Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে রেলের ৪২৭ একর জমি বেদখল

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ের শহর। এখানে রেলওয়ের রয়েছে ৮শ’ একরের বেশি সম্পদ। ১৮৭০ সালে এখানে গড়ে তোলা হয় দেশের বৃহত্তম রেলকারখানা। তবে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সৈয়দপুরে সরকারি এ সেবা সংস্থার প্রায় ৪২৭ একর জমি বেদখল হয়ে গেছে।
স্থানীয় ভূমি অফিস ও রেলের কজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এ অনিয়ম ও বেদখলের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেলের ৮শ’ একর জমির মধ্যে ১১০ একরে ১৮৭০ সালে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা গড়ে তোলা হয়। অবশিষ্ট জমির মধ্যে রয়েছে রেলওয়ে অন্যান্য স্থাপনা ও রেলওয়ে কর্মচারীদের জন্য বসতবাড়ি। আর অব্যহৃত রয়েছে ৫৫ একর কৃষি জমি, ২১.৩৮ একর জলাশয়, ১ একর বাণিজ্যিক হিসেবে বরাদ্দ দেয়া জমি। এছাড়া সেবা সংস্থাটির ২৫.২৫ একর জমি পৌরসভার আওতায় আছে। তবে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত রেলওয়ের বাদবাকি জমি বেদখল হয়ে গেছে।
সম্প্রতি রেলওয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনার কমপ্লায়েন্স নীতিরক্ষা প্রতিবেদনে সব মিলিয়ে ৪২৭ একর জমি অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে যাওয়ার তথ্য ওঠে আসে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ফিল্ড কানুনগো ৭ নম্বর কাচারি সৈয়দপুর কার্যালয়ের অধীনে বিমানবন্দর সংলগ্ন নিচু কলোনি নামক স্থানে কলোনি নির্মাণের জন্য ১৯.২৪০০ একর অধিগ্রহণ করা হয়। যা ৩২টি সিএস দাগে রেলওয়ের রেকর্ডভুক্ত। কিন্তু ২০১২ থেকে ২০২২ সালে সেই জমির ১৫.২১৮৩ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। এর ফলে লাইসেন্স ফি বাবদ বার্ষিক দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। রেলের জমি দখল করে গড়ে উঠেছে স্থায়ী স্থাপনা।
এদিকে কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০০৬-এর নির্দেশনা পরিপালন না করা এবং অধিগ্রহণকৃত সব ভূমির স্বত্ব রেকর্ড সংরক্ষণ না করা, জমির সীমানা চিহ্নিত না করা, কৃষি, মৎস্য, বাণিজ্যিক প্রভৃতি জমির রেকর্ড সংরক্ষণ না করা এবং সব প্রকার জমির হিসাব রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ না করায় রেলের প্রকৃত জমির হিসাব সংরক্ষণে অনিয়ম হচ্ছে।
ইতোমধ্যে রেলওয়ের অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে ইতোমধ্যে ১৫ দশমিক ২১৮৩ একর জমি সিএস, এসএ, আরএস, বিএস জরিপের সময় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত ও নামজারি হয়েছে। এরসঙ্গে স্থানীয় ভূমি অফিস ও রেলের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ ওঠেছে।
রেলওয়ের কারিগরি পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও সৈয়দপুর কারখানা শাখার সভাপতি হবিবর রহমান হাবিব বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলভূমি সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে নামজারি করানো সম্ভব হতো না।’
ফিল্ড কানুনগো ৭ নম্বর কাচারি সৈয়দপুর কার্যালয়ের কানুনগো জিয়াউল হক বলেন, ‘জমি বেদখলের বিষয়ে রেলওয়ের পক্ষ থেকে অডিট বিভাগকে জানানো হয়েছে। রেলের ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় রেকর্ড সঙ্কোধনী মামলা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।’ সব খতিয়ান সংগ্রহ করে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ