Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতের পিঠা বিক্রি করে চলে সংসার

| প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সোহেল রানা খান, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) থেকে : সাটুরিয়ার সওদাগর পাড়ার সুফিয়া বেগম (৪৫), স্বামী মারা গেছে প্রায় এক যুগ আগে। স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র মেয়ে নিয়ে অভাব-অনটনে সংসার চালানো হয়ে পড়ে দায়। অবশেষে শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। প্রায় ১১ বছর ধরে শীতের পিঠা বিক্রি করে চলছে তার সংসার। শুধু সুফিয়া বেগম নয়, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তার মতো শতাধিক নারীর সংসার চলছে শীতের পিঠা বিক্রি করে। শীতকালে শীতের কুয়াশা ভেজা সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা আর পুলির আয়োজন বহুকাল আগে থেকেই করা হয় ঐতিহ্যগতভাবেই। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছে থাকলেও এখন অনেকেই ঘরে ঘরে শীতের পিঠা বানিয়ে খেতে পারে না। বাড়িতে পিঠা বানানোর ঝামেলা এড়াতে অনেকেই পিঠার দোকান থেকে পিঠা ক্রয় করে স্বাদ মিটাচ্ছে। তাই সাটুরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে জমে ওঠে বাহারি শীতের পিঠার দোকান। সন্ধ্যার পর থেকে এক প্রকার সিরিয়াল দিয়ে কিনতে হয় পিঠা। রাস্তার দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে অনেককেই দেখা যায় পিঠা খেতে। আর শীতের পিঠা খাওয়ার তৃপ্তি মেটাতে গিয়ে সাটুরিয়ার শতাধিক নারীর উপার্জন হচ্ছে এখান থেকেই। যা দিয়ে চলছে তাদের সংসার, যা তাদের জীবনযাপনে সাহায্য করছে। শুধু যে সাধারণ মানুষই এই পিঠা খেয়ে থাকেন তা নয়। সাটুরিয়ায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তার ধারের পিঠার দোকানের ওপর নিভর্রশীল হয়ে উঠছে দিন দিন। সাটুরিয়ায় ভাপা (বড়) পিঠা, পাটিশাপটা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতই (চিতি) পিঠা বিক্রি হয়। চিতই পিঠার সঙ্গে সরিষার ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, মরিচের ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তা দেওয়া হয়। ডিম দিয়েও বানানো হয় চিতই পিঠা। ভাপা পিঠা ৫-১০ টাকা, ডিমচিতই ১৫ টাকা, তেলের পিঠা ৫ টাকা, পাটিশাপটা ১০ টাকায় বিক্রি হয়। ১১ বছর ধরে সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার পিঠা বিক্রি করা সুফিয়া বেগম জানান, খেজুর গুড় ও চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি ভাপা আর চালের গুঁড়া পানি দিয়ে বানানো হয় চিতই পিঠা। শীতের পিঠা হলেও বছরের প্রায় সব সময়ই তিনি পিঠা বিক্রি করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পিঠা বিক্রি করেই চলছে তার সংসার। পিঠা বিক্রির টাকা দিয়ে তার মেয়েকে সে স্কুলে পড়াচ্ছে। ২৫ বছর ধরে শীতের পিঠা বিক্রি করা তাজেলা বেগম (৫০) জানান, শীত বেশি পড়লে পিঠা বিক্রি বাড়বে। প্রতিদিন গড়ে ৩ শতাধিক পিঠা বিক্রি করেন তিনি। চালের গুঁড়া, গুড়, লাকড়ি ও অন্যান্য খরচ বাদে ৫০০-৬০০ টাকা লাভ হয় দিনে। কাওন্নারা এলাকায় পিঠা বিক্রি করা আমেনা বেগম (৪০) জানান, মূলত সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হলেও তুলনামূলক সন্ধ্যায় দোকানে পিঠার চাহিদা বেশি থাকে। সন্ধ্যার সময় পিঠা কিনতে দোকানে সিরিয়াল দেন ক্রেতারা। তা ছাড়াও অনেকে বেশি পিঠা প্রয়োজন হলে ২/১ দিন আগে অগ্রিম টাকা দিয়ে অর্ডার দিয়ে যান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ