Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুমিল্লায় গাড়ি চোর চক্রের ১৮ সদস্য আটক, চোরাই ২৯ যানবাহন উদ্ধার চুরির পর পাল্টে যেতো গাড়ির আকৃতি-রং

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৬:৩৯ পিএম

একের পর এক গাড়ি চুরি করে প্রায় দশ বছর ধরে অভিনব পদ্ধতিতে গাড়ির রং-রূপ পরিবর্তন করে বিক্রি করে আসছিল অন্তত ২৫জনের একটি চোরাই সিন্ডিকেট। র‌্যাব-কুমিল্লার অভিযানে গাড়ি চোর চক্রের ১৮ সদস্য আটকের পর জানা গেছে তারা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কুমিল্লা নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ জাতীয় গাড়ি টার্গেট করে চুরি এবং আকৃতি-রং পরিবর্তন করে তা বিক্রি করতো ।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমিল্লা নগরীর শাকতলায় র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব- কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, রোববার রাতে রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা এলাকা ও বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি চোর চক্রের সক্রিয় ১৮ সদস্যকে আটক করা হয়। এসময় একটি কাভার্ডভ্যান, ২টি চোরাই মোটরসাইকেল, ২৬টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ অসংখ্য যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।

আটকরা হলো- গাড়ি চোর চক্রের মূল হোতা কুমিল্লা সদরের আড়াইওড়া গ্রামের মৃত মনোহর আলীর ছেলে কাউসার আলী খলিল, একই গ্রামের ওহাব কাজীর ছেলে মো. কাইয়ুম, মৃত দিদার বক্সের ছেলে জহির মিয়া, মুক্তার হোসেন মুন্নার ছেলে সাজিদ হোসেন, নগরীর ভাটপাড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে নাজমুল হোসাইন, বদরপুর গ্রামের মো. হোসেনের ছেলে পিয়াস,মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের হান্নান মিয়ার ছেলে জামশেদ হোসেন, সাইফুল আলম জাহাঙ্গীর, হৃদয় হাসান, শুক্কুর আলী, রিপন মিয়া ওরফে আবদুল আলিম, চান্দিনার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মোহর আলী ছেলে সাইফুল,আলআমিন, মজিদ, তাজুল ইসলাম, ওমর ফারুক, হারং গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে আবু কাউসার।

আটকদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা এবং বুড়িচং থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে র‌্যাবের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন গাড়ি চুরির অভিনব কৌশল তুলে ধরে জানান, চক্রটি মূলত তিনট গ্রুপের সমন্বয়ে গাড়ি চুরি, যন্ত্রাংশ আলাদা এবং বাজারজাত করতো। প্রথম গ্রæপের সদস্যরা যাত্রীবেশে কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে গাড়িগুলোকে টার্গেট বানাত। পরে সময় সুযোগ বুঝে চালককে জিম্মি করে অথবা চালকের অনুপস্থিতিতে সেগুলো চুরি করতো। চোরাই গাড়িগুলো যেন সহজে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য এক এলাকায় চুরি করে অন্য এলাকায় নিয়ে যেত। দ্বিতীয় গ্রæপেরর কাজ ছিল অন্য এলাকায় নিয়ে ওই এলাকার গ্যারেজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করে গাড়ির যন্ত্রাংশ কেটে, রং লাগিয়ে গাড়ি পরিবর্তন করে আকৃতি দিতে ভিন্ন গাড়িতে। এ গ্রুপের সদস্যরা প্রতি গাড়িতে জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পেত। তৃতীয় গ্রুপের কাজ ছিল গাড়িগুলো রং-আকৃতি পরিবর্তন হয়ে গেলে সেগুলো ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কিনে অন্য গ্রাহকের কাছে ৯০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা দামে বিক্রি করতো। এ চক্রটি তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে গাড়ী চুরি ও চোরাই ব্যবসা করে আসছে।

প্রেসব্রিফিংয়ে গাড়ি চোর চক্রটির সন্ধান প্রসঙ্গে কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন বলেন, শনিবার কুমিল্লা সদরের পালপাড়া এলাকার খলিলের গ্যারেজে একটি চোরাই কাভার্ডভ্যান রয়েছে এমন তথ্য পায় র‌্যাব। পরে ওই গ্যারেজে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। পরদিন রোববার রাতে কাভার্ডভ্যানটি কেটে যন্ত্রাংশ আলাদা করার সময় চক্রের মূল হোতা গ্যারেজ মালিক খলিলসহ আটজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই রাতেই কুমিল্লা শহর ও শহরতলীর এবং বুড়িচংয়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও দশ জনকে আটক করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে গাড়ি চুরি ও বিক্রির অভিনব কৌশল-পদ্ধতি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ