Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনে জয়ের কৌশল নিয়ে ভাবছে সরকার, অন্যদেরও ভাবতে হবে

| প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবদুল আউয়াল ঠাকুর : বছরের প্রথম দিনই খবর বেরিয়েছে, গাইবান্ধায় সরকারদলীয় এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটন খুন হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা তার বার বাসায় ঢুকে গুলি করে পালিয়ে গেছে। ওইদিনই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির ভাষণ দিতে গিয়ে পার্টিপ্রধান এইচ এম এরশাদ আগামী নির্বাচনকে জীবনের শেষ নির্বাচন বলে মন্তব্য করে বলেছেন, আমাকে বাঁচাতে হলে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। গেল বছরের শেষপ্রান্তে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিজয়ের পর সরকারি দল মনে করছে তারা অপ্রতিরোধ্য। প্রায় একই সময়ে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর বর্জন করা জেলা পরিষদের নির্বাচনে এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সাম্প্রতিক এসব ঘটনাবলী নিয়ে বিশ্লেষণের অন্ত নেই। নানাভাবে দেখা হচ্ছে এসব ঘটনাকে। মানুষের মুখে মুখেও এসব নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা-বিশ্লেষণ। সেই সাথে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিমিত্তে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রেসিডেন্টের সাথে রাজনৈতিক দলের বৈঠক চলছে।
আওয়ামী লীগের আলোচ্য এমপি খুনের পর থেকেই এ নিয়ে যেমনি তাৎক্ষণিক বক্তব্য বা রেডিমেড মন্তব্য পাওয়া গেছে তেমনি রয়েছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে শুরু থেকে যেসব কারণ মনে করা হচ্ছে তার মধ্যে পারিবারিক শত্রুতা এবং সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনও রয়েছে। অন্যান্য যে কারণকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে সেগুলো তার মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। গত কয়েক বছরে যেখানে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ মাঠে নামতে পারছে না, ঘরে থাকতে পারছে না তাদেরকেই দায়ী করা হচ্ছে এ অঘটনের জন্য। এই ব্লেমগেমের অবসান হোক বা না হোক এটাই সত্যি যে, সরকার কথিত সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের উত্থান যা কিছুই বলা হোক না কেন কোনো কিছুতেই বিএনপির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাস্তবতা হচ্ছে, ঘটনা ঘটার বা ঘটানোর পর চিরাচরিত নিয়মমাফিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের জড়িয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয় তারপর আর কোনো খবর থাকে না। এবার আরও একধাপ এগিয়ে এমপি লিটন হত্যার পরপরই স্থানীয় একজন জামায়াত নেতার বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কে বা কারা পুড়িয়েছে তার বিবরণ না থাকলেও এটা বোঝা যায়, হত্যার সাথেই এর সম্পর্ক রয়েছে। এই হত্যাকে যখন মনে করা হচ্ছে, এর সাথে পারিবারিক বিষয়াদিও যুক্ত থাকতে পারে তখন কিন্তু স্বাভাবিক প্রশ্ন উঠতে পারে যে, হতে পারে যারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তারাই একই সাথে এটিও সম্পাদন করে থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্তাধীন। ইতোমধ্যে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের এক নেতাকে নাকি এ ঘটনার কারণে আটক করা হয়েছে। হয়তো কোনো একসময়ে এর পূর্ণবিবরণ জানা যাবে। এদিকে এ ঘটনার পর আতঙ্কে রয়েছেন অন্য এমপিরা। তারা এখন নিরাপত্তার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন। ব্যাপারটি খুবই স্বাভাবিক। কারণ এরা প্রায় সকলেই ‘নির্বাচিত’ হয়েছেন জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়াই। রাজনীতির মূল যে শক্তি জনগণ তাকে তোয়াক্কা না করেই একটি অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এরা ক্ষমতায়িত রয়েছেন। এখানে এ কথাও বলা দরকার, আলোচ্য এমপি এর আগে নাবালক শিশুকে গুলি করে আলোচিত হয়েছিলেন। তার হত্যার সূত্র ধরে এ ধরনের আরো অনেক খবর বেরিয়েছে। সেসবের নানাদিক রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে হত্যার প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করে লাভ নেই। শুধ্ ূএটুকু বলা যে, একজন জনপ্রতিনিধি মূলত তার এলাকার জনগণেরই মুখপাত্র। গণতন্ত্রে মৌলিক অধিকার বলতে তো ভোটাধিকারের প্রাথমিক অধিকারকেই বুঝানো হয়ে থাকে। সে বিবেচনায় যারা ভোট দিতে পারেন না বা দিতে দেয়া হয় না তাদের প্রতিনিধি বর্তমান এমপিদের মনে না করাই উত্তম। একজন সংসদ সদস্যের যে ধরনের জবাবদিহিতা থাকার কথা তার ন্যূনতম থাকলেও পারিবারিক কারণ একজন এমপির হত্যার কারণ হিসেবে উঠে আসতে পারে না। এ কথা সকলেরই মনে রাখা দরকার, পরিবার হচ্ছে সকল কিছুর কেন্দ্রবিন্দু। সেই পরিবারই যদি কাউকে বিশ্বাস না করে বা বিশ্বাসের জায়গা হেরফের হয় তাহলে এলাকার জনগণ যে তাকে বিশ্বাস করবে না তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ জন্যই একসময়ে মনোনয়ন দেয়ার আগে রাজনৈতিক-পারিবারিক অতীত বিবেচনায় নেয়া হতো। এখন খোঁজা হয় তার উল্টোটি। নির্ভরতা বিশ্বস্ততার সর্বনিম্ন জায়গাতেও এখন ফাটল ধরেছে। সে কারণেই একজন সংসদ সদস্য বা সংসদ সদস্যরা জনগণের নিরাপত্তার চেয়ে নিজের নিরাপত্তার কথাই এখন বেশি ভাবছেন। এই ভাবনার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যৌক্তিক দিকই ফুটে উঠেছে। যে ধরনের অনিশ্চয়তা সংসদ সদস্যদের মধ্যে এখন বিরাজিত তার মূল হচ্ছে নিজেদের মধ্যে অবিশ্বাস দানাবেঁধে ওঠা। বোধকরি এর প্রতিফলন ঘটেছে সরকার দলীয় জেলা পরিষদ নির্বাচনেও। এ নির্বাচনে যেসব প্রার্থী বিদ্রোহী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন তারা মূলত সরকারদলীয় লোকই। রাজনীতিতে তারা ঐক্যবদ্ধ। সরকার যখন বিরোধী দলকে মাঠ ছাড়া করার ডাক দেয় তখন তারাও তাতে সাড়া দেয়। অথচ দেখা যাচ্ছে, হালুয়া-রুটির বণ্টনে তারা ছাড় দিতে নারাজ। রীতিমতো চোখে রুমাল গুঁজে সবকিছু ভুলে নিজেরা নিজেদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন এবং জিতেছেন। এখন এমপি হত্যার সাথে জেলা পরিষদ নির্বাচন যুক্ত হওয়ার ফলে নতুনমাত্রা যুক্ত হলো। ব্যাপারটি এর আগেও ঘটেছে। উপজেলা নির্বাচনে সরকারদলীয় মনোনয়ন নিয়েও সৃষ্ট বিতর্কে এ ধরনের হত্যাকা-ের কথা বলা হয়েছে। এগুলো সবই সরকারদলীয় ভাগবাটোয়ারাজনিত গোলযোগ। একে কোনো বিবেচনাতেই রাজনীতির মূলধারা বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, যখনই শাসক দলের অভ্যন্তরে কোনো ঘটনা ঘটে তখন সেটি চাপিয়ে দেয় বিরোধীদের ওপর। এর আগেও শাসক দলের আন্তঃবিরোধের শিকারে পরিণত হয়েছিল মায়ের পেটে থাকা শিশু, যে কিনা তখন পর্যন্ত পৃথিবী দেখেইনি। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, শাসক দলের অভ্যন্তরীণ বহু ঘটনার হয়তো দু-একটি নানা কারণে বেরিয়ে পড়ে। তার ফলেই জনগণ কিছু জানতে পারে। যাইহোক, সরকারদলীয় অভ্যন্তরীণ কলহের কারণে একদিকে যেমনি জনগণ বিপদাপন্ন হয় তেমনি রাজনৈতিক ব্লেমগেমের জন্ম হয়। মূল ক্ষতি হচ্ছে দেশের।
নাসিকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয়ের পর সরকারি দলের কেউ কেউ যেভাবে উল্লসিত ছিলেন জেলা পরিষদের নির্বাচনের পর তাদের তেমনটা দেখা গেল না। এর কারণ যাইহোক নাসিকের নির্বাচন নিয়ে যেসব রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে এবং অনেক প্রত্যক্ষদর্শী যা বলেছেন তা নিয়ে আলোচনা এখন অর্থহীন। তবে এ থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য শিক্ষণীয় অনেক কিছু রয়েছে। আগে ব্যালট পাহারা দেয়া বলতে যা বোঝানো হতো এখন তাতে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের কারণে সে ধারণায় পরিবর্তন ঘটেছে। এখন আর সাধারণ পোলিং এজেন্টদের দিয়ে কাজ হবে না। একই সাথে জাল বা ভুয়া ভোট পরীক্ষার যোগ্যতার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনে এখন এ ব্যাপারটির ওপরও অধিক গুরুত্ব দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এ কথা বিবেচনায় রাখতে হবে, মার্কিন নির্বাচন হ্যাক করেছিল রাশিয়া। বাংলাদেশের বেলায় বিদেশিদের আগ্রহ নেই বা থাকবে না সে কথা জোর দিয়ে বলার উপায় নেই। এ কথা তো আমরা সকলেই স্বীকার করি, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতিতে আমরা যেমনি এগিয়েছি তেমনি নিজেদের নতুন বিপদের মধ্যেও ফেলে দিয়েছে। যথাযথভাবেই এটা বলা হয়েছে, নাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পেছনে প্রার্থী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বলা হয়, সরকারদলীয় অনেকেই বর্তমান মেয়রের পক্ষভুক্ত ছিলেন না। সরকারের নাকি এই মর্মে তথ্য দিল যে, আইভী না হলে সেখানে আওয়ামী লীগের অবস্থান হবে তৃতীয়। একনম্বরে থাকবে বিএনপি। সত্য-মিথ্যা ভালো-মন্দ যাই হোক যে কোনো নির্বাচনে অনেক ক্ষেত্রেই প্রার্থীর একটি অবস্থান থাকে। আমরা সেদিকে যাব না। এটুকু এখানে বলে রাখা দরকার, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অনেক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েও সরকারি রোষে এখন তার জীবনই বিপন্ন। শুধু গাজীপুরই নয়, বিরোধীদলীয় অনেক নির্বাচিত প্রতিনিধিরই একই দশা হয়েছে সুতরাং নাসিকে বিএনপি প্রার্থী জিতলেও পরিস্থিতি এর বাইরে কিছু হতো তেমনটা মনে না করাই সঙ্গত।
সরকারের রাজনৈতিক পার্টনার জাতীয় পার্টি প্রধান তাকে বাঁচাতে দলকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। ক্ষমতার অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেন মরে যাবার আশঙ্কা করছেন তার বিবরণ অবশ্য দেননি। তবে এই কথার মধ্যে আগামী নির্বাচনের কিছু আভাস রয়েছে। এ কথা সকলেরই জানা, তিনি বা এ ধরনের লোকেরা সারাজীবনই নিজেকে নিয়েই ব্যস্তÍ থেকেছেন, থাকছেন। দেশ-জাতি কখনো তাদের মুখ্য বিষয় নয়। ক্ষমতার যে উচ্ছিষ্ট খেতে তারা ভালোবাসেন তারা সেখানে যেতেই উঠ পাখির মতো মুখ বুজে বসে থাকেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে না যাবার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েও সকল দল ও মত অগ্রাহ্য করে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে গেছেন এবং ক্ষমতার ভাগাভাগি করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের ভূমিকায় রয়েছেন। তিনি তার ভাষণে এটা সুনির্দিষ্ট করেননি যে ক্ষমতার কোন পর্যায়ে গেলে তার বেঁচে যাবার বিষয়টি সুনিশ্চিত হবে। গায়ের জোরে একসময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বলা হয়েছিল, পুনরায় প্রেসিডেন্ট বানানো হবে বলে নাকি তাকে আওয়ামী জোটভুক্ত করা হয়েছিল। তার ভাগ্যে সেটা জোটেনি। এবার তিনি যদি পুনরায় ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট হতে চান তা হলে তো অনেক কিছু সংশোধন করতে হবে। সে জন্য যে ব্যাপক জনসমর্থন প্রয়োজন তা তার আছে বলে এখনো প্রতীয়মান নয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর যে সমাবেশ তিনি করেছেন তা থেকে অন্তত এতটা এগোনোর কোনো লক্ষণ স্পষ্ট নয়। তা হলে বাঁচার জন্য দ্বিতীয় অবস্থান হতে পারে সরকারের সাথে বা বিরোধী দলে থাকা। সেক্ষেত্রে তাকে নিশ্চিত করা প্রয়োজন কোন দলের সাথে তিনি থাকবেন। কথা যাই বলুন না কেন তিনি এবং তার দল আওয়ামী লীগের সাথেই থাকবে। সে বিবেচনায় তিনি যদি বিরাধী দলের নেতা থাকতে চান তাহলে ক্ষমতায় থাকবে আওয়ামী লীগ। এ ব্যাপারে তিনি বা তার দল কতটা নিশ্চিত তা তারাই বলতে পারবেন। তবে তার মন্তব্য অবশ্যই আলামতবাহী। এ থেকে আগামী নির্বাচনের এক ধরনের সমীকরণের গন্ধ পাওয়া যায়। ব্যাপারটি নতুন নয়। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল যখন বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হওয়ার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে তখন এ প্রক্রিয়া-প্রবণতার কথা ভাবা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সরকারের অনেকেই মনে করছে। আর যাই হোক. নির্বাচনকে যেমনি আর কলঙ্কিত করা যাবে না তেমনি বিএনপিকেও আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যবে না। তাদের বিবেচনায় সরকার গঠন করবে আওয়ামী লীগ আর বিরোধী দলে থাকবে জাতীয় পার্টি। দু-চারটি আসন নিয়ে বিএনপি সংসদে থাক বা না থাক নির্বাচন নিয়ে যাতে তারা কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। এ নিয়ে শাসক দলের মধ্যে মতপার্থক্যও রয়েছে। অনেকে মনে করে, বিএনপিকে বিরোধী দলে না রাখলে কোনো অবস্থাতেই সামাল দেয়া যাবে না। অন্যপক্ষ মনে করে, বিএনপি সংসদে বিরোধী দলে থাকলে সংসদ চালানো যাবে না। অনেক বিশ্লেষক নাসিক নির্বাচনকে উদারণ হিসেবে ধরতে চান। তারা মনে করেন, প্রয়োজনীয় জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও কৌশলগত কারণেই সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয় হয়েছে। এই কৌশল কি? নির্বাচন-পরবর্তী যেসব বিশ্লেষণ বেরিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, অনেকে মনে করেন বিএনপির প্রার্থী বাছাই ঠিক হয়নি। এক ধরনের কোন্দলের প্রসঙ্গ অনেকে টানতে চান। নাসিক নির্বাচনে যদি কাউন্সিলরদের হিসাব দেখা যায়, তাহলে সেখানে আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপিই এগিয়ে রয়েছে। সঙ্গত প্রশ্ন উঠতে পারে কাউন্সিলর এগিয়ে থাকলে মেয়র পদে পিছিয়ে কেন? অর্থবিত্তের কথা না বললেও এক ধরনের ভ্রান্তি যে হয়েছে সে কথা কোনো বিবেচনাতেই অস্বীকার করা যাবে না। এটা হয়তো এক ধরনের মন কষাকষি। খানিকটা টানাপড়েন। ব্যাপারটিকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ২০০৭-এর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমল থেকে বিএনপিকে তছনছ করতে যারা দোকান খুলে বসে আছেন তারা যে নির্বাচন ঘনিয়ে এলে আরও তৎপর হবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এসব দোকানের যারা মালিক সেজে বসে আছেন তাদের অবশ্য আশাপ্রদ হবার মতো এখনো কিছু নেই। যারা আগে যাতায়াত করতেন তাদের অনেকের মধ্যই এখন তীব্র হতাশা। কারণ তারা ভেবেছিলেন, ক্ষমতায় যাবেন তারা। এখন তারা দেখছেন ব্যাপারটি অন্যরকম। সরকারিমহল সুযোগ নিয়ে বরং তাদের মাথায় হাত রেখে বিএনপিকে তছনছ করে দেখার চেষ্টা করছে। নির্বাচন কবে হবে সেটি এখনো স্পষ্ট না হলেও একটা আভাস রয়েছে। সে মোতাবেক কৌশলও নির্ধারণ করা হচ্ছে। ভোটের হিসাব থেকে বিএনপিরও পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ