Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়ক খানাখন্দে যান চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ

| প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আতিয়ার রহমান, নড়াইল থেকে : স্থানে স্থানে পিচ-খোয়া উঠে গেছে। ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ। সামান্য বৃষ্টিতেই জমছে পানি। এর ওপর দিয়ে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে গাড়ি। এ অবস্থা নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের। এ সড়কে নিত্যদিন যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, লোহাগড়া থেকে লাহুড়িয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এ সড়কের দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য অটোরিকশা, বাস,  ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এটি লোহাগড়া উপজেলার উত্তর এলাকায় যাতায়াতের প্রধান সড়ক। সড়কটি দিয়ে এ এলাকার লাহুড়িয়া, শালনগর, নোয়াগ্রাম, কাশিপুর ও জয়পুর ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষ নিত্যদিন উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া এই সড়কটি ব্যবহার করে লোহাগড়া ও ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার এবং মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দারা অল্প সময়ে যাতায়াত করেন। লোহাগড়া উপজেলার শেষ প্রান্ত লাহুড়িয়া বাজার। এ বাজার থেকে মাগুরায় সরাসরি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। লাহুড়িয়া বাজার থেকে এ সড়ক দিয়ে লোহাগড়া হয়ে ঢাকায় যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। লাহুড়িয়া, মাকড়াইল, বাতাসি, মন্ডলবাগ, শিয়রবর ও মানিকগঞ্জ এই এলাকার বড় বাজার। এসব বাজারে পণ্য পরিবহনে প্রতিনিয়নত মালবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এই ২০ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। দুর্ভোগের শুরু লোহাগড়া বাজারের পরেই জয়পুর থেকে। জয়পুর মোড়ে সড়কটি উভয় পাশে পিচ ও খোয়া উঠে দেবে গেছে। এরপর নারানদিয়া-কেষ্টপুরের মধ্যে বেহাল অবস্থা। মানিকগঞ্জ ও বাতাসি বাজার এলাকায় অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে এ অংশ একাকার হয়ে যায়। মাকড়াইল ও তেতুলবাড়িয়া এলাকায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত।  ঝিনাইদহে চাকরি করেন লোহাগড়া সদরের রঘুনাথ কর। তিনি বলেন, এ সড়ক দিয়ে ঝিনাইদহে খুব সংক্ষিপ্ত রাস্তা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। সড়কটির বেহাল দশার কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অটোরিকশা চালক কামরুল শেখ বলেন, ছোট যানবাহন প্রায়ই উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্তঃসত্ত্বা ও অসুস্থ মানুষের দুর্ভোগ দেখে কান্না আসে। কাভার্ড ভ্যান চালক আমীর হোসেন বলেন, এ এলাকার বাজারগুলোতে পণ্য দিতে আসি। সড়কের অধিকাংশ জায়গায় ছোট-বড় গর্ত। গাড়ি চলে হেলেদুলে। খানাখন্দে চাকা পড়লে গাড়ি তোলা দুষ্কর হয়ে যায়। আবার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। নাকাল অবস্থা। স্থানীয় লোকজন জানান, মানিকগঞ্জ ও বাতাসি বাজার এলাকায় প্রায় ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি। তাই গর্ত ক্রমন্বয়ে বড় হয়েছে। মরিচপাশা ও রঘুনাথপুর অংশে দু-এক বছর অন্তর সংস্কার হয়। তা ছয় মাসও টেকে না। অন্য অংশগুলো গত চার-পাঁচ বছর আগে সংস্কার হয়েছে। শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম জানান, শালনগর ইউনিয়ন অংশে তার ব্যক্তিগত অর্থে বড় গর্তগুলো খোয়া দিয়ে ভরাট করেছেন। এতে ওই অংশে দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. ওসমান গনি বলেন, মানিকগঞ্জ বাজার এলাকায় ৫০০ মিটার এলাকা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। সড়কের অন্য অংশগুলো সংস্কারে আগামি অর্থ বছরে বরাদ্দ চাওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ