Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিকটকে সেলিব্রেটি বানানোর প্রলোভনে তরুণীকে ভারতে পাচার করে হত্যা, ‘ঘাতক’সহ আটক ৩!

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৬:৩৭ পিএম

বিদেশে চাকরির ও টিকটকে সেলিব্রেটি বানানো প্রলোভনে টুম্পা নামে এক তরুণীকে ভারতে পাচার ও হত্যার অভিযোগে হত্যকারীসহ তিন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সদস্যরা শুক্রবার যশোর ও খুলনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের আটক করে। আটককৃতরা হলেন, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাসিন্দা আলী হোসেন (২০), খুলনা সদর থানার বাসিন্দা কুলসুম বেগম (৪৫) ও তার ছেলে আল-আমিন (১৯)। হত্যাকা-ের শিকার তরুণী টুম্পা (১৭) ঢাকার ডেমরা এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা টুম্পাকে পাচার ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। শনিবার দুপুরে র‌্যাব-৬ খুলনা ক্যাম্পে প্রেসব্রিফিং করে এই তথ্য জানানো হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন র‌্যাব-৬ খুলনার সিও লে. কর্নেল মোস্তাক আহমেদ।

র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার এম নাজিউর রহমান জানান, গ্রেফতার হওয়া কুলসুম বেগমের মেয়ে বৃষ্টি এবং জামাই যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাসিন্দা নবাব ভারতে বসবাস করে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীদের পাচার করে নিয়ে যায়। বৃষ্টি ও নবাবের সহযোগী কুলসুম বেগম ও তার ছেলে আল আমিন। এই চক্রের সদস্যদের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে ঢাকার ডেমরা এলাকার বাসিন্দা টুম্পাকে টিকটকে সেলিব্রেটি বানানো ও বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভনে দেয়।
প্রলোভনের ফাঁদে পড়লে ২০২১ সালে টুম্পাকে খুলনায় কুলসুম বেগমের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়া হয়। টুম্পাকে ভারতে একটি বাসায় আটকে রেখে ভারতের এনআইডি কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করানো হতো। এরপর বৃষ্টি ও নবাবের নির্দেশে আলী হোসেনের জিম্মায় অনৈতিক কাজ করার জন্য টুম্পাকে ২ মাস আটকে রাখা হয়েছিল এবং জোরপূর্বক আলী হোসেনের টিকটক ভিডিও বানানো হতো। পাশাপাশি ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো।
পরবর্তীতে টুম্পা পাচারকারীদের অনেক গোপন তথ্য জেনে যায় এবং তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দেশে আসার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব ও বৃষ্টির নির্দেশে গত ২৬ জানুয়ারি আলী হোসেন টুম্পাকে হত্যা করে। এরপর ভারতে টুম্পার লাশ উদ্ধার হলে গুজরাট পুলিশ ফোন করে টুম্পার বাবাকে জানায় যে, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য একটি ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমের বাবাকে জানানো হয় আসামি আলী হোসেন তার মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা র‌্যাব বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
লে. কমান্ডার এম নাজিউর রহমান আরো জানান, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর থেকেই র‌্যাব আসামিদের গ্রেফতাররের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং অভিযান অব্যাহত রাখে। র‌্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করে। এরপর শুক্রবার অভিযান চারিয়ে হত্যাকারী আলী হোসেন এবং পাচারকারী কুলসুম বেগম ও তার ছেলে আল-আমিনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা টুম্পাকে পাচার ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। টুম্পা পাচারের ঘটনায় ঢাকার ডেমরা থানায় মামলা হওয়ায় আসামিদের ডেমরা থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ