Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীতাকুন্ডে জলিল টেক্সটাইলের দখল বুঝে নিল রাষ্ট্রপক্ষ

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শ্রমিকের পাওনা ২২ কোটি টাকা ফেরতের উদ্যোগ
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু- থেকে : সীতাকু-ের ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জলিল টেক্সটাইল মিল সরকারিকরণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ লক্ষে গতকাল (শুক্রবার) ব্যক্তিমালিকানায় থাকা কারখানাটির দখল বুঝে নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। শিগগিরই সরকারিভাবে মিলটি চালু করে কারখানায় কর্মরত ১১শ’ শ্রমিকের পাওনা ২২ কোটি টাকা পরিশোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এতে শ্রমিকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। তারা কারখানার সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের এই উদ্যোগকে অভিবাদন জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ এর দশকে সীতাকু-ের ফৌজদারহাট সিডিএ আবাসিক এলাকায় জলিল টেক্সটাইল মিল স্থাপিত হয়। স্থানীয় আব্দুল জলিল চৌধুরী নামক এক উদ্যোক্তা ৬৪ একর জায়গার উপর এই কারখানাটি স্থাপন করেন।
এ ছাড়াও বেশ কিছু শর্ত দিয়ে কারখানাটি প্রতিষ্ঠাতা আবদুল জলিল ও তার ওয়ারিশদের হাতে দেয়া হয়। আবদুল জলিলের মৃত্যুর পর তার পুত্র সেলিম চৌধুরী, কন্যা নুরনাহার চৌধুরীসহ ওয়ারিশদের নিয়ন্ত্রণে কারখানাটি চলতে থাকে। এ সময় নানা কারণে মালিকপক্ষ কয়েকবার কারখানাটি হাতবদল করে পরিচালনা করে, কিন্তু ১৯৯৯ সালের পর এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধের সময় জলিল টেক্সটাইল কারখানায় স্থায়ী কর্মচারী ছিল এক হাজার ৭৩ জন। ক্যাজুয়েল শ্রমিকসহ ১১শ’ শ্রমিক সেখানে কাজ করত। কারখানাটি বন্ধ হয়ে যাবার পর শ্রমিকদের প্রায় ২২ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে যায়। এছাড়া যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে থাকে। ফলে চুক্তি লঙ্ঘন হওয়ায় সরকার পুনরায় জলিল টেক্সাটাইল নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলেও মালিক পক্ষ রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে বারবার মামলা করায় বিলম্ব হচ্ছিল। অবশ্য শেষ পর্যন্ত গত মাসে আদালতের রায়ে মালিকপক্ষ হেরে যায়। বাংলাদেশ মিনিস্ট্রি অব টেক্সটাইল অ্যান্ড জুট-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (বোর্ড অ্যান্ড ল) কাজী ফিরোজ হোসাইন প্রতিবেদককে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাথে মামলায় গত মাসে জলিল টেক্সটাইলের মালিক পক্ষ হেরে গেলে আদালতের রায় পেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ এ কারখানার দখল বুঝে নেয়ার উদ্যোগ নেয়। সেই হিসেবে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সীতাকু- সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রহুল আমিনের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী জায়গাটির দখল বুঝে নেয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ছাবেরী, সীতাকু- থানার ওসি মো: ইফতেখার হাসান, চট্টগ্রামের শিল্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিচালক নুরুল হুদা, সীতাকু- ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হক, ওসি (অপারেশন) মাহবুব মিল্কী, শ্রমিক নেতা মছিউদ্দোলাসহ কারখানার শ্রমিকরা। শ্রমিক নেতৃবৃন্দ কারখানার বাইরে ব্যানার ঝুলিয়ে কারখানাটি সরকারিকরণের উদ্যোগকে অভিবাদন জানান। ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার রহুল আমিন প্রতিবেদককে বলেন, কারখানাটি মালিকানা নিয়ে মামলার রায় রাষ্ট্রপক্ষ পেয়েছে।
এখন রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা কারখানাটির জায়গা বুঝে নিয়েছি। পূর্বের মালিক দীর্ঘসময় মিলটি পরিচালনা না করায় শ্রমিকের ২২ কোটি টাকা বকেয়া পড়ার পাশাপাশি কারখানার কোটি কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। এখন সরকার এটি চীনের সাথে চুক্তির মাধ্যমে তাদের দিয়ে এটি লাভজনক ও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নিচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ