Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা খেয়া নৌকা

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৪:০০ পিএম

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার-ছাতক এই দুই উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষজনের একমাত্র ভরসা শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষায় নৌকা। দেশ বর্তমানে ডিজিটাল উন্নয়নের ধারায় স্মপৃক্ত হলেও একটি সেতু কিংবা ব্রিজের অভাবে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এই জনপদের জীবনমান।

বলছিলাম সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজর সংসদীয় আসনের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি খরস্রোতা চেলানদীর কথা। যেখানে রয়েছে বালু পাথর বেষ্টিত হাজার হাজার কোটি টাকার প্রাকৃতিক সম্পদ, এই নদীর দুই তীরের লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর শুকনো মৌসুমে সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়েই চলাচল করে আসছে। একটি সেতু কিংবা ব্রিজের প্রয়োজন এই অঞ্চলের মানুষের এখন সময়ের দাবি। চেলা নদীর পূর্ব দিকে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কয়েকটি এলাকা, পশ্চিমে দোয়ারাবাজারসহ সুনামগঞ্জ জেলা অবস্থিত। এর মাঝখানে বহমান চেলানদী।

চেলানদীর ঘাট দিয়ে সিলেটের বাণিজ্য বন্দর কোম্পানিগঞ্জ, ভোলাগঞ্জে পাথর কুড়তে আসেন ময়মনসিংহের নেত্রকোনা, কলমাকান্দা ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, বিশম্ভপুরসহ কয়েকটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। তাছাড়া, এই নদী পার হয়ে হাজার হাজার শ্রমিক যেতে হয় ভারত থেকে (ইমপোর্ট) আমদানিকৃত চুনাপাথরের ৩টি পয়েন্ট। যেখানে থেকে সরকার প্রতিবছর রাজস্ব পাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। চেলা নদীর বালুমহাল থেকে ও প্রতিবছর সরকারের রাজস্ব পাচ্ছে কোটি কোটি টাকা।দেশ বর্তমানে ডিজিটাল উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত হলেও একটি সেতু কিংবা ব্রিজের অভাবে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এই জনপদের জীবন মান। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। নদী পারাপারের সুব্যবস্থা না থাকায়। বালু পাথর ব্যবসায়ীরা লাভের চেয়ে ক্ষতির দিকটায় বেশি দেখছে। এই অঞ্চলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। যার কারণে প্রতিনিয়তই থমকে যাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষক, ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষের অর্থনৈতিক চাকা। প্রতিদিন এই ঘাট দিয়ে ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ চলাচল করে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়াও শত শত শিক্ষার্থীদের এই ঘাট দিয়ে চলাচল করতে হয়। চেলা নদীর এই খেয়াঘাট থেকেও সরকারি রাজস্ব খাতে প্রতিবছর কয়েক লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে।

সোনালী চেলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজের অভাবে যুগ যুগ ধরে তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি তাদের মাঝে দাবি উঠেছে একটি ব্রিজ নির্মাণের। এতে বদলে যাবে গ্রামগুলোর চিত্র। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারবে শিক্ষার্থীরা। নতুন করে স্বপ্ন দেখবে ছাতক ও দোয়ারাবাজার এই দুই উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সুবিধাবঞ্চিত ওই এলাকার মানুষজন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ জানান, বর্ষাকালে বেশিরভাগ সময়ে এ নদীতে পানি থাকে কানায় কানায়। পাহাড়ি ঢলে ক’দিন বন্ধ থাকে গ্রামবাসীদের চলাচল। অবরোদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না ছাত্রছাত্রীরা। প্রতিবেশি গ্রামের লোকজনেরাও যেতে পারে না ওইসব গ্রামে। কেউ অসুস্থ্য হলে চিকিৎসা করাতে পারে না। ফলে অনেক দরিদ্র পরিবারই দিন কাটান নিদারুণ কষ্টে। আবার এখানকার উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী, ফলমূল ও শাকসবজি বিক্রিতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন তারা। এখানে আসা লোকজনদেরও পোহাতে হচ্ছে মারাত্মক সমস্যা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ