পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে ধুকছে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ। স্পর্শকাতর বিভাগ হওয়ার পরও সারাদেশে লোকবল সংকট রয়েছে। আবার কোনও কোনও মেডিকেল কলেজে এ বিভাগে ফাঁকা বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের পদ। এ কারণে বিভাগটি চলছে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় যারা এমবিবিএস পাস করছেন তাদের শেখার সুযোগ কম। ফলে দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এই বিভাগে লোকই পাওয়া যাবে না।
শরীয়তপুরের নড়িয়া হেলথ কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার দেওয়ান সাবরিনা মাসুক বলেন, মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ফরেনসিক মেডিসিনের প্রতি আমার অনেক ঝোঁক ছিল। এই বিভাগে কাজ করারও ইচ্ছা ছিল। সমস্যা হলো, জায়গাটা নিরাপদ নয়। এখানে যেহেতু অপমৃত্যু, ধর্ষণ, হত্যাসহ অনেক স্পর্শকাতর বিষয়গুলো ডিল করতে হয় তাই হুমকি-ধামকি আসে।
তিনি বলেন, একটা সময় ফরেনসিক মেডিসিনে ভালো শিক্ষক ছিল। কিন্তু এ বিভাগের প্রতি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমে যাওয়ায় শিক্ষক তৈরি হচ্ছে না। আবার বিদেশে এ বিষয়ে লেখাপড়া করে কেবল মেডিকেল কলেজগুলোতেই নয় পুলিশ কিংবা আর্মি ফোর্সে কাজ করা যায়। তবে সে সুযোগও আমাদের দেশে খুবই কম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় ফরেনসিক বিভাগে শিক্ষকের আসন রয়েছে ১৩০টি। এর বিপরীতে শিক্ষক আছেন ৩০ জন। রাজশাহী, কক্সবাজার ও নোয়াখালী মেডিকেল কলেজেও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কিংবা ডিগ্রিধারী কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে একসময় এমবিবিএস, স্নাতকোত্তর ও ডিপ্লোমা কোর্সের প্রশ্নপত্র, ক্লাস, পরীক্ষা এবং খাতা দেখাসহ সার্বিক বিষয়ে দক্ষ মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আ ম সেলিম রেজা বলেন, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে জনবল একেবারেই অপ্রতুল। দেশের ১৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত হয়। কিন্তু এসব মেডিকেল কলেজে ভয়াবহ শিক্ষক সংকট রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে এক তৃতীয়াংশ শিক্ষক রয়েছে যেটা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। তিনি বলেন, খুবই র্স্পশকাতর এই বিভাগে যারা কাজ করেন তাদের কোনোরকম ইনটেনসিভ না থাকাই শিক্ষক সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ। এ ধরনের মেডিকোলিগ্যাল রিপোর্ট দিলে সেটা কারও পক্ষে আবার কারও বিপক্ষে যাবে। আবার নানা মামলাতে এ বিভাগের চিকিৎসকদের সাক্ষী দিতে যেতে হয়। সেখানেও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এটাও জনবল স্বল্পতার কারণ। কেউ বাধ্য না হলে এ বিভাগে আসতে চায় না।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, এ বিভাগে কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হই আমরা। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কারো বিপক্ষে গেলে সেটা আমার জন্য হুমকি হতে পারে। তারপরও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া ফরেনসিক মেডিসিনে কাজ করায় আমাদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার সুযোগ নেই। তাই আর্থিকভাবেও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। যেটা অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, মানুষের একটা ধারণা হয়েছে যে, যারা ময়নাতদন্ত করে তারা মরা মানুষের ডাক্তার। তাদের কাছে অন্য কোনও রোগের চিকিৎসার জন্য যাওয়া যাবে না। যার কারণে আর্থিকভাবেও স্বচ্ছলতা আসে না।
ডা. সোহেল বলেন, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রতি চিকিৎসকদের আগ্রহী করতে সরকারের উচিত আমাদের জন্য সম্মানীর ব্যবস্থা রাখা। তাহলে কেউ না কেউ অনুপ্রাণিত হবে। একইসঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা। এ বিষয়গুলোতে সরকার একটু দৃষ্টি দিলে তাহলে হয়তো কিছুটা জনবল সংকট কাটবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।