Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অ্যাম্বুলেন্স চালকের অনুপস্থিতিতে রোগীরা জরুরি সেবাবঞ্চিত

রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২৩, ১২:০১ এএম

রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর রোগীরা বিভিন্ন সমস্যায় রয়েছেন বলে রোগীদের অভিযোগ।

জানা যায়, সমস্যার মধ্যে জরুরি সেবায় নিয়োজিত আছেন হাসপাতালের ২টি অ্যাম্বুলেন্স, কিন্তু সরকারি এ অ্যাম্বুলেন্স থাকার সত্বেও চালকের কর্মস্থলে অনুপস্থিতি কারণে রোগীরা জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সের চালকের অনুপস্থিতিতে রোগীরা চরম সমস্যায় আছে। এখানে একমাত্র ভরসা ব্যক্তিগত অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, সিএনজি, ভটভটি ওপর। বাড়তি ভাড়ার কারণে বিপদে পড়তে হয় বেশিরভাগ গরীব রোগীদের।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চালকের অনুপস্থিতিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়ি চালককে অ্যাম্বুলেন্সের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। পরে চাই অং মারমা নামে চালক হিসেবে সরকারিভাবে কর্মরত আছেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি যোগদানের পর থেকে তার কর্তব্য কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন নিয়মিত। গুরুত্বপূর্ণ পদে চালকের অনুপস্থিতি কারণে সাধারণ রোগীদের সেবায় বিঘিœত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, সেলিম নামের ব্যক্তি সম্প্রতি হার্টঅ্যাটাক করলে মহল্লাবাসি হাসপাতালে নিয়ে আসে। ডাক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে রেফার করেন। দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে রোগী মৃত্যু হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজস্থলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি রোগীদের এখান থেকে স্থানান্তর করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চন্দ্রঘোনা বিভিন্ন হাসপাতালে। স্থানান্তরিত রোগীদের পরিবহনের জন্য ছুটতে হয় প্রাইভেট গাড়ির কাছে আর সুযোগ বুঝে প্রাইভেট গাড়িগুলো সরকারি ভাড়ার তুলনায় চারগুন বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয়। বিপদে পড়ে বেশি টাকা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়মিত রোগী পরিবহন করেন রোগীর স্বজনরা। বাঙ্গালহালিয়া গ্রামের এক হতদরিদ্র মহিদুল নামে যুবক জানান, সাম্প্রতিক সময়ে তার স্ত্রীকে রাতের বেলায় রাজস্থলী হাসপাতালে নিয়ে যায়। রোগীর সমস্যা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু মেডিকেলে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালকের অনুপস্থিতে মাইক্রো করে আমাকে যেতে হয়। এতে টাকা বেশি লাগলেও মাইক্রোবাসটি ম্যানেজ করতে চরম ভোগান্তি পেতে হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুইহলা অং মারমা বলেন, প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বুল্যান্সের চালক পদটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। ওই পদে থাকা লোকটি নিয়মিত ফাঁকি দিচ্ছেন। লোকটি প্রতিনিয়ত মদ্যপান অবস্থায় থাকেন। তাকে আমি কয়েকবার শোকজ করেছি। পাশাপাশি তার কর্মস্থলে অনুপস্থিতি ও ফাঁকিবাজির তথ্য জানিয়ে শাস্তিমূলক বদলির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জেলা পরিষদ, জেলা সিভিল সার্জন অফিসে অনেক লিখিত অভিযোগ করছি। দুঃখের বিষয় অজ্ঞাত কারণে সে বহাল তবিয়তে আছে এখনো। তিনি আরো বলেন, শাস্তি হিসেবে চালক চাই অং মারমার এক মাসের বেতন বন্ধ রাখার জন্য অফিস সহকারীকে নির্দেশ প্রদান করেছি। তবুও সে অদৃশ্য খুঁটির জোরে রাজস্থলী সদর হাসপাতালে ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম করে যাচ্ছে। ফলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত রাজস্থলী উপজেলার রোগীরা শান্তি পাবেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ