Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আট বছর পর আবার গ্যাস রফতানির সুযোগ

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : বিদেশি কোম্পানিগুলো পুনরায় বিদেশে গ্যাস রফতানির সুযোগ পাচ্ছে। পেট্রোবাংলার সাথে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি সান্তোষের এমন চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যে দিয়ে বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য এমন সুযোগ পুনরায় উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে।
২০০৮ সালের উৎপাদন অংশীদারী চুক্তিতে (পিএসসি) বিদেশি কোম্পানির জন্য গ্যাস রফতানির সুযোগ ছিল। পরবর্তীতে বিদেশে গ্যাস রফতানির ব্যাপারে বিভিন্ন মহল থেকে আপত্তি আসে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এমন আলোচনা আসে যেÑ পাইপলাইন নয়, তরল বোতলজাত করে গ্যাস রফতানির সুযোগ রাখা যেতে পারে।  কিন্তু ২০১২ সালে যখন নতুন করে সমুদ্রের ব্লক ইজারা দেয়া হয়, তখন রফতানির সুযোগ একবারেই তুলে দেয়া হয়। পিএসসিতে বলা হয়Ñ বাংলাদেশের গ্যাস কোনোভাবেই বিদেশে রফতানি করা যাবে না। সমুদ্রে গ্যাস পেলে তা অবশ্যই দেশের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।
পিএসতিতে বলা হয়, যদি কোনো বিদেশি কোম্পানি অনুসন্ধান চালিয়ে সমুদ্রে গ্যাস পায়; তবে ওই গ্যাস অবশ্যই দেশের মধ্যে বিক্রি করতে হবে। যদি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা গ্যাস নিতে না পারে, সে ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে হবে। গ্যাস রফতানির ওপর উচ্চ আদালতেরও নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবার আট বছর পর ২০০৮ সালের অনুকরণে নতুন করে আবার গ্যাস রফতানির সুযোগ রাখা হচ্ছে।
এই সুযোগ প্রথম পেতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি সান্তোষ। এর ফলে নতুন করে সমুদ্রে যেসব বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তি হবে তারাও গ্যাস রফতানির সুযোগ পাবে।
এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস রফতানির প্রয়োজন না হলেও সুযোগ থাকাতে বিদেশি
কোম্পানি পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রির দাবি করতে পারে। তাছাড়া বেশি গ্যাস পেলে তখন রফতানির প্রশ্ন উঠবে। আর সান্তোষকে যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তা এখন অন্য কোম্পানিগুলোকেও দিতে হবে। ফলে সমুদ্রে যখন বেশি বেশি গ্যাস পাওয়া যাবে, তখন দ্রুত মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলো গ্যাস রফতানি করতে চাইবে।
উল্লেখ্য, পেট্রোবাংলাকে গ্যাস রফতানির সুযোগ দিয়ে সান্তোষের সাথে চুক্তি করার নীতিগত অনুমতি দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ নিয়ে গত বুধবার সচিবালয়ে এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকও হয়েছে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, দ্রুত সময়ে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে সান্তোষের সাথে এই চুক্তি করা হবে।
বঙ্গোপসাগরের ১৬ নম্বর ব্লক অর্থাৎ মগনামায় যৌথভাবে খনিজ অনুসন্ধান করবে অস্ট্রেলিয়ার বহুজাতিক কোম্পানি সান্তোষ ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স। মগনামায় গ্যাস পেলে তা রফতানি করতে পারবে সান্তোষ । উত্তোলিত তেল-গ্যাস প্রথমে পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রির প্রস্তাব দেবে। পেট্রোবাংলা কিনতে না চাইলে দেশের মধ্যেই তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করতে পারবে। আর তৃতীয় পক্ষ না নিলে রফতানি করতে পারে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গ্যাস রফতানির সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ জ্বালানি ঘাটতির দেশ। বিদেশি কোম্পানির কখনোই গ্যাস রফতানির প্রয়োজন হবে না। পেট্রোবাংলাই সব গ্যাস নিয়ে নেবে। আনুষ্ঠানিকতার জন্য এই সুযোগ রাখা হয়েছে।
গ্যাস রফতানির সুযোগ দিয়ে চুক্তির জন্য পেট্রোবাংলার প্রস্তাব জ্বালানি বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা শেষে জ্বালানি বিভাগ  অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠায়। কমিটি বুধবার এ প্রস্তাবে অনুমতি দিয়েছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, জ্বালানি বিভাগ থেকে অনুমোদনের কাগজ পেলেই চুক্তির উদ্যোগ নেয়া হবে।
এর আগে মগনামায় অনুসন্ধান কূপ-২ খনন করতে সান্তোষের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে যৌথভাবে কূপ খননের প্রস্তাব দেয়া হয়। সে অনুযায়ি ৪৯ ভাগের অংশীদার হয়েছে বাপেক্স। এতে বাপেক্স দুই হাজার ৩০৮ মিলিয়ন ডলার বা ২৩০ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস

২৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ