Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টঙ্গীর তুরাগ তীরে স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী : টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হতে যাচ্ছে তাবলিগ জামায়াতের মহাসমাবেশ ‘বিশ্ব ইজতেমা’। আগামী ১৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) পবিত্র জুম্মাবাদ আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ। ১৫ জানুয়ারি (রোববার) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম ধাপের ইজতেমা। এরপর চারদিন বিরতি দিয়ে ফের ২০ জানুয়ারি (শুক্রবার) শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ। একইভাবে ২২ জানুয়ারি (রোববার) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে ২০১৭ সালের ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা।
ইজতেমায় অংশ নেয়া মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গত বছর থেকে দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিদের দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক বছর পর পর ৩২ জেলার মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। জেলার মুসল্লিরা দুইভাগে ১৬ জেলা করে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবেন।
গত বছর যে ৩২ জেলার মুসল্লিরা দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছিলেন, ওই ৩২ জেলার মুসল্লিরা এ বছর ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না। টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও ধর্মাবলম্বীরা ইজতেমার মাঠে শেষ প্রস্তুতিমূলক কাজে সহায়তা করছেন।
কেউ খুঁটির উপর চট টাঙাচ্ছেন, কেউ লোহার খুঁটি ও পাইপ দিয়ে মূল মঞ্চ তৈরি করছেন, কেউ টয়লেট নির্মাণের কাজ করছেন, কেউবা পরিষ্কার ও বালু দিয়ে মাঠ সমান করছেন। হাসি-মুখে আনন্দের সঙ্গে সবাইকে ইজতেমা ময়দানে বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ করতে দেখা গেছে। দলবদ্ধ হয়ে ভাগ করে ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক কাজ করা হচ্ছে। মুসল্লিদের তুরাগ নদী পারাপারের জন্য স্থাপন করা হবে কয়েকটি ভাসমান সেতু।
বিদেশি মুসল্লিদের থাকার জন্য ইজতেমা মাঠের উত্তর-পশ্চিম পাশে তুরাগ তীরে টিন-চট দিয়ে বিশেষ কামরা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিদেশি আবাসনের পশ্চিমে তুরাগ পাড়ে তাদের রান্নার চুলা ও রন্ধনশালা নির্মাণ করা হচ্ছে। তাবলিগ জামায়াতের উদ্যোগে প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে। ১৬৫ একর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ইজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলিগ জামায়াত অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নেন। বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামায়াতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন। পরে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামায়াতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের তাবলিগ অনুসারীরা মিলিত হন এ তুরাগ তীরে।
বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বি গিয়াস উদ্দিন জানান, আগামী ১৩ জানুয়ারির আগেই বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হয়েছে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এবছর ২০১৭ সালের ৫২তম ইজতেমার দুই পর্বে অংশ নেয়া ৩২ জেলাগুলো হলোÑ গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গোপলগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, সৈয়দপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোর, বাগেরহাট, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালি, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, বরিশাল ও সাতক্ষীরা।
বিশ্ব ইজতেমায় চলবে বিআরটিসির ২২৮টি বাস
এবার বিশ্ব ইজতেমার মুসল্লি পরিবহনে বিভিন্ন সড়কে বিআরটিসির ২২৮টি বাস চলাচল করবে। বিআরটিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এই তথ্য জানানো হয়।
বিআরটিসির ডিজিএম (অপারেশন-১) মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৭ সালের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফা হবে ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফা হবে ২০ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি। ১১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বিআরটিসির ইজতেমা সার্ভিসে ওই সব বাস চলাচল করবে।
এয়ারপোর্ট থেকে ইজতেমাস্থল পর্যন্ত (বিদেশি মুসল্লি পরিবহনে) ৩টি, আব্দুল্লাহপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ২৯টি, শিববাড়ি-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ১৩টি, টঙ্গী-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ১৭টি, গাজীপুর চৌরাস্তা-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল-৬টি, গাবতলী-গাজীপুর ভায়া ইজতেমাস্থল ৫টি, গাবতলী-মহাখালী ভায়া ইজতেমাস্থল-৩৫টি, গাজীপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল-২৫টি, মতিঝিল-বাইপাইল ভায়া ইজতেমাস্থল-২০টি, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে-২০টি, চট্টগ্রাম-সাভার রুটে-২০টি, ঢাকা-নরসিংদী রুটে-২০টি, ঢাকা-কুমিলা রুটে-১৫টি বাস চলাচল করবে।
ইজতেমা উপলক্ষে বিআরটিসির ইজতেমা সার্ভিস সুষ্ঠুভাবে চলাচল নিশ্চিত করতে কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে এবং জোয়ার সাহারা বাস ডিপোতে দুইটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে। এসব কন্ট্রোল রুমে দুইটি টেলিফান নম্বর যথাক্রমে-৯৫৬৪৩৬১ এবং ৮৯০০৬৫৫ খোলা থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইজতেমার

১৮ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ