Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গরমৌসুমে বড় ইলিশ দেশের বাজারে মওসুমে ভারতে

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নরসিংদীতে দেড় কেজি সাইজের ৩ ইলিশ ৮ হাজার ৮শ’ টাকায় বিক্রি
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : শীতকাল জাতীয় মাছ ইলিশের গরমৌসুম। কিন্তু তাই বলে ইলিশের চাহিদা কখনো কমে না। ১২ মাসই বাজারে ইলিশের আমদানি হয়, ১২ মাসই বিক্রি হয়। তবে শীতকালে বা গরমৌসুমে ইলিশের সাধারণ ক্রেতা থাকে কম।
বেশির ভাগ ধর্ণাঢ্য পরিবারের লোকেরাই চড়ামূল্যে বাজার থেকে ইলিশ কিনে নেন। তাদের মতে, শীত মৌসুমে ইলিশের জমাট তেল থাকে, স্বাদও একটু ভিন্নতর হয়। শীতকালে গরম ভাতে ইলিশ ভাজা এক ভিন্ন আমেজের সৃষ্টি করে। গত কয়েকদিন ধরেই নরসিংদী রেল বাজারে বড় আকারের ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এই ইলিশ ভরা মৌসুমেও বাজারে দেখা যায় না। প্রতিদিনই আমদানি হয়, আবার নীরবে বিক্রিও হয়ে যায়। গত বুধবার নরসিংদীর রেল বাজারে বড় আকারের বেশ কয়েকটি ইলিশ মাছ আমদানি হয়। এর প্রতিটির ওজন ছিল দেড় কেজির উপরে। অর্থাৎ এক কেজি ৬ গ্রাম করে তিনটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে আট হাজার ৮শ’ টাকা। প্রতি কেজি ইলিশের দাম নেয়া হয়েছে এক হাজার ৬শ’ টাকা করে। তিনটি ইলিশ আট হাজার ৮শ’ টাকায় কিনে নেয়ায় অনেকেই সমালোচনা করে বলেন, শখের তোলা ৮০ টাকা হলে মাছের দাম বেশি হয়নি। টাকা থাকলে এর চেয়ে বেশি দামে কিনলেও ক্ষতি নেই। এ ব্যাপারে ইলিশ বিক্রেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তার এই ইলিশগুলো পদ্মার ইলিশ। তিনি ঢাকা থেকে কিনে এনেছেন। ঢাকায় এরকম বহু ইলিশ আমদানি হয়। মৌসুমে এসব বড় বড় আকারের ইলিশ চলে যায় ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাজারে। গরমৌসুমে ইলিশ রফতানি কম হয় বলে এসব বড় ইলিশ দেশের বাজারে বিক্রি হয়। গত দুই বছর বাজারে ইলিশের খুব সঙ্কট ছিল। এর আগের বছর শীত মৌসুমে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। জেলেরা জানায়, সে বছর মৌসুমে যে ইলিশ ধরা পড়েছিল, তার চেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছিল শীতকালে। সেবছর সাধারণ মানুষ প্রচুর ইলিশ কেনার সুযোগ পেয়েছিল। স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, নরসিংদীর মেঘনাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশের সংখ্যা কমে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছেÑ ডিমওয়ালা ইলিশ নিধন। বাজারে যত ইলিশ বিক্রি হয়, তার ৯০ ভাগই ডিমওয়ালা ইলিশ। সরকার যদি সারা বছর ডিমওয়ালা ও জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করে দেয়, তবেই দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাবে। যে গরিব জেলেদের দোহাই দিয়ে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়, তা বাস্তবের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। নদ-নদীতে ইলিশ ধরার সাথে সাধারণ জেলেদের কোনো স্বার্থ নেই। নদ-নদীগুলো জেলেদের দখলেও নেই। এলাকার রাজনৈতিক নেতা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সমাজের প্রথাগত নেতারা নদ-নদী, জলাশয় বহু আগেই দখল করে নিয়েছে। এসব নেতাদের কর্মচারী হিসেবে জেলেরা নদীতে মাছ ধরে। এর জন্য তাদেরকে পারিশ্রমিক দেয়া হয় মাত্র। জাল যার জলা তার, এই সেøাগানের মাহাত্ম এখন উল্টো। জালের মালিক এখন নেতারা, জলাশয়ের মালিকও তারাই। জেলেরা জাল নিয়ে জলাশয়ের ধারে কাছে যাবারও ক্ষমতা রাখে না। এ অবস্থায় সরকার যদি ১২ মাস ডিমওয়ালা ও জাটকা ইলিশ ধরা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করে দেয়, তবে দেশে ইলিশের উৎপাদন আবারো বেড়ে যাবে। এ অভিমত মাছ চাষ, মাছ ব্যবসা সংশ্লিষ্ট সকল শ্রেণির মানুষের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইলিশ

২০ নভেম্বর, ২০২২
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ