটা আজকে জনগণের দাবি, সেই দাবির প্রতিধ্বনি তারা (ক্ষমতাসীন) করছেন না।
তারা একতরফা নির্বাচনের যে অভিপ্রায়, যেমন- ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি যেভাবে নির্বাচন করেছেন, ওই নির্বাচনই করবেন- ক্ষমতাসীন দলের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেই অভিপ্রায়টি ফুটে উঠে।
গত শনিবার সুনামগঞ্জে একটি সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্র্রেসিডেন্টের প্রতি আমাদের আস্থা, বিশ্বাস ও সম্মান আছে। তিনি যা যথার্থ ও সঠিক মনে করবেন, সংবিধান অনুযায়ী যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটি আমাদের বিরুদ্ধে গেলেও আওয়ামী লীগ তা মেনে নেবে।
নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সব আইন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা থাকবে। তখন সরকারের আদেশে পুলিশ নড়বে না।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
নতুন নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারা (ক্ষমতাসীন দল) যদি প্রেসিডেন্টকে সুপরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, যে কমিশনের অধিকর্তারা হবেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। শুধু আওয়ামী লীগের কাছে গ্রহণযোগ্য হলে সেটা একতরফা কমিশন হবে। ওইরকম কমিশনের অধীনে নির্বাচন ফাস্ট নির্বাচন হবে, জনগণের কাছে প্রতারণার নির্বাচন হবে, ওই কমিশনকে জনগণ প্রত্যাখান করবে। সরকারের যদি শুভ বুদ্ধির উদয় হয়, অভিপ্রায় যদি তাদের হয় গণতন্ত্রকে পথ চলার সুগম করা হয়। তাহলে তারা নিশ্চয়ই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায়, সে ব্যাপারে তারা প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেবেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আর যদি ক্ষমতাসীন দল প্রেসিডেন্টের কাছে কানে কানে বলে দেনÑ আপনি তো আমাদের দলের লোক, আমরা যেটা বলব, সেই ভাবে করবেনÑ তাহলে এদেশে কখনোই শান্তি, স্বস্তি আসবে না। উনারা ধরে মেরে পিটিয়ে, বন্দুক যুদ্ধের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে যে কবরের শান্তি বিরাজ করাতে চাচ্ছেন, ওই কবরের শান্তিও বিরাজমান থাকবে না।
গণতন্ত্রের পথ চলা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই সরকারকে বিরোধী দলের সাথে সংলাপ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ভালো কিছু করার জন্য, গণতন্ত্রের পথ চলা অব্যাহত রাখার জন্য, দেশে শান্তি-স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য নিশ্চয়ই সংলাপ অপরিহার্য। আপনারা এরশাদের সময়ে সংলাপ করেছেন না, আইয়ুব খানের গোলটেবিলে গিয়ে আপনারা সংলাপ করেছেন। তাহলে সংলাপ করতে এতো দ্বিধা কোথায়? যদি সদিচ্ছা থাকে, জোর করে ক্ষমতা আটকিয়ে রাখার অভিপ্রায় না থাকে, তাহলে সংলাপ করতে হবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বার্ষিক রিপোর্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিশীল অবস্থার সাথে একমত পোষণ করে রিজভী বলেন, এইচআরডব্লিউ’র রিপোর্টে বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে বলে বিএনপি মনে করে। তবে প্রকৃত অবস্থা আরো ভয়ঙ্কর। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক হারে গ্রেফতার, পুলিশি হেফাজতে গুলি করা, সরকারের চাপে গণমাধ্যম সেলফ সেন্সরশিপের পথ বেছে নিয়েছে। বিরোধী দলের ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে, তা দেশ-বিদেশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার তুলে ধরলেও বর্তমান স্বৈরশাসক তাদের জুলুম নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
শহীদ জিয়ার জন্মদিনের কর্মসূচি
১৯ জানুয়ারি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে দুইদিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী। ১৮ জানুয়ারি বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে আলোচনা সভা এবং ১৯ জানুয়ারি সকাল ১০টায় শহীদ জিয়ার মাজারে পুস্পমাল্য অর্পণ। দিবসটি উপলক্ষে দল ও অঙ্গসংগঠনগুলো পোস্টার প্রকাশ, রচনা প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা করবে আলাদাভাবে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাজী আসাদ, কবির মুরাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, মুনির হোসেন, আবদুল আউয়াল খান, সাইফুল ইসলাম পটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।