পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ঘটনার তিনদিন পরেও গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটের ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়ার কু-লি বের হয়। মার্কেট কমিটির নেতৃবৃন্দ আবারো বলেছেন, অগ্নিকা-ের ঘটনাকে পরিকল্পিত এবং নাশকতা উল্লেখ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এজন্য তারা পুলিশ ও তদন্ত কমিটির কাছে মার্কেটের ৩৬টি সিসিটিভির ফুটেজ সরবরাহ করেছেন। এদিকে ঘটনাটি তদন্তে মানবাধিকার কমিশন ৮ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
মার্কেটটির ধসে পড়া কাঁচা মার্কেটের ধ্বংসস্তূপ থেকে গতকালও ধোঁয়া বের হয়। এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন কর্মীরা। অপরদিকে আগুনে পোড়া অপর অংশ পাকা মার্কেটটি আজ শুক্রবারই চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এজন্য সেখানে চলছিলো পরিষ্কার করার কাজ। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক মেজর শাকিল নেওয়াজ খান বলেন, ধসে পড়া অংশের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বিভিন্ন প্লাটিক ও সিনথেটিক বস্তু থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ সম্পূর্ণ অপসারণ করতে কিছুটা সময় লাগবে।
মার্কেট ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। মোতায়েন রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মার্কেটের ভেতরে দোকান মালিক ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
পাকা মার্কেটটি আজ শুক্রবার থেকে চালুর সীদান্ত নিয়ে সেখানে মাইকিং করে কর্তৃপক্ষ। তবে গতকাল বেশিরভাগ দোকানই তালাবদ্ধ দেখা গেছে। ঘটনাস্থলের পাশের ছয়তলা গুলশান শপিং সেন্টার দুই দিন বন্ধ থাকলেও গতকাল আংশিক খুলে দেয়া হয়েছে।
অগ্নিকা-ের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের গঠিত তদন্ত কমিটি গতকালও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে কোনো কথা বলেননি কমিটির সদস্যরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী নেতারা জানিয়েছেন, তদন্তে সহযোগিতায় মার্কেটটির সিসিটিভির ৩৬টি ফুটেজ পুলিশ ও তদন্ত কমিটিকে দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনে দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র আনিসুল হক। ডিএনসিসি-১ কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শের মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেছেন, আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, মার্কেটে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের মার্কেট থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকারের কাছে আমরা এই অগ্নিকা-ের বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এদিকে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নেন।
ঘটনা তদন্তে মানবাধিকার কমিশনের কমিটি
এদিকে ডিএনসিসি মার্কেটে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৮ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কমিশনের সদস্য নুরুন নাহার ওসমানী। ২৫ জানুয়ারির মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মানবাধিকার কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩ জানুয়ারি মার্কেটে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ওই দিন ঘটনাস্থলে যান। মার্কেটে কর্মরতদের চাকরি হারানোর বিষয়টি কমিশনের দৃষ্টিতে আসে। এ ছাড়া আগুনের ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত সে বিষয়টিও অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। কমিশনের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সামনে বিষয়টি উত্থাপিত হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তকরণ ও ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ধরনের সুপারিশ দিতে উচ্চ পর্যায়ের এ কমিটি গঠন। কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং ডিএনসিসি মার্কেট গুলশান ১-দোকান মালিক সমিতির একজন করে সদস্যকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে গুলশান-১ নম্বরে পাশাপাপাশি ডিএনসিসির কাঁচা ও পাকা মার্কেটে আগুন লাগে। এরমধ্যে দোতলা ভবনের কাঁচা মার্কেটটি সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। ১৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুরোপুরি নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। মার্কেট দুটিতে আমদানি করা খাদ্যপণ্য, প্রসাধনী, পোশাক, গয়না, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও প্লাস্টিক, কাঁচা বাজার, মুদি-মনোহারী, আসবাবপত্র, খাবার ও গ্যাস সিলিন্ডার মেরামতের সাড়ে পাঁচশর মত দোকান ছিল। আগুনে চারশতাধিক দোকান পুড়ে গেছে এবং বাকিগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচশ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।