পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : অন্তহীন দুর্ভোগ ভোগান্তিতে রাজধানীর বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সমাধানহীন সমস্যাদির পাহাড় জমে জমে রীতিমত নাগরিক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে, চলছে বিপর্যস্ত জীবনযাত্রা। শীতের দিনেও লোডশেডিং, গ্যাস স্বল্পতায় টিমটিম করে জ্বলে চুলা, দুঃসহ যানজটে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা থাকছে অবরুদ্ধ। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনার সাথে রাস্তার পাশে ডাস্টবিনে জমে থাকা ময়লার স্তুপের উৎকট দুর্গন্ধের ছড়াছড়ি। আছে খোড়াখুড়ির যন্ত্রণাও। রামপুরা এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ বিভাগের (ডিপিডিসি) ভূগর্ভস্থ ক্যাবল লাইনের কাজ চলছে। একই এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইনের কাজ শুরু হবে। সে জন্য বিশাল আকৃতির স্যুয়ারেজ পাইপ এনে রাস্তার উপর রাখা হয়েছে। তাতে ব্যস্ত রাস্তার অর্ধেক বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, এভাবে রাস্তা দখল করে রাখলে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। এতে করে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছে জনগণ।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন যাতায়াতে হয়রানি ও ভোগান্তি। সাম্প্রতিক সময়ে নগরীর যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙ্গাচুরা রাস্তাঘাট, মেরামতের নামে নগর জুড়ে রাস্তার খোড়াখুড়ি, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার নির্মাণের ধকল, যাত্রী তুলনায় যানবাহনের তীব্র সংকট, ভাড়া নিয়ে নিত্য হট্টগোলসহ নানা কারণেই যাত্রী-পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দিনভর এমনকি কোথাও কোথাও গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তা-মোড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকছেন মানুষজন। ভোগান্তির প্রধান উপাদান হয়ে উঠেছে রাস্তা খোড়াখুড়ি। ভুক্তভোগিদের মতে, একবার কোনো রাস্তা বা ড্রেন খোঁড়া হলে তা বছরের আগে মেরামত করা হয় না। ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে হয় দীর্ঘদিন।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্যস্ত এলাকাতে রাতদিন যানজট লেগেই থাকে। বিশেষ করে রামপুরা, মালিবাগ, পল্টন, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরী, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, গ্রঅন রোড, কাওরানবাজার, আসাদগেইট, মহাখালী, মতিঝিল, গুলিস্তান, কল্যাণপুর, আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী, নিউমার্কেট, কাকরাইল, আরামবাগ এলাকায় দিনে রাতে একই চিত্র। ছুটির দিনেও এসব এলাকায় দীর্ঘ যানজট থাকে। অনেকের মতে, এখন ছুটির দিনে রাজধানীতে যানজট অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ভয়াবহ। কারণ ছুটির দিনে ফাঁকা থাকবে এই ভেবে অনেকেই বের হন। রামপুরা এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে ভয়াবহ যানজটে অতিষ্ঠ ওই এলাকা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা। সরেজমিনে রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টিভি ভবনের সামনের রাস্তার একদিকে চলছে খোড়াখুড়ির কাজ। বিদ্যুৎ বিভাগের ভূগর্ভস্থ ক্যাবল লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। আবার একই সাথে রাস্তার উপর বিশালাকৃতির স্যুয়ারেজ পাইপ রাখা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্যাহ ইনকিলাবকে জানান, খুব শিগগিরি রামপুরা এলাকায় স্যুয়ারেজ লাইনের কাজ শুরু করবেক ডিএনসিসি। সে কারণে স্যুয়ারেজ পাইপগুলো ওই এলাকায় রাখা হয়েছে। কাজ শুরু হওয়ার পর দুই মাসের মধ্যে তা শেষ হবে বলে জানান এই প্রকৌশলী। এই দুইয়ে মিলে রাস্তার অর্ধেক অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে করে সায়েদাবাদ থেকে বিশ্বরোড এবং মতিঝিল, মালিবাগ হয়ে যে সব যানবাহন রামপুরার দিকে যাচ্ছে সেগুলো আটকা পড়ছে। কখনও কখনও এই যানজট ঘণ্টাব্যাপি স্থায়ী হয়ে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আবু ইউসুফ জানান, গুলশান-বাড্ডা এলাকার যানজট আগের তুলনায় কমেছে। রাস্তা সংস্কারের কারণে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে রামপুরা এলাকায় রাস্তা খোড়াখুড়ির জন্য যানজট হচ্ছে। জানতে চাইলে রামপুরা এলাকার একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, সন্ধ্যার পর রামপুরা এলাকায় যানজট এতোটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে গাড়িগুলো আর নড়তেই চায় না। তখন ট্রাফিক পুলিশও অসহায় হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগিদের মতে, শুধু রামপুরা নয়, দুঃসহ যানজটে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে; স্থবির হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা। প্রধান প্রধান সড়ক জুড়েই ভয়াবহ জট লেগেই থাকছে, মাঝে মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ছে অলিগলি মহল্লাতেও। নগরীর একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাতায়াতে পুরোটা দিন লেগে যায়। বাস-মিনিবাস, প্রাইভেটকার, রিকশা ব্যবহার করেও কতক্ষণে গন্তব্যে পৌঁছবেন তা কেউ হলফ করে বলতে পারেন না। রীতিমত অনিশ্চিত যাত্রা। বাস্তবে রাস্তার তুলনায় গাড়ি বেশি এবং গাড়ির তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হওয়ার কারণেই নগরীতে যানজট সামাল দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির দাপট আবার বেড়ে যাওয়ায় যানজট নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ভাঙ্গাচুরা, খানা-খন্দকে পূর্ণ রাস্তাঘাট এখন রাজধানীর অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসা-বাড়ি থেকে গেট গলিয়ে বেরিয়ে পথে পা রাখার যেন উপায় নেই। নানা সেবা সংস্থার রাস্তা কাটাকাটি, সড়ক মেরামতের জন্য পিচ-সুরকি ভেঙ্গেচুরে রাখা, চারদিকে পানি জমে কাদা-আবর্জনায় পিচ্ছিল হয়ে আছে রাস্তাঘাট। বাড্ডা-ভাটারা এলাকার অনেক রাস্তা দিনের পর দিন একহাটু নোংরা পানিতে নিমজ্জিত থাকায় কোন্টা রাস্তা, কোন্টা ড্রেন-নর্দমা তা মানুষ ভুলে যেতে বসেছে। প্রধান প্রধান সড়কের যত্রতত্র শত শত গাড়ির এলোপাতাড়ি পার্কিংসহ যথেচ্ছা ব্যবহার চলছে। অত্যাধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা, বিভিন্ন সড়ককে ওয়ানওয়ে করা, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের ব্যাপক কর্মকান্ড বিদ্যমান যানজটের ভয়াবহতার সামনে যেন মুখ থুবরে পড়েছে। একজন ভুক্তভোগির মতে, ট্রাফিক পুলিশ রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ না করে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করতে ব্যস্ত থাকে। তারা এ্যাকটিভ হলে যানজটের ভয়াবহতা অনেকটাই কমতো। ইদানিং আবার সাধারণ গাড়ির দিকে লক্ষ্য না করে দামি গাড়ির দিকে নজর তাদের। এতে করে সাধারণ মানুষের সাথে উচ্চবিত্তরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যদিও ট্রাফিক পুলিশের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ ধরণের কোনো নির্দেশনা ট্রাফিক পুলিশকে দেয়া হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।