Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরম দুর্ভোগে নাঙ্গলকোটের রেলযাত্রীরা

সায়েম মাহবুব, নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) থেকে | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

যাত্রী বান্ধব ও আয় বর্ধক নাঙ্গলকোট রেল স্টেশনের যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। ২৪ ঘণ্টায় ৭টি ট্রেন এখানকার যাত্রীদের যাতায়াত সমস্যা লাঘবে যথেষ্ঠ নয়। স্থানীয় এলাকাবাসী সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে ও বিকাল ৫টা থেকে ৮টার মধ্যে কুমিল্লা অভিমূখে ২টি ট্রেন এবং সকাল ৮টা থেকে ১২টার মধ্যে চট্টগ্রাম অভিমুখে একটি ট্রেনের দাবি করে আসছে। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল লাইন চালু হলেও ট্রেন সংখ্যা বাড়েনি। ফলে সরকারের হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের ফসল ঘরে উঠছেনা। স্টেশনে স্টেশনে যাত্রীজট লেগেই আছে।
নাঙ্গলকোট স্টেশন হতে গড়ে প্রতিদিন শুধু একটি ট্রেনে মেঘনায় প্রায় চারশ’ যাত্রী আসা যাওয়া করে। গত ডিসেম্বর মাসে নাঙ্গলকোট হতে এ ট্রেনে ১১,২১১ জন যাত্রী ভ্রমণ বাবদ ৫১১৯৭০/- টাকা আয় করে। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৫০টি সিটের বিপরীতে টিকেটের ব্যবস্থা রয়েছে। যা যাত্রীদের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। প্রত্যহ টিকেটের জন্য স্টেশন চত্বরে রীতিমতো হাহাকার বিরাজ করে এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটে চলেছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনে ওঠতে ব্যর্থ হয়ে যাত্রীরা মই লাগিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠতে বাধ্য হয়। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দে যাতায়াতের নিমিত্তে মহানগর ট্রেনের ১০টি প্রথম শ্রেনির টিকেটসহ আরো ১০০টি টিকেটের বরাদ্ধ দানের জন্য বিশেষ সুপারিশ থাকলেও নির্দেশনা আসছেনা।
নাঙ্গলকোট হতে বিকল্প কোন যাতায়াতের মাধ্যম না থাকায় এখানে নিয়মিত যাত্রীদের চাপ থাকে প্রচুর। এলাকাবাসী মহানগর প্রভাতী ও গোধুলী এবং তূর্ণা নিশিতার স্টপেজ দাবি করে বার বার আবেদন করলেও রেল কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা মিলছেনা। অনলাইন টিকেটিং ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় যাত্রীদের টিকেট ভোগান্তি ও কালো বাজারিদের দাপট লেগেই আছে। এদিকে প্লাটফরমের উত্তর দিকে একটি ওভার ব্রিজের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা নির্মাণে আগ্রহ নেই রেলওয়ের। পর্যাপ্ত শৌচাগারের আভাব লক্ষনীয়। যাত্রী ছাউনি বিশ্রামাগার ও প্লাট ফরমের বাকি কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দে অপেক্ষা করা দুরহ হয়ে উঠে।
নিয়মিত চট্টগ্রামগামী যাত্রী শাহ আলম জানান, টিকিট যে কয়টা বরাদ্দ আছে তাও আবার কালো বাজারিদের দখলে। মহানগর যাত্রী হাসান বলেন, স্টেশনে বিশ্রামাগার নাই, প্লাটফর্মে হকারের যন্ত্রনায় দাঁড়ানো দায়।
উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন কালু জানান, ‘নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাড়াও এ রেল স্টেশন দিয়ে মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম এবং সেনবাগ উপজেলার যাত্রীরাও আসা যাওয়া করার কারণে এখানে যাত্রী ভিড় লেগেই থাকে।’ আরো ২টি আন্তনগর ট্রেনের স্টপেজ জরুরি। বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও, এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণে উদাসীনতায় যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া আন্ত:নগর ট্রেন তুর্ণা নিশীথা ও মসহানগর গোধুলী ট্রেনের স্টপেজ প্রয়োজন মনে করছি।
এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার জামাল উদ্দিন জানান, সকাল ৭টার পর দুপুর ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম যাওয়ার কোন ট্রেন না থাকায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। মেঘনা ট্রেনের একমূখী যাত্রী বেশি হওয়ায় কর্তৃপক্ষ টিকেট বাড়াতে নারাজ। আন্ত:নগর ট্রেন মহানগরে দ্বিমূখী যাত্রী আছে। কিন্তু টিকেট বাড়ছেনা।
এ সব প্রসঙ্গে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সমস্যাসমূহ বাংলাদেশ রেলওয়ে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে। নতুন কোচ সংগ্রহে আসার পরপরই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে বলে আশা করছি। রেল কর্তৃপক্ষ উচ্চতর যাত্রীসেবার বিষয়টি বরাবরই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে আসছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ