Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ধরিয়ে দিতে গিয়ে নিজেরাই হচ্ছে মাদক বিক্রেতা

| প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সোর্সরাই জড়িয়ে পড়ছেন মাদক বিক্রির সাথে। মাদক বিক্রেতাদের ধরিয়ে দিতে গিয়ে তাদের সাথে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে নিজেই হয়ে ওঠছেন মাদক বিক্রেতা। এতে সহযোগিতা করছে থানার কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেশির ভাগই এলাকায় মাদকের সয়লাব থাকলেও থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নামেমাত্র মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার দেখানো ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হচ্ছে। তাতে বেশির ভাগ মাদক বিক্রেতারা তথ্যের অভাবে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এতে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না বলে ধারণা করছেন প্রশাসন। এদিকে স্থানীয় সোর্সরাই জড়িয়ে পড়ছেন মাদক বিক্রির সাথে। এমনই চিত্র পাওয়া গেছে উপজেলার বাড়িয়া ছনি, গুতিয়াব, পিতলগঞ্জ, মধুখালী, বাগবের ও টিনর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছনি এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গির ও তার ভাই আশিকুর রহমান আশি, একই এলাকার মমিন মিয়া, হামিদ মিয়ার ছেলে রাজু, টিনর এলাকার মজির উদ্দিন ও মাইনদ্দিন, বাগবের এলাকার শফিকুর রহমান শফি, রুহুল আমীন, গুতিয়াব আগার পাড়ার তারাজুদ্দিনের ছেলে বাচ্ছু মিয়া, জুয়ারী আলমাছ, মাদক স¤্রাট আওলাদ, ভক্তবাড়ি এলাকার নিজামুদ্দিন, হিরন, ফিরুজ মিয়া, দুলাল মিয়া, খেসাইর এলাকার লিখন, ব্রাহ্মণখালীর শরীফ, পিংলাইনের আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কিছু সোর্সরাই এখন চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত। তাদের কাছে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়, ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ আমদানি নিষিদ্ধ বিয়ার ও মদ। তাদের অধীনে রয়েছে একাধিক চোলাই মদের কারখানাও। সূত্র জানায়, তারা শুরু থেকেই মাদক বিক্রির সাথে জড়িয়ে একাধিকবার পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হয়। সেখান থেকেই পুলিশের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে হয়ে ওঠে পুলিশের সোর্স। তবে আইনের ফাঁক পেরিয়ে এসেই শুরু করে তাদের পুরোনো পেশা। তবে সাথে যোগ করেন পুলিশের সোর্স হিসেবে বাড়তি ক্ষমতা। আর এই ক্ষমতাবলে নিরীহদের মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে, জমি বিক্রেতার টাকা খোয়ানোর কৌশলে ও স্থানীয় মাদকসেবীকেও মাদক বিক্রেতা সাজিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়াসহ নানা অপকর্ম চালায়। তাদের রয়েছে একাধিক জুয়ার মাঠও।  অন্যদিকে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা, হপ্তা ইত্যাদি আদায় করে নিজের ভাগেরটা রেখে অসাধু পুলিশ সদস্যকে তা প্রদান করে। এতে নির্বিঘেœ পরিচালিত হয় মাদক ব্যবসা। স্থানীয় বিজ্ঞমহল মনে করছে, সোর্সদের দেয়া ভুল তথ্যের কারণেই পুলিশ আশানুরূপ সফলতা পাচ্ছে না। মাদক ব্যবসায়ীদের সোর্স হিসেবে ব্যবহার করলে স্থানীয়ভাবে মাদকের প্রসার আরো বেড়ে যাবে। সূত্র আরো জানায়, মাদক ব্যবসায়ী সোর্সদের বিক্রি করা মাদক কেউ সেবন না করলেই পুলিশের হাতে আটক করিয়ে তাকেই মাদক বিক্রেতা সাজায় সোর্সরা। এতে মূল অপকর্মের হোতা সোর্স হলেও তাদের দৌরাত্ম্য প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া পুলিশকে না জানিয়ে তাদের নিয়মিক হপ্তা ও মাসোহারা নামের চাঁদা আদায় হচ্ছে নিয়মিত। সরকারি ক্যানেল দখলকরা বাড়িঘর ও দোকানপাট, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে নিয়মিত। এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ শুনেছি। রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সকল সদস্যদের সোর্সদের দেয়া তথ্যের যাচাই-বাচাই ও তারা মাদক বিক্রিতে জড়িয়ে পড়লে তাদেরও আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব কাজে পুলিশ জড়িয়ে থাকলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা  নেয়া হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ