বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এক বছর মেয়াদের চার কিলোমিটার একটি রাস্তার কাজ চার বছরেও শেষ করতে পারলোনা পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর(সওজ)। সড়কটি হল নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি) কৃত্তিপাশা সড়ক। ২০১৯ সালে রাস্তার কার্যাদেশ পায় মেসার্স এম এম বিল্ডার্স। কার্যাদেশ পেয়ে রাস্তা খুড়ে এলোমেলো করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ২০২০ সালে জুন মাসে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল তাদের। রাস্তার কয়েকটি কালভার্ট ও ব্রীজ এর কাজ সম্পন্ন করে বর্তমানে বেওয়ারিশভাবে কাজ ফেলে রেখেছেন তারা। তবে তাদের দাবী জমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় রাস্তাটি ফেলে রেখেছেন তারা। তাই বর্তমানে ওই রাস্তা এখন সর্বদাই থাকে ধুলোবালিতে একাকার। রাস্তা দিয়ে চলাচল করা পথচারী ও যানবাহন চালক এবং যাত্রীদের জন্য যেন বিষফোড়া হয়ে দাড়িয়েছে রাস্তাটি। এক বছরের রাস্তার কাজ চার বছরেও শেষ না হওয়ায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ওই এলাকার ব্যবসা বানিজ্য। উপজেলা সদর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে সহজে চলছেনা কোন যানবাহন। তাই এলাকার মানুষ এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বর্তমানে রাস্তার ধুলোবালিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে গোটা এলাকা। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাস্তা দিয়ে চলাচলরত স্কুলগামী ছোট ছোট শিশুরা। প্রায়ই ঘটছে নানান দুর্ঘটনা।
রাস্তার কার্যাদেশ পাওয়া এম এম বিল্ডার্সের প্রকল্প ম্যানেজার মো: নাসরুল্লাহ বলেন, আমরা ২০১৯ সালে কাজটি পেয়ে ছিলাম। চার কিলো রাস্তার সাথে ওখানে ১৮টি কালভার্ট এবং চারটি ব্রীজের কাজ রাস্তার সাথে। কাজ পেয়ে আমরা কালভার্ট এবং ব্রীজগুলোর কাজ শুরু করি। রাস্তার কাজ শুরু করতেই শুরু হয় মহামারি করোনা। তাই তখন করোনার কারনে কাজ বন্ধ ছিল। পরে কাজের মেয়াদ বাড়লে রাস্তার ব্রীজের এপ্রোচ নামাতে দেখা দেয় ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা। পরে ব্রীজ এবং কালভার্টের বাকি কাজ সম্পন্ন করতেই রাস্তার কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই কাজ বন্ধ করে দেই আমরা। তিনি বলেন, শুনেছি ওই চার কিলো রাস্তার কাজ নতুন করে টেন্ডার হবে।
ওই ভাঙ্গা চোড়া এলোমেলো সড়ক দিয়ে চলাচলরত অটো চালক মো: নাসির বলেন, রাস্তাটি দিয়ে গাড়ী চালানো খুবই কষ্টকর। সারাদিন রাস্তায় ধুলোবালিতে একাকার থাকে। তখন বাতাসে উড়ো ধুলো আমাদের নাকে মুখে চোখে লেগেই থাকে। এতে আমাদের নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া ভাঙ্গা সড়কে গাড়ী চালাতে নানান সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়ক বিভাগের ওই রাস্তাটি স্বরূপকাঠি পৌরসভার আমিরহাজী বাড়ী হয়ে আমাদের জলাবাড়ী ইউনিয়নের পূর্বকামারকাঠি গ্রাম হয়ে একেবাড়ে ঝালকাঠি বের হয়েছে। রাস্তার কাজ শুরু করে আবার ফেলে রাখায় চার বছর ধরে আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একটি পরিস্কার করা শার্ট গায়ে দিয়ে ওই রাস্তা হয়ে আমরা উপজেলা সদরে যাওয়ার পথেই ধুলোবালিতে পুরো শার্ট সহ সারা শরীর ময়লায় টুইটুম্বর হয়ে যায়।
জলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মো: তৌহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির কাজ ফেলে রাখায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে আছেন। তিনি বলেন, যেহেতু রাস্তাটি সড়ক বিভাগের। তাই আমি উপজেলা সমন্বয় সভায় বলছিনা। ওখানে সড়ক বিভাগের কোন প্রতিনিধি থাকলে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনো জোড় অনুরোধ করতাম।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর (সওজ) এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি এখানে নুতন আসছি। তাই না জেনে কিছু বলতে পারবোনা। তবে, যতদূর জানি নতুন করে ওই রাস্তার টেন্ডার হবে।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: তানভীর আহমেদ-কে তার সরকারি মোবাইলফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সূত্রে জানাযায়, নেছারাবাদ কৃত্তিপাশা চার কিলোমিটার ওই সড়কের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৮ কোটি টাকা। যারমধ্য চার কিলো সড়ক এবং ১৮টি সেতু ও কালভার্টের কাজ ছিল। জমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং করোনার কারনে রাস্তার কাজ কিছু দিন বন্ধ থাকে। পরে কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুলাই মাসের মধ্য কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয় কাজ পাওয়া মেসার্স এম এম বিল্ডার্সকে। অথচ সেই থেকে পুরোধমে রাস্তার কাজ ফেলে রাখে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, যেহেতু বিষয়টি সড়ক বিভাগের। তাই এখান থেকে কিছু করা যাবেনা। বিষয়টি আমি সামনে জেলা সমন্বয় সভায় তুলবো। কারন ওখানে তাদের একজন প্রতিনিধি থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।