রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটারগুলো থাকে প্রধান শিক্ষক ও কোথাও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের বাড়িতে। এতে সরকারের কাক্সিক্ষত ডিজিটাল সেবা বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরিদ্র ও হতদরিদ্র কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সরেজমিন জানা যায়, উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮২টি। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এবতেদায়ী মাদরাসা মিলিয়ে এর সংখ্যা আরো ৪০টি। এসব বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটিতেই উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) টিআরের অর্থে একটি করে কম্পিউটার ও প্রিন্টার অনুদান হিসেবে প্রদান করেন। সে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সুবিধায় এ কম্পিউটারগুলো প্রদান করলেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে কাজে আসছে না এ মহতী উদ্যেগ। সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ও শিক্ষকদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ না থাকায় সরকারের দেয়া কম্পিউটারগুলো প্রধান শিক্ষকের বাসায় কোথাও ম্যানেজিং কমিটির বাসায় রাখা হয়েছে। এসব কম্পিউটার ব্যবহার করছে প্রধান শিক্ষকের ব্যক্তিগত কাজে ও তাদের সন্তানদের বিনোদনের কাজে। কোথাও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেও দেখা গেছে। এমন চিত্রই পাওয়া গেছে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট সংখ্যার ৭০ ভাগ প্রতিষ্ঠানেই দেখা গেছে এমন চিত্র। কথা হয় রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৮৪নং মুশুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র চন্দ্র সরকারের সাথে। তার অফিস কক্ষে কম্পিউটার না থাকা বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সরকার কম্পিউটার প্রদান করেছে ঠিক কিন্তু আমাদের তো প্রশিক্ষণ দেয় না। তাই বাড়িতে রেখে নিজেই কাজ করি। এ সময় তিনি আরো বলেন, অত্র বিদ্যালয়ে দপ্তরি ও নৈশপ্রহরী নেই। তাই অফিস কক্ষে রাখলে চুরি যাওয়ার ভয় থাকে। বিধায় বাসায় রাখা হয়েছে। একই বিষয়ে কথা হয় মধুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকেরই এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন নেই। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে রাখলে চুরি যাওয়ার ভয় থেকেই অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বাসায় রাখা হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, এসব কম্পিউটার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ হলেও প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের বাড়ির লোকজন ও তাদের সন্তানেরা এ সুবিধা ভোগ করছেন। এতে বঞ্চিত হচ্ছে হতদরিদ্র ও সাধারণ গরিব ঘরের শিক্ষার্থীরা। উপজেলার পিতলগঞ্জ দাখিল মাদরাসার এবতেদায়ী শাখায় দেখা গেছে একই চিত্র। এখানেও দাখিল শাখায় প্রশিক্ষিত কম্পিউটার শিক্ষক থাকলেও এবতেদায়ীর জন্য বরাদ্দকৃত কম্পিউটারটি ব্যবহার হচ্ছে দাখিল শাখার কাজে। এতে অত্র মাদরাসার এবতেদায়ী শাখার সাধারণ শিক্ষার্থীরাও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়নে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ভেস্তে যাচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতায়। প্রশাসনের প্রয়োজনীয় নজরদারি না থাকাকে দায়ী করছেন বিজ্ঞমহল। তারা মনে করছেন, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও চুরির অজুহাত কোনো বিষয় নয়। বরং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ বাবদ আলাদা সম্মানি ভাতা না পাওয়ায় এমনটা করছেন। তবে এ বিষয়ে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক মন্তব্য করতে রাজি হননি। এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটারগুলো কারো ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা অন্যায়। তদন্ত করে কম্পিউটারগুলো স্ব স্ব অফিসে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।