Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান

শিক্ষক সংকটে নুরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজ

| প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খলিল শিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নুরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজের পাঠদান কার্যক্রম চলছে  নানা সংকট নিয়ে। ভবনসহ নানা সংকট মোকাবেলায় নেই কোন উদ্যোগ। নেই উপযুক্ত স্কুল ভবন। আর ভবন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান। আবার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী থাকলেও নেই পরীক্ষণ যন্ত্রাদি। রয়েছে শিক্ষক সংকটের মতো ভয়াবহ পরিবেশ। পার্টটাইম শিক্ষক দিয়ে নামেমাত্র চালু রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার মান। ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থী। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের নুরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজের তিনটি ভবনের মধ্যে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল স্বাধীনতা যদ্ধের প্রাক্কালে। সেই ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর ১৯৯৬ সালে  বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখার জন্য একটি একতলা ভবন নির্মাণ করেন। তবে  বিশ বছর না যেতেই ভবনটির ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়তে দেখা গেছে। ভবনের খুঁটিতেও ফাটল থাকায় ভয়াবহ ঝুঁকিযুক্ত পরিবেশের ভুতুরে পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। তাই বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ছাদের নিচেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এতে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা অর্জন করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ একটি অসাধু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অত্র বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ফলে তৎকালীন ঠিকাদারের দুর্নীতির মাধ্যমে নির্মাণ করা ভবনের ছাদ ও খুঁটিগুলো বিশ বছর না পেরুতেই ভেঙে পড়ছে। এতে যে কোন সময় হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলেও দাবি করেন তারা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখায় প্রায় ছয়শ’ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৯ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন অযুহাতে কোন কোন শিক্ষক থাকেন অনুপস্থিত। ফলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকটের কারণে পিছিয়ে পড়ে নিয়মিত পাঠদান থেকে। আর এর প্রভাব পরে বাৎসরিক ও কেন্দ্রীয় ফলাফলে। অন্যদিকে বিজ্ঞানাগারের পরীক্ষণ যন্ত্রাদির অভাবে সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যবহারিক জ্ঞান বঞ্চিত হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করার পরও তাদের জন্য বিজ্ঞানাগারের উপযুক্ত ও আধুনিক সরঞ্জামাদি থাকে না। ফলে তারা ব্যবহারিক জ্ঞান বঞ্চিত হয়েই উচ্চ শিক্ষার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সূত্র জানায়, উপজেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ভৌগলিকভাবেই সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত দাউদপুর ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও বেহাল দশা থাকায় ক্ষোভের শেষ নেই স্থানীয়দের। এসব বিষয়ে অভিভাবক নজরুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে আমার মেয়েদের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছি। সরকার যদি নতুন ভবনের ব্যবস্থা না করে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাবে। এসব বিষয়ে নুরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাত্তার আলী খান বলেন, ভবন সংকট, শিক্ষক সংকট ও বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রাদির সংকট বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এ সংকট মোকাবেলায় দেই দিচ্ছি বলে আশ্বস্ত করছেন মাত্র। তবে নানা সংকট থাকলেও  পার্টটাইম শিক্ষক দিয়ে লেখাপড়ার মান ও গতি বজায় রাখা হয়েছে।  কলেজ শাখায় এ ধরনের কোন সমস্যা নেই বলে জানান তিনি। এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা ইসলাম বলেন, দাউদপুরের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে জেনেছি। সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ