পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফেলানী দিবস আজ। ফেলানী খাতুনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর ৬টায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষি বাহিনীর (বিএসএফ) ঠান্ডা মাথায় ফালানীকে গুলি করে হত্যা করে।
গুলিবিদ্ধ ফেলানী আধাঘণ্টা ধরে কাঁটাতারে ঝুলে থেকে ‘পানি পানি’ বলে চিৎকার করতে থাকে। গুলি চালানোর পর ভারতের অনন্তপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা পাশ দিয়ে টহল দিতে থাকে। তারা ফেলানীর আত্মচিৎকার উপভোগ করছিল। এক সময় কাঁটাতারে ঝুলন্ত তরুণী ফালানীর নিথর শরীর স্তব্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকে ফালানীর লাশ। ফালানীর বাবা নুরুল ইসলাম নূরু কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে বাংলাদেশে এলেও মেয়ের আর্তচিৎকারে সাড়া দিতে পারেননি। এ ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পর বিএসএফ ফালানীর লাশ ফেরত দেয়। ফেলানীর বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামে।
বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বে সীমান্তের কাঁটাতারের আটকে থাকা ফালানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দেয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতা সারাবিশ্বের ছড়িয়ে পড়ে। ফেলানী হয়ে উঠে প্রতিবাদের প্রতীক। বিশ্ব মিডিয়ায় ফেলানী খাতুনের মরদেহ কাটাতারে ঝুলে থাকার ঝুলন্ত ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় ভারত হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেও প্রহসনের বিচার করা হয়।
ফালানী হত্যার কড়া প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ; বরং হত্যাকারীদের সাথে বাংলাদেশের নাকি এখন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ইতিহাসের সর্বোচ্চপর্যায় অতিক্রম করছে। তাদের সব চাওয়া-পাওয়া পূরণ করা হয়েছে। প্রচার করা হয় ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক, রাখিবন্ধন সম্পর্ক এমনকি স্বামীস্ত্রীর সম্পর্কের কথা।
ফালানী হত্যার পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন বিএসএফকে একটি ‘খুনে বাহিনী’ হিসেবে অভিহিত করে। বিশ্বজুড়ে প্রচার হয় প্রতিষ্ঠিত বিএসএফ একটি বর্বর বাহিনী। এই বাহিনী এর আগেও বহু নারী ও শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ফালানী হত্যার আগে ২০১০ সালের মে মাসে ঠাকুরগাঁওয়ের রত্মাই সীমান্তের এক কিলোমিটার ভেতরে এসে পারুল নামে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রতিবাদ ও বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠায় ভারত ফেলানী হত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। বিএসএফর ডিজি বাংলাদেশে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঙ্গিকার করেছিরেন ‘আর কোনো বাংলাদেশী নাগরিকের ওপর তারা কোনো মারণাস্ত্র ব্যবহার করবেন না’। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি তারা রাখতে পারেননি।
বর্তমান সরকারের আমলে বর্বর ভারতীয় বাহিনী বিএসএফ এই পৈশাচিকতা ফ্রি-স্টাইল লাইসেন্সের রূপ নিয়েছে। আর নরঘাতক ভারতীয় বাহিনীর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে একবারও প্রতিবাদ করতে পারেনি বাংলাদেশের সরকার।
দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও মানবাধিকার সংগঠন নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সেন্টার ফর ন্যাশনালিমজ স্টাডিজ (সিএনএস) দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে ‘ফেলানী ও সীমান্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।