বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল নগরবাসীর চিত্ত বিনোদনের যে সিমিত স্থপনা গুলোও ক্রমশ বখাটে ও কিশোর মাস্তানদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাচ্ছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর আন্তরিকতার অভাবের সাথে নজরদারীকে এড়িয়ে সংগঠিত এবং অসংগঠিত উঠতি ও কিশোর মাস্তান দলের আড্ডাবাজি সহ সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডে নগরীর চিত্ত বিনোদনের স্থানগুলোর সুস্থ পরিবেশও ক্রমশ ভুলন্ঠিত হচ্ছে। ফলে প্রায় বিনোদোন সুবিধাবিহীন এনগর জীবনে একটু শ্রান্তির স্থানগুলোও নারী ও শিশুদের স্বস্তি দিতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত নারী ও শিশু-কিশোর সহ অভিভাবক মহলও।
প্রায় ৬০ বর্গ কিলোমিটারের এ মহানগরীতে বঙ্গবন্ধু উদ্যান, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, স্বাধিনতা পার্ক, ৩০ গোডাউন সংলগ্ন শতায়ু অঙ্গন এবং অতি সম্প্রতি চালু হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহনারা বেগম পার্কে সুস্থ সামাজিক পরিবেশের সাথে নারী এবং শিশুদের নির্বিঘেœ বিচরন ও বিনোদনের পরিবেশও ক্রমশ বিলুপ্ত হতে চলেছে। এমনকি যান্ত্রিক এবং কোলাহলপূর্ণ নগর জীবনের ক্লান্তি থেকে একটু শ্রান্তি পেতে এসব পার্কে এসে শিশু ও নারীরা প্রায়শই চরম বিরক্তি সহ বিড়ম্বনারও শিকার হচ্ছেন।
সিটি মেয়রের মরহুমা মায়ের নামে নগরীর মধ্যে দিয়ে চলমান জাতীয় মহাসড়কের ওপর গড়ে তোলা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহানারা বেগম পার্কটি চালুর পর থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকার নারী ও শিশুদের ভিড় শুরু হয়। নারী ও শিশুরা শেষ বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ পার্কে একটু শ্রান্তির জন্য ছুটে আসছেন এখানে। কিন্তু একদিকে একটি জাতীয় মহাসড়কের ওপর এ পার্কটিতে প্রবেস যেমনি যথেষ্ঠ ঝুকিপূর্ণ, তেমনি এখানে উঠতি মাস্তান ও কিশোর মাস্তানদের বেপরোয়া কর্মকান্ড আগত নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা বিঘিœত করায় যথেষ্ঠ বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরী করছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আগতদের অনেকেই এ পার্কের পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট ও ক্ষুদ্ধ। এ পার্কটির অভ্যন্তরের মত পশ্চিম ও দক্ষিণÑপশ্চিম পাশের রাস্তাটিও কিশোর মান্তানদের অবাধ বিচরন ক্ষেত্র বলে লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি এ পার্কের আসেপাশের রাস্তা ও পথ খাবারের খুপরি দোকানে মাদক বেচা কেনারও অভিযোগ রয়েছে।
এক সময়ে খেলাধুলা এবং প্রাত ভ্রমন ও সান্ধ্য ভ্রমনের জন্য এ নগরীতে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের নির্ভরতা ছিল। এখন সেখানে আড্ডাবাজি ও পথ খাবারের দোকানের ভিড়ে পা রাখা দায়। উপরন্তু এ উদ্যানটিতে নানা মেলা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গিয়ে মূল মাঠ সহ ওয়াকওয়ের অবস্থাও বিপন্ন। মাস কয়েক আগে বৃক্ষমেলা করতে গিয়ে মাঠটির উত্তর ও পশ্চিম-উত্তর অংশে বালু ফেলায় ওয়াকওয়ের চেয়ে মাঠের উচ্চতা বেড়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠের পানিতে ওয়াকওয়ে ডুবে যাচ্ছে।
এখন মাঠের বালুতেও ওয়াকওয়ে গুলো ঢেকে থাকছে। ফলে সুস্থ থাকতে এখানে হাটতে আসা মানুষগুলো ধুলা বালুর কারণে স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ছেন। এরসাথে আড্ডাবাজ এবং সংগঠিত ও অসংগঠিত কিশোর মাস্তান বাহিনীর স্বরব উপস্থিতি একটু শ্রান্তি খুজতে আসা নারী-পুরুষ ও শিশুদের স্বস্তি কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি নিয়মিত বাতি না জ¦লায় সন্ধার পরে অন্ধকারচ্ছন্ন পরিবেশে এ উদ্যানের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
উপরন্তু এ উদ্যানে স্কুল-কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রÑছাত্রীদের অনেক রাত অবধি আড্ডাবাজি সহ অবাধ মেলামেশা সুস্থ সামাজিক পরিবেশকে বিপন্ন করলেও তা দেখার কেউ নেই। বছর দুয়েক আগে একবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে এখান থেকে বিপুল সংখ্যক ছাত্রÑছাত্রীকে আটক করে মুচলেকবার বিনিময়ে ছেড়ে দিলেও সময়ের ব্যাবধানে পরিবেশের আরো অবনতি ঘটেছে। গনপূর্ত অধিদপ্তরের জমিতে গড়ে তোলা এ পার্কটি বিজলী বাতি ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হলেও এর অঘোষিত নিয়ন্ত্রন জেলা প্রশাসনের হাতে। কিন্তু এ উদ্যানের উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষায় কেউ আন্তরিক নয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বৃটিস যুগে তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ বেল এর নামে প্রতিষ্ঠিত ‘বেল পার্ক’টি ১৯৭৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু উদ্যান’ নামে নামকরন করা হয়। ঐ বছরই মার্চে বরিশাল সফরকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘বঙ্গবন্ধু উদ্যান’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন।
নগরীর পাশে বহমান কির্তনখোলা নদীর পাড়ে বিআইডব্লিউটিএ’র অধুনালুপ্ত মেরিন ওয়ার্কসপের জমিতে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি নগরবাসীর চিত্ত বিনোদনের অন্যতম একটি স্থান হিসেবে গড়ে উঠলেও সেখানেও কিশোর মাস্তান বাহিনীর উৎপাতে সুস্থ পরিবেশ বিপন্ন। একই পরিস্থিতি সিএসডি গোডাউন সংলগ্ন কির্তনখোলা নদী তীরের বধ্যভ’মি সহ ‘শতায়ু অঙ্গন’ এলাকায়ও। নদীর পাড়ে কোলাহল মূক্ত একটু প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে এখানে নারী-পুরুষ ও শিশুরা ভির কলেও কোন স্বস্তি নেই। এখানেও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কিশোর ও উঠতি মাস্তানদের উৎপাতে সুস্থ সামাজিক পরিবেশ বিপন্ন।
নগরীর আমতলা মোড়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট-এর জমিতে গড়ে তোলা স্বাধিনতা পার্কটির অবস্থাও একই। এখানেও দিন রাত কিশোর ও উঠতি মাস্তানদের অবাধ কর্মকান্ডে বন্দী সুস্থ সামাজিক পরিবেশ। ফলে এ পার্কে সকাল-সন্ধা যারা হাটতে বা ঘুরতে আসেন, তাদেরকে প্রায়সই যথেষ্ঠ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
এসব বিষয়ে বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট থানাকে বারবারই সতর্ক করা হচ্ছে। পুলিশী টহল চলছে বলে জানিয়ে এসব ব্যপারে আরো মনযোগী হবার নির্দেশ প্রদানের কথাও জানান পুলিশ কমিশনার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।