Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সখিপুরে কিন্ডার গার্টেন স্কুলের হালচাল বই পাঠ্য করাতে লাখ লাখ টাকা ডোনেশন

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সখিপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা :সখিপুর পৌরসভায় ৮০টি এবং উপজেলায় ৯০টি মোট ১৭০টি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে নামে-বেনামে বিভিন্ন প্রকাশনীর বই পাঠ্য করার জন্য স্কুল অনুপাতে লাখ লাখ টাকা ডোনেশন দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সখিপুরের মতো সারাদেশেই একইভাবে কেজি স্কুলের বই পাঠ্য করা হয় বলে বই পাঠ্য করার সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজন জানায়। ডোনেশনের কারণে কোমলমতি শিশুদের অভিভাবকদের চৌগুন বেশি মূল্যে কেজি স্কুলের পাঠ্যবই কিনতে হচ্ছে। পৌরসভার এবং উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেন (কেজি) স্কুলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ স্কুলে খেলার মাঠসহ অন্যান্য অবকাঠামো নেই। অথচ অভিভাবকগণ এসব স্কুলে তাদের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশুনার মান খারাপ হওয়ার কারণে চটকদারি বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে শিশুদের স্বাভাবিক, মানসিক বিকাশের অবকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে অভিভাবকগণ তাদের শিশুদের কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করে দিচ্ছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং কোনো কোনো কিন্ডার গার্টেনে ফার্নিচার, ক্লাস রুম তৈরি, নগদ টাকা দিয়ে মাস্টার লাইব্রেরি, রহমানিয়া লাইব্রেরি, মওলানা বুক ডিপো, কিন্টার গার্টেন স্কুল ভাগভাটোয়ারা করে নিয়ে হৃদয় প্রকাশনী, চৌধুরী পাবলিকেশন্স, গ্রন্থ প্রকাশনী, ছায়া প্রকাশনী, দূরন্ত পাবলিকেশন্স, মেধাসিঁড়ি প্রকাশন, রোজি প্রকাশনীসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর নামে বই বের করে পাঠ্য করেছে ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জুপিটার গাইডসহ নিষিদ্ধ নোট/গাইড বই পাঠ্য করেছে বলে বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে। এতে তাদের প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা যায়। পাঠ্য করা বইয়ে আকাশচুম্বী মূল্য দিয়ে কোন কিন্ডার গার্টেন স্কুলের কোন কোন ক্লাসে কি কি প্রকাশনীর বই, নোট-গাইড বই পাঠ্য করা হয়েছে বইয়ের নাম-দাম লিখে বুকলিস্ট তৈরি করে ও প্রাপ্তিস্থান লাইব্রেরির নাম ছাপিয়ে সংশ্লিষ্ট কিন্ডার গার্টেন স্কুলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা বুকলিস্ট তাদের অভিভাবকদের হাতিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছে। মাস্টার লাইব্রেরির পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ডোনেশন দিয়ে বই পাঠ্য করা হয়েছে। ডোনেশনের টাকা তোলার জন্যই বইয়ের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্ডার গার্টেন স্কুল একাংশের সভাপতি শাহীন-আল-মামুন বলেন, ডোনেশন দিয়ে কেজি স্কুলের বই পাঠ্য করা গুরুতর অপরাধ। আমি এর ঘোরবিরোধী। কিন্ডার গার্টেন স্কুল অপর অংশের সভাপতি অধ্যক্ষ রেনুবর রহমান বলেন, বই পাঠ্য করার জন্য সংশ্লিষ্ট লোকজন প্রতিভা স্কুলের বাদলকে হোন্ডা দিয়েছিল বলে শুনেছি। আমি কোনো ডোনেশন নেইনি। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সখিপুর শাখার সভাপতি সখিপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ ও বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে শাহীন স্কুলসহ কিছু কিছু কেজি স্কুল তাদের প্রচার-প্রচারণা চালায়। এরা বই পাঠ্য থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই শিক্ষাকে ব্যবসা বানিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ