Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও পুলিশ সদস্যসহ আহত ২৫ কুমিল্লায় বিএনপি’র পদযাত্রায় পুলিশের গুলি

ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:৫৩ পিএম

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি উদ্যোগে আয়োজিত পদযাত্রায় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়েছে বলে জানা গেছে। এতে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামানসহ অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা ও দেবিদ্বার সীমান্তের খাদঘর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের কুমিল্লা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপির স্থানীয় নেতারা।

বিএনপির স্থানীয় নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে পাঁচ শতাধিক দলীয় নেতাকর্মী দেবিদ্বার ও চান্দিনা সীমান্তের খাদঘর এলাকায় সমবেত হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খাঁন সোহেল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মারুফ খন্দকার এবং বিএনপির উত্তর জেলা আহ্বায়ক আখতারুজ্জামানসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর জড়ো হয়ে যানবাহন চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পদযাত্রার প্রস্তুতি নেয়। এতে পুলিশ বাধা দিলে বিএনপি কর্মীরা বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চাইলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং পরে ৮ রাউন্ড শটগান ও ১৩ রাউন্ড রাবার বুলেটের গুলি চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপির নেতারা বলেন, গুলি ও লাঠিচার্জে বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে জসিম উদ্দিন, খোকন খান, আলমগীর হোসেন ও মো. সোহেল নামের চার যুবদল কর্মী চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অপর আহতদের কুমিল্লা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আহতদের মধ্যে আছেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান, চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আতিকুল আলম শাওন, সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ, চান্দিনা উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন, য্গ্মু আহ্বায়ক উজ্জ্বল, যুবদল নেতা আলমগীর হোসেন, দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের যুবদল নেতা খোকন খাঁন, বনকোট গ্রামের সোহেল। কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন, কুমিল্লা (উঃ) জেলা বিএনপি’র অর্থ সম্পাদক আজহার মেম্বার, কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম, কুমিল্লা (উঃ) জেলা যুবদল নেতা ভিপি শাহীন, কুমিল্লা (ঊঃ) জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বাবু, দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. রবিউল আউয়াল সাইফুল, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক অব্দুর রহমান, বিএনপি নেত্রী তাছলিমা বেগম, আলেয়া বেগম, রমজান হোসেনসহ আরও অন্তত ৪/৫ জন। আহতদের চান্দিনা, দেবীদ্বার, দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে আমরা দাউদকান্দির দড়ানিপাড়া এলাকায় জড়ো হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুল নবী সোহেল। পুলিশের বাঁধার মুখে সেখান থেকে আমরা ফিরে এসে গোমতা ইসহাকিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পদযাত্রা শুরু করি। এসময় পুলিশ এসে আমাদের বাঁধা দেয়। পুলিশের এমন ভূমিকায় যুবদল নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের সাথে বাক-বিতন্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এসময় পুলিশ এলোপাথারী গুলি বর্ষণ ও লাঠি চার্জ করে। এসময় চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতিসহ বিভিন্ন উপজেলার আরও অন্তত ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়।
আহত কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম বলেন, পুলিশের হামলায় তিনি ছাড়াও মহিলা দল নেত্রী তাছলিমা বেগম, আলেয়া বেগম মারাত্মক জখম হয়েছেন। তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ বিনা উস্কানিতে নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি চালিয়েছে। এতে তিনিসহ দলের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দীন খাঁন জানান, বিএনপি নেতারা পদযাত্রার নামে মহাসড়কে বেড়িক্যাট সৃষ্টি করে উশৃঙ্খলতা করছিল। এসময় চান্দিনা থানা পুলিশ ও দেবীদ্বারে ভানী ক্যাম্প পুলিশ তাদেরকে মহাসড়ক থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের উপর হামলা করে। চান্দিনা থানার দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ১৩ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে। তবে আহতদের অধিকাংশরাই পাশ্ববর্তী একটি কালভার্ট থেকে লাফিয়ে পড়ে এবং উত্তেজিত নেতা-কর্মীর পদদলিত হয়ে আহত হয়। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ