Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাসের হার ১৩ দশমিক ৪০ ভাগ কমেছে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে : বিপর্যয়ের নৈপথ্যে বন্যা পরিস্থিতি

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৭:০৭ পিএম

পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ সিলেট শিক্ষাবোর্ডে। অবিশ^াস্য এ অবনতিতে ফলাফল বিপর্যয়ের চিত্র চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার দরকার নেই। ফলাফল পরিসংখ্যানে, দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ফলাফলে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অবস্থান ৬ষষ্ঠতে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা। বন্যায় মানসিক ও পারিপাশির্^ক অবস্থা লন্ডভন্ড করে দেয়া গোটা সিলেটবাসীর। এছাড়া মানবিক ও ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অবনতি ঘটায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক পাসের হারে। এরমধ্যে শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই খারাপ করেছেন ইংরেজি বিষয়ে।
ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে সর্বশেষ পাঁচ বছর ধরে ফলাফল ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার। ২০১৮ সালে বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২ দর্শমকি ১১ ভাগ। ২০১৯ সালে পাসের হার কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ দশমিক ০৫ ভাগে। এরপর ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের কারনে গ্রহণ করা হয়নি এইচএসসি পরীক্ষা। তখন ‘অটোপাস’ দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। ফলে শতভাগ ছিল পাসের হার। করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রিত হয়ে য্ওায়ায় সীমিত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় ২০২১ সালে। তখন পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮০ ভাগ ছিল সিলেট বোর্ডে। গত ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলো আজ বুধবার। প্রকাশিত ফলাফলে পাসের হার ৮১ দশমিক ৪০ ভাগ। ২০২১ সালের চেয়ে ১৩.৪০ ভাগ কমেছে এবার পাসের হার। এবার ৬৬ হাজার ৪৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৪ হাজার ১২২ জন। সেই হিসেবে ফেল করেছে ১২ হাজার ৩৬৯ জন। অথচ এর আগের বছর (২০২১) ৬৬ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছিল ৩ হাজার ৪৬৮ জন।
শিক্ষা বোর্ডে সংশ্লিষ্টদের মতে, এবার ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো হয়নি। বিশেষ করে মানবিক ও ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক পাসের হারে। ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৯৭ ভাগ। এবার সামান্য কমে ৯০ দশমিক ৫০ ভাগে দাঁড়িয়েছে। ওই বছর মানবিক বিভাগের ৯৬ দশমিক ১৩ ভাগ শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। কিন্তু এবার পাস করেছে ৭৯ দশমিক ১৮ ভাগ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এ বিভাগে ১৬ দশমিক ৯৫ ভাগ কমেছে পাসের হার! ২০২১-এ ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৯৫ ভাগ। কিন্তু এবার ১০ দশমিক ৭২ভাগ কমে পাসের হার হয়েছে ৮০ দশমিক ২৩ ভাগ।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সদস্য সচিব কবির আহমদ বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যায় ঘর বাড়ির সাথে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল অনেকেরই বই-খাতা। অনেকে প্রস্তুতিও নিতে পারেনি ঠিকমতো। যে কারণে কিছুটা খারাপ হয়েছে ফলাফল। তবে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয় কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে. পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ফলাফলে অসন্তোষের কারন নেই।
সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ইংরেজিতে খারাপ করেছে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। এ বিষয়টিতে একটু খেয়াল করলেই ফলাফল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব আগামীতে।’
এদিকে, পাসের হারে পিছিয়ে পড়লেও গেলবারের চেয়ে এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে। ২০২১ সালে ৪ হাজার ৭৩১ জন পেয়েছিল জিপিএ ৫। এবার ৪ হাজার ৮৭১ জনে দাড়িয়েছে এ সংখ্যা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ