Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রামপালের বিদ্যুৎ ফের জাতীয় গ্রিডে

সংবাদ সম্মেলনে বিআইএফপিসিএল প্রকল্প পরিচালক

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৫ এএম

কয়লা-সংকটের কারণে টানা এক মাস বন্ধ থাকার পর ফের উৎপাদন শুরু করেছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। উৎপাদন শুরুর পরই কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। কয়লা-সংকটের কারণে গত ১৪ জানুয়ারি প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) প্রকল্প পরিচালক সুভাষ কুমার পান্ডে। তিনি বলেন, কয়লা আমদানির জটিলতা সমাধান হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত কয়লা আসবে ও উৎপাদনও নিয়মিত হবে। ৫৫ হাজার টন কয়লা দুচার দিনের মধ্যেই চলে আসবে। গত বুধবার রাত ১২টার দিকে প্রথম ইউনিটে উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে ৩০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে। তিনি বলেন, সব বিষয় চিন্তা করে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নেই। বিআইএফপিসিএলের উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, কয়লা আমদানিতে যে জটিলতা ছিল তা এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত উৎপাদন করা সম্ভব হবে। আমরা বন্ধ হওয়া প্রথম ইউনিট থেকে আবারও উৎপাদন শুরু করেছি।
তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে জাহাজ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়তে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। একটি ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন ৫ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়। সেই অনুযায়ী ৩০ হাজার টন কয়লা দিয়ে ছয় দিন একটি ইউনিট চালানো যাবে। পরে ৫০ হাজার টন কয়লা এলে তা দিয়ে কেন্দ্রটি আরও ১০ দিন চলবে।’ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, কয়লা সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ উৎপাদন শুরু করেছে। উৎপাদন বন্ধ হওয়ার ২৬ দিন পর ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে একটি বিদেশি জাহাজ। এই কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আনা হয়। ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলায় আসছে। কেন্দ্রটির কয়লা মজুদের সক্ষমতা রয়েছে তিন মাসের। নিয়ম অনুযায়ী, এক মাসের কয়লা মজুদ রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ডলার-সংকটে এতদিন কয়লার কোনো মজুদ ছিল না। এদিকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদনে শুরুর প্রক্রিয়া চলাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
গত ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রমাপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ