Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেলানীর লাশ নয়, কাঁটাতারে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে ঝুলিয়েছে ভারত : আলোচনা সভায় বক্তারা

জাতীয়ভাবে ৭ জানুয়ারি ফেলানী দিবস পালনের দাবি ন্যাপ ও নাগরিক পরিষদের

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের হাতে নির্মম হত্যার শিকার বাংলাদেশের ফেলানীর মৃত্যুদিন ৭ জানুয়ারিকে জাতীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাপ ও নাগরিক পরিষদ নামের দুটি সংগঠন।
গতকাল শুক্রবার এ দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। এই ছবি শুধু ফেলানীর লাশের ছবি নয়, এই ছবি কাঁটাতারে বিদ্ধ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব। এই ছবি বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতিকদের ভারত তোষণনীতির বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার।
কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ী সীমান্তে বিনা উস্কানীতে বিএসএফ বাবার সামনে কন্যাকে শিশু ফেলানীকে হত্যাসহ সারা বছর সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের হাতে নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যার উদ্বেগ জানিয়ে তারা বলেন, এই ঘটনা ভারতের আগ্রাসী চরিত্র।
ন্যাপ নেতারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভারত তোষণনীতির কারণেই সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই ভারত সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য শুনে মনে হয় না তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী, মনে হয় তারা ভারতীয় জনপ্রতিনিধি।
তারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে সরকার দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সীমান্তে বাংলাদেশী জনগণ স্বাধীন ভুখ-ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও কৃষি কাজ করতে পারছে না। ৭ জানুয়ারী ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা। নেতৃদ্বয় শহীদ ফেলানী দিবসে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এদিকে, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় ফেলানী হত্যা বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে মন্তব্য করে বিএসএফের হাতে নির্মম হত্যা শিকার ফেলানীর মৃত্যুদিন ৭ জানুয়ারিকে জাতীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালনের দাবি জানিয়েছে নাগরিক পরিষদ নামের একটি সংগঠন।
গতকাল শুক্রবার সংগঠনের আহ্বায়ক মো. শামসুদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম, মা জাহানারা বেগম, দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. হারুন-অর-রশিদ খান, নাগরিক পরিষদের নেতা আল-আমিন সরকার প্রমুখ।
ফেলানী হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি দাবি করে মো. শামসুদ্দীন বলেন, তা না হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে না। বাংলাদেশের নাগরিকদের বিএসএফ বিনা বিচারে হত্যা করে। যা অমানবিক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্ত্রহাতে ভারতীয় বিএসএফ বারবার ঢুকে পড়ে, যা আমাদের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লংঘন। সার্বভৌমত্বের লংঘন স্বাধীনতার লংঘন। ভারতের সঙ্গে চীন, মিয়ানমার, নেপালা, ভূটান, পাকিস্তানের পারস্পরিক সীমান্ত থাকলেও শুধু বাংলাদেশ সীমান্তে তারা অমানবিকভাবে সীমান্ত হত্যা করে। যা খুবই দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক।
শামসুদ্দীন জানান, বিশ^ব্যাপী সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে ৭ জানুয়ারি ফেলানী দিবস পালনের জন্য নাগরিক পরিষদ জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর ২০১৫ সালে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। সীমান্ত হত্যা ও সার্বভৌমত্বের লংঘনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়তে নাগরিক পরিষদ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সক্রিয় আন্দোলন সংগ্রাম করছে।
তিনি ফেলানী হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি, ফেলানীর পরিবারকে কমপক্ষে বিশ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, সীমান্ত হত্যা ও সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বন্ধ, কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের নাম ফেলানী সীমান্ত; ঢাকার গুলশান-১ থেকে তেজগাঁও রাস্তার নামকরণ ফেলানী স্মরণী, বাংলাদেশসহ সারাবিশে^ সীমান্ত হত্যাবিরোধী ফেলানী দিবস পালনের দাবিতে ৭ জানুয়ারী ফেলানী দিবস পালনের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে ৭ জানুয়ারী জাতীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালনের দাবি জানান।



 

Show all comments
  • rsza ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ৮:৫৩ এএম says : 0
    আমিও একজন বাঙ্গালি হিসাবে আমার বোনের khonidar fashi chai. prokhan tora bolta chai barotar sorkar jodi ak bapar jonmo hoya thako falani hottar moto akti gotona chin simanta gotaya dakow.
    Total Reply(0) Reply
  • Fakhrul ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:২০ এএম says : 0
    অবশ্যই ফেলানি দিবস হওয়া উচিত। নইলে নতুন প্রজন্ম ভারতের বন্ধুসুলভ (আগ্রাসী ,নব্য উপনিবেশবাদের) আচরণ কি করে বুঝবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Rifat Uddin ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:২০ এএম says : 0
    right
    Total Reply(0) Reply
  • Mikail ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:৫৩ পিএম says : 0
    Right becer cei
    Total Reply(0) Reply
  • ৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:৪৮ এএম says : 0
    Bangladesh must make felani day.India is a country agressive and offensive. I think Bangladesh should go United nation to help us to border killing justice.They never respect united nation rules and regulation. Every time they violate international law. Rising indian wrong power its a threat for world peace.
    Total Reply(0) Reply
  • ৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:৩০ পিএম says : 0
    India Is A ................. Country
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ