Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোপালগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : গোপালগঞ্জে রিমা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবিতে মারিপিট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূকে মঙ্গলবার রাতে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে স্বামী, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা শ্বশুর, শাশুড়ী ও ননদ মারপিট করে আসছে বলে রিমার মা আসমা বেগম অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার  তাকে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনে মারপিট করে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে ভর্তি করেন। রিমা গোপালগঞ্জ শহরের চাঁদমারী এলাকার মোঃ মিরাজ হোসেনের মেয়ে। সে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের ¯œাতক মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। রিমা জানায়,তার স্বামী রাসেল মাহামুদ, ননদ চাঁদনী, শাশুড়ী নাজমা বেগম, শ্বশুর পুলিশের আবসরপ্রাপ্ত এস.আই চুন্নু শেখ তাকে বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে আসছিলো। গত ৩ দিন আগে তারা তাকে হকি স্টিক দিয়ে পিটিয়েছে। চুলের মুঠি ধরে মাথা দেয়ালের সাথে আঘাত করেছে। তার বাম চোখ, মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে বলে সে জানায়। রিমার মা আসমা বেগম বলেন, ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর ফরিদপুর শহরের কমলাপুর ডিআইবি বটতলা এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা চুন্নু শেখের ছেলে রাসেল মাহামুদের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। তাদের ২ বছর বয়সী রাইসা নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় আমরা ৪ ভরি স্বর্ণালংকার, ফর্নিচার,ক্রেকারিজ সহ সংসারের সমস্ত মালামাল যৌতুক হিসেবে দেই। তারপর থেকেই যৌতুকের দাবিতে জামাই তার বোন, বাবা ও মা বিভিন্ন সময়ে আমার মেয়েকে মারপিট করে আসছিলো। রাসেল সিঙ্গাপুর যাওয়ার সময় আমদের কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে ২ লাখ টাকা নেয়। বিদেশে আয়ের সমস্ত টাকা নষ্ট করে ফেলে। সেখানে জেল খাটার পর গত ২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসে। আবার আমার মেয়েকে যৌতুকের টাকা  এনে দিতে বলে। আমার মেয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে মারপিট করা হয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনে তাকে মারপিট করে ফেলে রেখে যায়। আমরা এ ব্যাপারে এখনো থানায় মামলা করিনি। মেয়ে সুস্থ্য হলেই মামলা করবো। গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ অনুপ কুমার মজুমদার বলেন, মেয়েটি শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। তবে তার অবস্থা সংকটাপন্ন নয়। এখানে চিকিৎসায় সে সুস্থ হয়ে উঠবে। বিয়ের ঘটক ফরিদপুর থানার এএসআই হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে যৌতুকের দাবিতে ওই গৃহবধূর উপর অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়েছে। রাসেল মাহামুদের পিতা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের এসআই চুন্নু শেখ বলেন, বিয়েতে আমরা কোন যৌতুক নেইনি। বিদেশ যাওয়ার সময় রাসেলকে আমার পেনশনের টাকা দিয়েছি। তাদের কাছে যৌতুক চাইনি। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনো মালিন্যকে কেন্দ্র হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সে দিন আমি ও আমার স্ত্রী বড়ি ছিলাম না। গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। তার ওপর আমরা কখানোই নির্যাতন করিনি। আমি,আমার মেয়ে ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনিত মারপিটের অভিযোগ মিথ্যা। এখন আমাদের ফাঁসাতেই তারা মিথ্যা ঘটনা সাজাচ্ছেন। রিমার পিতা উল্টো আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়েছে। এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়ার পায়তারা করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ