বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের ফেয়ার মাল্টিপারপাস কোম্পানি নামের একটি সংস্থার প্রতারক কর্মকর্তারা সদস্যদের গচ্ছিত টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ সদস্যরা ওই সংস্থার কর্মকর্তাসহ তাদের স্বজনদের চারটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিগ্রীদোরতা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উক্ত উপজেলার চরাঞ্চলের নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিগ্রীদোরতা গ্রামের ফরিদুল ইসলাম ওরফে মিলন এবং ফারুক আহমেদ ওরফে পলাশ গত চার বছর আগে ওই গ্রামে ফেয়ার মাল্টিপারপাস নামের একটি কোম্পানির কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে তারা ‘গ্রামীণ ছায়া’ আবাসন প্রকল্প নাম দিয়ে সহজ কিস্তিতে জমি বরাদ্দ ও অতিরিক্ত মুনাফা দেয়ার কথা বলে চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষেদের সদস্য করে। পর্যায়ক্রমে সদস্যদের নিকট থেকে ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে ওই প্রতারক চক্র। ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট কাজীপুর চরাঞ্চলে একতা মাল্টিপারপাস নামের অপর একটি কোম্পানির কর্মকর্তাদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ হলে দুই কর্মকর্তা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ফেয়ার মাল্টিপারপাস কোম্পানির গ্রাহকরাও তাদের জমানো টাকা ফেরত চায়। বিষয়টি নিয়ে ফেয়ারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ১ জানুয়ারি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে শত শত গ্রাহক সালিশ বৈঠক করেন। সালিশে মঙ্গলবার ওই টাকা ফেরত দেয়ার জন্য দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু কর্মকর্তারা টাকা ফেরত না দিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। টাকা না পেয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ওই দিন রাতেই সংস্থার চেয়ারম্যান প্রতারক ফরিদুল ইসলাম এবং তার চাচা আতাউর রহমান এবং অপর কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানের বাড়ি-ঘরসহ চারটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। সদস্যদের মধ্যে আলতাফ হোসেন, মিরাজ উদ্দীনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, ওই কর্মকর্তারা নামসর্বস্ব কোম্পানি খুলে জমি দেয়ার কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গ্রাহকদের জমি দেয়ার কথা বলা হলেও এখনো কোন জমি দেয়া হয়নি। কিন্তু ওই প্রতারক চক্রটি টাকা না দিয়ে পালিয়ে গেছে। নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ১ জানুয়ারি গ্রাহকরা সংস্থার কর্মকর্তাদের আটক করে। বিষয়টি নিয়ে ওই দিনই সালিশ করে ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা সদস্যদের ফেরত দেয়ার জন্য দিন ধার্য করা হয়। মঙ্গলবার ওই টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে আটক দুই কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেয়া হলে তারা পালিয়ে যায়। বিষয়টি সদস্যদের মধ্যে জানজানি হলে এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে সংস্থার দুই কর্মকর্তা পলাতক এবং তাদের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কাজীপুর থানার ওসি সমিত কুন্ডু জানান, ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে আগে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। একতা মাল্টিপারপাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করলে ফেয়ার মাল্টিপারপাস কোম্পানির অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টিও আলোচনায় চলে আসে। যে কারণে বিক্ষুব্ধ সদস্যরা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।