Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে বঙ্গোপসাগরে অল্পের জন্য প্রাণে বাচলো ২৪০ পর্যটক

দুলছিল লক্করঝক্কর এমভি পারিজাত

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২:১৬ পিএম

.পিটনেসবিহীন জাহাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে চলাচলকারী লক্করঝক্কর জাহাজে নিরাপত্তা-হীন পর্যটকরা। সোমবার এমভি পারিজাত নামের জাহাজটি ২৪০ পর্যটক নিয়ে ফেরার পথে দমকা হাওয়ার কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে উত্তাল ঢেউয়ের কবলেপড়ে জাহাজটি হেলে-দুলে চলতে থাকলে পর্যটকদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এসময় শিশু, নারী ও পুরুষ পর্যটকেরা বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

১৪ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে এমভি পারিজাত জাহাজটি টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এর আগে মঙ্গলবার সকালে জাহাজটিতে করে টেকনাফের দমদমিয়া বিআইডব্লিউটিএ এর জাহাজ ঘাট থেকে প্রায় দুইশতাধিক পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপ বেড়াতে গিয়েছিলেন। এরমধ্যে সোমবার বেড়াতে যাওয়া অর্ধশতাধিক পর্যটক নিয়ে মঙ্গলবার জাহাজটি সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে ছেড়ে আসার ১৫ মিনিটের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঢেউয়ের কবলে পড়লে পর্যটকেরা কান্নাকাটি ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এসময় অনেকেই বমি করার পাশাপাশি লাইভ জ্যাকেট পড়ার জন্য ছুটোছুটি করতে থাকেন।

ওই জাহাজে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, জাহাজটিতে প্রায় আড়াইশতাধিক পর্যটক ছিল। সেন্টমার্টিন জেটি থেকে ছেড়ে আসার ১৫ মিনিটের মধ্যেই বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়লেই জাহাজটি দুলতে থাকে। এই সময় জাহাজে থাকা শিশু, নারী ও পুরুষেরা পর্যটকেরা অনেকে কান্নাকাটি ও বমি করেন।

তিনি আরো বলেন, এই জাহাজে তাদের ৩৭জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে আল্লাহর বড় রহমত বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে পর্যটকেরা রক্ষা পেয়েছেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জাহাজটি টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছালে পর্যটকদের মাঝে স্বস্তি নেমে আসে। এরপর পর্যটকরা স্ব-স্ব উদ্যোগে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
এমভি পারিজাত টেকনাফের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সোহেলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি ফলে তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী অধিকাংশ জাহাজ ফিটনেস বিহীন। কেউ হাইকোর্টের আদেশে কেউ ক্ষমতার দাপটে পর্যটকদের মৃত্যুর ঝুঁকিকে ফেলে বানিজ্য করে যাচ্ছে দীর্ঘ বছর ধরে। এমনকি নদীর জাহাজ সমুদ্রে চলছে এমন জাহাজও রয়েছে সেন্টমার্টিন রুটে।

বড় কোন দুর্ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত প্রশাসনের টনক নড়বে বলে মনে হয় না।
সম্পূর্ণ অগোছালো কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প যে যার যেমন ইচ্ছে বানিজ্য করে যাচ্ছে সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা নেই থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে মনে হয়না।

ট্যুরিস্ট পুলিশ টেকনাফের উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দমকা হাওয়ার কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়লে জাহাজটি হেলে-দুলে চলতে থাকেন। এতে করে পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ কামরুজ্জামান জানান, আজকে বাতাস ছিল তাই এমভি পারিজাত বঙ্গোপসাগরে সমস্যায় পড়েছিল। পরে স্বাভাবিক হয়ে নিরাপদে টেকনাফ ঘাটে পৌছে। এখবর পাওয়ার পর সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখা হয়েছে।
কিভাবে নদীতে চলার জাহাজ বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন রুটে অনুমতি পেয়েছে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান এটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় বলতে পারবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই পথে চলাচলকারী আরো অনেক জাহাজ লক্করঝক্কর এবং ফিটনেসবিহীন। ভোক্তভোগীরা এসব চলাচল অযোগ্য জাহাজ ও মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ