Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার সারাদেশে তান্ডব চালিয়েছে রিজভীর অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গারা দেশে দলের ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিকে বানচালে সরকার ‘হামলা ও তান্ডব’ চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সকাল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলা চালায়, তা-ব চালায় এবং ব্যাপক বাধা প্রদান করে। গত (শনিবার) থেকেই পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয় এবং বেশ কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী গ্রেফতার করে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের হামলা ও নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। দলের গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিও জানান রিজভী।
দশম সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি দিনে ৫ জানুয়ারি দলের ঘোষিত কর্মসূচি সারাদেশে কালো পতাকা মিছিলে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর হামলা এবং গতকাল ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে গত রোববার ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা সদর-মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই কর্মসূচির বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
রিজভী জানান, রাজধানীর শাহ আলী থানার মিছিলে সাজ্জাদুল হাসান, মো. সুমন, ক্ষিতিস চন্দ্র দাশসহ ৫ জন এবং পটুয়াখালী মিছিলে জেলার সহ-সভাপতি বায়েজীদ পান্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম সারোয়ার প্রমুখ গ্রেফতার হয়েছে। কামরাঙ্গীরচর থানার মিছিলে ছাত্র লীগ-যুব লীগের ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে ৭ জন নেতা-কর্মীকে আহত করেছে।
রিজভী বলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচির কথা শুনলেই ক্ষমতাসীনদের মসনদ কেঁপে উঠে। জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে তারা জনগণকে এতোই ভয় পায়, সেজন্য তারা আতঙ্কে থাকে। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। লক্ষ লক্ষ পায়ের আওয়াজে কেঁপে উঠছে স্বৈরাচারের মাটি। দুরন্ত দুর্নিবার আন্দোলনের শক্তি টের পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ভয়ে আবোল-তাবোল বকছে। সেজন্য সরকারবিরোধী দলের কর্মসূচিতে পুলিশ লেলিয়ে দিচ্ছে। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, এভাবে তারা নিস্তার পাবে না। জনগণের কাছে একদিন তাদের জবাবদিহি করতেই হবে।
সারাদেশে দলের কর্মসূচি পালিত হলেও ঢাকা মহানগরে পালিত হচ্ছে না, এটা কী তাদের ব্যর্থতা প্রশ্ন করা হলে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মহানগর যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। ঢাকা মহানগরী আহ্বায়ক কমিটি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলেই তো তাদের মিছিলে পুলিশ হামলা করছে, গুলি করছে। এখানে কোনো ব্যত্যয় হচ্ছে না। যেখানে আওয়াজ শুনলেই গুলি নিক্ষিপ্ত করছে, গ্রেফতার করছেÑ এটা তো ভয়ংকর স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের লৌহশৃঙ্খল। এই শৃঙ্খলের মধ্যে বুক চিতিয়ে যতটুকু লড়াই করার, ততটুকু লড়াই করছি বিনা অস্ত্রে নিরস্ত্র অবস্থায়।
আপনি যদি জার্মানি ও নাৎসীবাদের ইতিহাস দেখুন, ইটালির ইতিহাস দেখুন। যেখানে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রেজিস্টেন্স মুভমেন্ট হয়েছে সশস্ত্র অবস্থায়। ইতালিতে হয়েছে সশস্ত্র অবস্থায়। তা আমরা তো শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রামে ফ্যাসিবাদী যে আচরণ তা-ই করছে। তারা তাদের গেস্টাপো বাহিনী বানিয়েছে পুলিশ-র‌্যাবকে এবং তার দলীয় ক্যাডারদের বানিয়েছে। যেমন ইতালিতে ইয়াং ট্রপার ছিল, সেই ইয়াং ট্রপার হচ্ছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ। এই যৌথ বাহিনীর আক্রমণ হচ্ছে নিরস্ত্র নেতা-কর্মীদের ওপর। এতোগুলো মোকাবিলা করেই আমরা নামছি, গুলি খাচ্ছি, গ্রেফতার হচ্ছিÑ এরপর তো বলার অবকাশ নেই, আমরা দুর্বল কিনা। আমরা যথেষ্ট সবল আছি, জনগণ আমাদের সাথে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আব্দুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ