Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরাঞ্চলের মানুষের এখনও ঘোড়ার গাড়িই সম্বল

| প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জের ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলের ২৬টি ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় পুরো শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকে প্রায় ৮ মাস এ দুর্ভোগ থাকে। মাইলের পর মাইল বালুর চরের মধ্যেদিয়ে এবং কোথাও কোথাও হাঁটুপানি পার হয়ে গ্রামে গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কৃষিপণ্য চর থেকে শহরে আনতে গিয়ে কৃষকরা চোখের পানি ফেলেন। কৃষিপণ্য বিক্রির পর লভাংশের বেশিরভাগই পরিবহন ব্যয় হয়। চরাঞ্চলের পরিবহন বলতে এখনো প্রাচীন আমলের ঘোড়ার গাড়িই মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের একমাত্র বাহন। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও চরের বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার এক দশক পূর্ব থেকে যমুনা নদীর ডান তীর ভাঙনের মুখে পড়ে। রংপুরের কাউনিয়া থেকে পাবনার ভেড়াকোলা পর্যন্ত যমুনা নদী বিস্তৃত। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাই যমুনার ব্যাপক ভাঙনের মুখে পড়ে। স্বাধীনতার পরবর্তীতে চরাঞ্চলের ব্যাপকভাবে জনমানুষের বসতি স্থাপন হয়। যমুনার তীরবর্তী ৫টি উপজেলা হয়। যমুনার তীরবর্তী ৫টি উপজেলা কাজিপুর উপজেলার ৮টি, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৪টি, বেলকুচি উপজেলার ৪টি, শাহজাদপুর উপজেলার ৪টি এবং চৌহালী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন চরাঞ্চলকে ঘিরে প্রতিষ্ঠিত হয়। চরাঞ্চলের বালি মিশ্রিত মাটিতে মরিচ, বাদাম, কালাই, আখ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মসলার ও সবজির ব্যাপকভাবে আবাদ হয়ে থাকে। নগর জীবনের আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই চরাঞ্চলবাসীর ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অধিক ফসল চাষ করে শহরে এনে তারা বিক্রি করে জীবনযাপনের অধিক প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটায়। কিন্তু বিদ্যুৎ পাওয়া তাদের স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। সোলার সিস্টেমে অনেকে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে নিলেও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চরাঞ্চলবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর। কাজিপুরের চরাঞ্চলের মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজমহর জানান, সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলের এখন স্কুল-কলেজ মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নানা ফসল উৎপাদন হচ্ছে। বিশেষ করে মরিচ ও সবজির আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে পণ্য আনা-নেয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদে প্রকল্প দেয়া হলেও তা আংশিক বাস্তবায়ন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও সহযোগিতা পাওয়া যায় না। অথচ শুষ্ক মৌসুমজুড়েই জনগণের দাবি রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ