বাংলাদেশের জনজীবন ও অর্থনীতিতে ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার ওপর নির্মিত ভারতের ফারাক্কা বাঁধের প্রতিক্রিয়া যেমন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
এম মাফতুন আহম্মেদ
জগৎ খ্যাত কবি ওমর খৈয়ম বলেছিলেন, ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু একখানা বই সব সময় অনন্ত-যৌবনাÑ যদি তেমন বই হয়।’
সৈয়দ মুজতবা আলী ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লিখেছেনÑ ‘বই কিনে কেউ তো কখনো দেউলে হয়নি। বই কেনার বাজেট যদি আপনি তিনগুণও বাড়িয়ে দেন, তবুও তো আপনার দেউলে হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম যে বাণী হযরত মুহাম্মদ (সা.) শুনতে পেয়েছিলেন তাতে আছে ‘আল্লামা বিল কলমি’ অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন, ‘কলমের মাধ্যমে’। আর কলমের আশ্রয় তো পুস্তকে। পবিত্র কোরআন মাজিদে আরও বলা হয়েছে, ‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। পড়, আর তোমার রব মহামহিম’ (সূরা আলাক :১-৩)।
নবী করিম (সা.) এক হাদিসে উল্লেখ করেছেন, ‘ঘণ্টাখানেকের জ্ঞান সাধনা সমগ্র রজনীর ইবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ’। এখানে জ্ঞান সাধনা বলতে মূলত বই পড়ার ওপর সর্বাধিক তাগিদ দেয়া হয়েছে। সনাতন ধর্মের কঠোপনিষদের ৪ নং শ্লোকে লেখা হয়েছে ‘দুরমেতে বিপরীতে বিষূচী অবিদ্যা যা চ বিদ্যেতি জ্ঞাতা’ অর্থাৎ-বিদ্যা বলতে এখানে জ্ঞানকে বুঝানো হয়েছে। যে জ্ঞান মানুষের চরম লক্ষ্য। আর এই চরম লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে বিদ্যা শিক্ষা অর্থাৎ বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে বাইবেল শব্দের অর্থই হলো ‘বই’।
আল্লামা শেখ সা’দী বলেন, ‘জ্ঞানের জন্য তুমি মোমের মতো গলে যাও। কারণ জ্ঞান ছাড়া তুমি খোদাকে চিনতে পারবে না।’ বারট্রান্ড রাসেল বলেছেন, ‘সংসারে জ্বালা-যন্ত্রণা এড়ানোর প্রধান উপায় হচ্ছে, মনের ভেতর আপন ভুবন সৃষ্টি করে নেওয়া এবং বিপদকালে তার ভেতর ডুব দেওয়া। যে যত বেশি ভুবন সৃষ্টি করতে পারে, ভবযন্ত্রণা এড়ানোর ক্ষমতা তার ততই বেশি হয়।’
আসলে চেতনার বিপ্লবে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। একজন সৃষ্টিশীল মানুষ পৃথিবীতে বইয়ের বিকল্প কিছুই চিন্তা করতে পারেন না। সমাজ বদলাতে হলে বই পড়ার বিকল্প নেই। বই মানুষের জীবন সঙ্গী। বই অবসরের প্রিয় বন্ধু। বই পাঠ মানুষকে সত্য পথে চলতে, মানবতার কল্যাণে অনুপ্রাণিত করে। বই সুখের সময় মানুষের পাশে থাকে। দুঃখের সময় মনোবল বাড়াতে সাহায্য করে। যে লোকটি বইকে নিত্যদিনের সঙ্গী বানিয়েছে, সেই লোকটি সমাজের অন্য ১০ জন মানুষ চেয়ে ভিন্ন। তার মন-মনন আলাদা। চিন্তাচেতনা ভিন্ন। সহিষ্ণুতা আর বিশ্বাসের ধরনটাও আলাদা। ইচ্ছা করলেই বিবেক বিক্রি করে তিনি নষ্ট পথে ধাবিত হতে পারেন না। এক কথায় যিনি জ্ঞানী তিনি কখনই সমাজ বিপর্যয়ী কাজে অংশ নিতে পারেন না। একজন পাঠক মাত্রই জ্ঞানের সাধক।
আদিকাল থেকে তাই বইয়ের প্রতি এত কদর, এত ভালোবাসা। এক সময় লাইব্রেরিগুলোতে পাঠকের উপচেপড়া ভিড় লেগে থাকত। যদিও এখন অধিকাংশ লাইব্রেরি পাঠকশূন্য। প্রযুক্তির কারণে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ সাইটের মোহ আর অনলাইনে পাঠ সামগ্রীর প্রাচুর্যে পাঠক এখন কিছুটা বইবিমুখ। কিন্তু পাঠক হ্রাসের ভিন্ন কারণও রয়েছে। আর্থিক দৈন্যতা, মেধার যথার্থই মূল্যায়ন না করা, জ্ঞানী-গুণীর প্রতি শ্রদ্ধা না করা। মানুষের বদ্ধমূল ধারণা পুঁজিবাদী এই সমাজ ব্যবস্থায় বই পড়ে কী হবে? অধিকাংশই জ্ঞান অর্জনের চেয়ে অর্থ রোজগারে থাকেন অভ্যস্ত। তাই বই পড়া থেকে অনেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। পুঁজিবাদী এই সমাজ ব্যবস্থায় অনেকে শিল্পপতি, আঙ্গুল ফুলে হঠাৎ ধনী হয়েছেন। তাদের ধারণা বই পড়ে কী হবে? পৃথিবী তো টাকার গোলাম। টাকার কাছে হেরে যাচ্ছে মেধা-মনন আর সততা। টাকা হলে এই যুগে হাতের কাছে সব মেলে।
এক সময়ে সব পেশার মানুষ কম-বেশি বইয়ের ভুবনে ডুবুরির মতো ডুবে থাকতেন। যান্ত্রিক সভ্যতার এই যুগে এখন তেমন কেউ আর বই পড়তে চান না। বিশেষ করে রাজনীতিকরা প্রচুর বই পড়তেন। বড় রাজনীতিক হতেন। দলের তাত্ত্বিক নেতা হিসেবে পরিচিত হতেন। সারা পৃথিবীর খোঁজখবর রাখতেন। জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করতেন। প্রত্যেক রাজনীতিকের ব্যক্তিগত একটি লাইব্রেরি ছিল। ছিল তাদের চমৎকার সংগ্রহশালা। তারা রাজনীতি করতেন, পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতেন। আর দিন-রাতের নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট সময়ে পড়াশোনা করতেন। নানা বিষয়ে গবেষণা করতেন।
আর এখন! স্বাধীনতা-উত্তর রাজনীতিকদের বড় একটি অংশ বই পড়েন না। তারা বই পড়বেন বা কেন? কারণ রাজনীতিতে এখন আর মেধার তেমন প্রয়োজন হয় না। পেশি আর কালো টাকা এ দু’য়ের মিলন হলেই যথেষ্ট। তিনি ভালোভাবে জানেন, মেধা দিয়ে রাজনীতি করে নেতা হননি। গুণীর মর্যাদা পাননি। তিনি দেশের হর্তা-কর্তা হয়েছেন বটে; তবে কালো টাকার বিনিময়ে। বড় নেতা হয়েছেন পেশিশক্তি প্রদর্শন করে। কেন তিনি বই পড়বেন? কেন অযথা সময় নষ্ট করবেন? এই চরিত্র কী শুধু রাজনীতিকদের বেলায়? সর্বত্র পেশায় একই দুরবস্থা। তবে একটু পার্থক্য আছে। কম আর বেশি।
আইনজীবীরা সমাজের এক একজন সম্মানিত ব্যক্তি। এক সময় এই বিজ্ঞ আইনজীবীরা সকাল-সন্ধ্যা বই পড়তেন। আইনের নিত্য নতুন বই সংগ্রহ করতেন। দেশ-বিদেশের আইনের জার্নাল পড়তেন। এখন আর এসব বই পড়া তেমন একটা লাগে না। অনেকের ধারণা, গতানুগতিক দুই লাইন বুলি ছাড়লে অনেক বিজ্ঞ বিচারক সাহেবরা মেরিটে না গিয়ে জামিন দিয়ে দেন। আসলে এখন মক্কেলের নজরে আইনজীবী হয়ে গেছেন দুই ধরনের। জামিনের আইনজীবী, আর বিচারিক আইনজীবী। সমাজ বা বিচার প্রেক্ষাপট এমন হয়ে গেছে যে, জামিনের আইনজীবীদের এখন বই পড়া লাগে না। কারণ তারা অনেকে ফায়দাবাজ, রাজনৈতিক মতলববাজ। এক কথায় ‘লাইন জানা’ উকিল।
শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। সমাজের সবচেয়ে একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তারা এক সময় বই পড়তেন। কোথায় হারিয়ে গেল সেই আদর্শ? কোথায় আজ সেই আদর্শ সুুশিক্ষক? তারা এক সময় সৃষ্টিশীল বই লিখতেন। এখন যে লিখছেন না তা কিন্তু নয়। তবে এসব বইয়ের মান অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ। শুধুমাত্র বাণিজ্যকরণের উদ্দেশ্যে লিখিত অধিকাংশ বই। এখন তারা যে মানুষ গড়ার কারিগর এটা বেমালুম ভুলে গেছেন অনেকে। কোচিং বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার লোভে বই পড়া ভুলে যান। দুর্নীতির সাগরে অনেকে হাবুডুবু খাচ্ছেন। নিজের মেধা যোগ্যতাকে অন্যায় অসত্যের কাছে বিকিয়ে দিচ্ছেন। স্বাতন্ত্র্যতা ব্যক্তি মর্যাদাকে ভুলে গেছেন। শিক্ষক যে মানুষ গড়ার কারিগর এই অতীত ঐতিহ্যকে তারা ম্লান করে দিচ্ছেন। এসব দুরবস্থা দেখে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে একবার প্রশ্ন তুলেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি ছাত্র-শিক্ষক প্রত্যেকের সর্বত্র অবক্ষয়ের কথাও তুলে ধরেন।
গণমাধ্যম হলো, জাতির চতুর্থ স্তম্ভ। তাই এক সময় সাংবাদিকদের মনে করা হতো সারা পৃথিবী সম্পর্কে গভীর ধারণা সম্পন্ন মানুষ। আর এখন অনেকে বলেন সহজ পেশা সাংবাদিকতা। পড়াশোনা লাগে না। প্রযুক্তির এই যুগে একজন রিপোর্ট লিখলে অন্যজনের জন্য যথেষ্ট। তাদের গবেষণা লাগে না, পরিশ্রম করা লাগে না, পড়াশোনা করা লাগে না। আর এক সময় এই পেশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। মেধার লড়াই ছিল। পরস্পর তারা জ্ঞানভিত্তিক আলোচনা করতেন। এখন ডিজিটাল যুগ। ব্যস্ততার যুগ। এখন ঘরে ঘরে ইন্টারনেট। সাংবাদিকরা কেন গবেষণা করবেন? কেন পড়বেন? সাংবাদিকরা এক সময় জনমত গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতেন। কলকাতার ‘আনন্দ বাজার’ পত্রিকায় রিপোর্ট বের হলে ঢাকার ‘আজাদ’ পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে গঠনমূলকভাবে সমালোচনা হতো। লেখার মধ্যে তথ্যের সমাহার ছিল। এখন আর নেই। মেধার প্রতিযোগিতা নেই। জ্ঞান অন্বেষণে এখন আর সাংবাদিকদের অনেকে বই পড়েন না। কোনো লাইব্রেরি বা গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানে ধরনা দেয়া লাগে না। কেন বই পড়বেন, কোন প্রয়োজনে? কার স্বার্থে? কারণ এতে তো লাভ নেই। সত্যিকারের সাংবাদিকতা অলাভজনক একটি পেশা। তবে সবাই যে গা হেলিয়ে-দুলিয়ে চলছেন তা কিন্তু নয়। একটি মহল পড়াশোনা করছেন। গবেষণা করছেন। জাতিকে নিয়ে ভাবছেন। তবে তুলনায় খুবই স্বল্প। অবশ্যই এ পেশায় বই না পড়ার কারণ বিবিধ। এই পেশায় অর্থ নেই। তাই অনেকে ভাবেন বই পড়ে কী হবে? সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই না। অর্থের অভাবে এখন অনেক সাংবাদিক বিজ্ঞাপন সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন। শুধু কিছু কমিশন পাওয়ার আশায়। অথচ এটা কোনো সাংবাদিকের দায়িত্ব নয়। দায়িত্ব বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মচারীদের।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ধরনের ৮৫ হাজারের বেশি বই আছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নাল-সাময়িকী আছে। পারতপক্ষে সে মুখো হন না সংসদ সদস্যরা। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দশম সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যই একবারের জন্যও যাননি তাদের জন্য করা বিস্তৃত পরিসরের সুসজ্জিত এই গ্রন্থাগারে। আর যারা গেছেন তাদের অনেকেই চলে গেছেন পত্রিকা পড়েই। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি যাত্রা শুরুর পর দশম সংসদ মেয়াদের প্রায় অর্ধেক পার করতে চললেও এখন পর্যন্ত গ্রন্থাগারে গিয়েছেন ১১২ জন সংসদ সদস্য। আর একবারের জন্য যাননি ২৩৮ জন। গ্রন্থাগারে যাওয়া সংসদ সদস্যদের মধ্যে অর্ধেকেরও কম গিয়েছেন একাধিকবার। অনেকেই একদিন গিয়ে আর যাননি। সংসদ সচিবালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর আগস্ট মাস পর্যন্ত সংসদ গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়েছেন ৫৩ জন। গ্রন্থাগারে যারা এসেছেন তাদের অনেকেই শুধু পত্রিকা পড়ে চলে গেছেন। অনেকে মাত্র একদিন এসেছেন। আমাদের সংসদ সদস্যদের একটা বড় অংশেরই ক্যারিয়ার হিসেবে পলিটিক্সে নেই। ক্যারিয়ার পলিটিশিয়ানরা ফুল টাইম রাজনীতি করেন, আর আমাদের এখানে পার্টটাইম। সে জন্য বই পড়ে সময় নষ্ট করার মতো সময় তাদের হাতে নেই।
সমাজ অনেকটা অন্ধকারে ডুবে আছে। এটা স্থায়ী হতে পারে না, একদিন আলোয় উদ্ভাসিত হবেই হবে। বই পড়ে মানুষ জ্ঞানী হয়, তার মধ্যে প্রকৃত মনুষ্য গুণাবলী তৈরি হয়। তাই আবেগ নয়, প্রচলিত সামাজিক অবস্থান থেকে আপনি যতই বিমুখ হন না কেন প্রতিদিন আপনাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও বই পড়তে হবে। এ ব্যাপারে প্রতিদিন কিছু সময় বরাদ্দ করতে হবে। মনে রাখবেন, একটি সৃষ্টিশীল পৃথিবী বিনির্মাণে বইয়ের বিকল্প কিছুই নেই।
একজন আরব প-িতের উদ্ধৃতি দিয়ে সৈয়দ মুজতবা আলী বোঝাতে চেয়েছেন, ‘ধনীরা বলে, পয়সা কামানো দুনিয়াতে সবচেয়ে কঠিন কর্ম। কিন্তু জ্ঞানীরা বলেন, না জ্ঞানার্জন সবচেয়ে শক্ত কাজ। এখন প্রশ্ন কার দাবিটা ঠিক, ধনীর না জ্ঞানীর? আমি নিজে জ্ঞানের সন্ধানে ফিরি, কাজেই আমার পক্ষে নিরপেক্ষ হওয়া কঠিন। তবে একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করেছি, সেইটে আমি বিচক্ষণ জনের চক্ষুগোচর করতে চাই। ধনীর মেহনতের ফল হলো টাকা। সে ফল যদি কেউ জ্ঞানীর হাতে তুলে দেয়, তবে তিনি সেটা পরামানন্দে কাজে লাগান এবং শুধু তাই নয়, অধিকাংশ সময়ে দেখা যায়, জ্ঞানীরা পয়সা পেলে খরচ করতে পারেন ধনীদের চেয়ে অনেক ভালো পথে, উত্তম পদ্ধতিতে। পক্ষান্তরে, জ্ঞানচর্চার ফল সঞ্চিত থাকে পুস্তকরাজিতে এবং সে ফল ধনীদের হাতে গায়ে পড়ে তুলে ধরলেও তারা তার ব্যবহার করতে জানে না।বই পড়তে পারে না’। অতএব প্রমাণ হলো জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়ে মহত্তর। আসলে ধন সাময়িক মাত্র। নশ্বর এই পৃথিবীতে প্রকৃত জ্ঞানী-গুণীরা চিরদিন অমর হয়ে থাকবেন এবং আছেন।
তাই আসুন প্রতিদিন একটি করে সৃজনশীল বই পড়ি। ফিরে যাই জ্ঞানের ভুবনে। গড়ে তুলি জ্ঞানভিত্তিক একটি সমাজ ব্যবস্থা। সবাই মিলে পাড়ায় পাড়ায় একটি করে লাইব্রেরি গড়ে তুলি। পাঠ্যাভাসে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করি। জ্ঞানের মশাল প্রজ্বলিত করার দৃঢ় প্রত্যয়ে-‘এসো বই পড়ি-দেশ গড়ি’। এই স্লোগানকে সামনে রেখে বইকে আমৃত্যু সাথী করে রাখি। প্রিয়জনকে উপহার হিসেবে একটি বই প্রদান করি। জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত জাতিই পৃথিবীতে আজ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। মনে রাখতে হবে, বইবিমুখ জাতি কখনো জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতি সাধন করতে পারে না। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা ছাড়া একটি সমাজ স্থায়ী হতে পারে না। বই না পড়লে একটি দেশে জ্ঞানী-গুণীর সমাবেশ ঘটে না। আর একটি দেশে গুণী না থাকলে দেশও সঠিক পথে চলে না।
লেখক : আইনজীবী ও খুলনা থেকে প্রকাশিত আজাদ বার্তা পত্রিকার সম্পাদক
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।