Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পিছিয়ে পড়েছে কক্সবাজারের মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৫:৪৩ পিএম | আপডেট : ৫:৫৬ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

সারা দেশে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকায় ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। তার মধ্য থেকে দুই দফায় ইতোমধ্যে ১০০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারেও প্রতিটি উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার।

কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিগত ৪ বছর ধরে মুখথুবড়ে পড়ে আছে কক্সবাজারের ৯টি মসজিদ নির্মাণের কাজ। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন। কিন্তু সেখানে কক্সবাজারের কোন মসজিদ না থাকায় বিষয়টি আলোচনায় আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজারের নয় উপজেলায় মডেল মসজিদ স্থাপনের জন্য জায়গা পাওয়া গেছে অনুদান হিসেবে। কিন্তু গণপূর্ত বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের অবহেলার কারণে সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজটি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
এ প্রসঙ্গে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কক্সবাজার অফিসের ডিডি ফাহমিদা বেগম বলেন, প্রতিটি মসজিদের জন্য ১৫-১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা গণপূর্ত বিভাগ কি অজানা কারণে মসজিদ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রেখেছেন তা তিনি জানেন না। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির অজুহাতেও এই প্রকল্পের কাজ ফেলে রেখেছেন এমন কথাও তিনি শুনেছেন বলে জানান।

তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার সদর ও রামু উওজেলার মসজিদ দুইটির কাজ কিছুটা এগিয়ে গেলেও অন্য ৭ উপজেলার কাজ বন্ধ রয়েছে। কক্সবাজার শহরের মসজিটি নাহওয়ায় প্রতিবছর ইফার লাখ লাখ টাকা অপচয় হচ্ছে। অথচ শহরের মডেল মসজিদটি হয়ে গেলে ইফার সব কার্যক্রম সেখানে চলতে পারে। এতে সরকারের লাখ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে।
জানা গেছে, ইফা কক্সবাজার জেলা শাখার কার্যালয়ের জন্য প্রতি বছর ৫-৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। মডেল মসজিদ তৈরী হলে সেখানে ইফার কার্যালয় ও কার্যক্রম পরিচালিত হলে প্রতিবছর সরকারী মোটা অংকের এই টাকা বেঁচে যাবে।
কক্সবাজার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শাহজাহান সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে সবগুলো মসজিদ টেন্ডার হয়। কোথাও জায়গা না পাওয়ায় এবং নির্মাণ সাগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদররা কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করে। এমনকি টেকনাফে কাজ করার জন্য পানিও পাওয়া যায়নি। এতে করে টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। ইতোমধ্যে আবার নতুন করে ঠিকাদরের সাথে চুক্তি হয়েছে।

গণপূর্ত সূত্রে আরো জানা গেছে, সদরের মসজিদ ৪৫ ভাগ, রামুর মসজিদ ৩২ ভাগ, টেকনাফের মসজিদ ২৩ ভাগ, পেকুয়ার মসজিদ ২০ ভাগ কাজ হয়েছে এবং জেলার কেন্দ্রীয় মসজিদের কাজ শুরু হয়েছে। তবে কুতুবদিয়া ও ঈদগাঁওতে এখনো জমি পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে কক্সবারের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি ভেঙে মডেল মসজিদ করার কথা থাকলেও গত ৪ বছর ধরে কোন প্রকার কাজই শুরু না হওয়ায় জেলাবাসীর ব্যাপক সমালোচনার মূখে পড়েছে বিষয়টি।

উল্ল্যেখ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।

৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ জায়গার উপর তিন ক্যাটাগরিতে এসব মসজিদগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এসব মসজিদের প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ