বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, বিগত ১৪ বছরে এই আওয়ামী সরকারের আমলে ১৪ লক্ষ কোটি টাকা এই দেশ থেকে পাচার হয়েছে।
আওয়ামী সন্ত্রাস এবং সরকারের দমন নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দাবীতে এবং বিদ্যুৎ গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কামানোসহ ১০ দফা দাবীতে ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুর শহর থেকে ছয় কিরোমিটার দূরে কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের একটাই দাবী, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। এই দাবীতে বাংলাদেশে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সারা বাংলাদেশে আন্দোলন সংগ্রাম।সেই আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের ১৭ জন ভাইকে হারিয়েছি। এই ১৭ জন ভাই বুকের তাজা রক্ত দিয়েছেন। আজকে আমরা যদি শেখ হাসিনার পতন না ঘটাতে পারি, তাহলে ১৭ জন ভাইয়ের রক্ত বৃথা যাবে, তাদের রক্তের ঋণ আমরা পরিশোধ করতে পারব না।
বরকতউল্লাহ আরো বলেন বাংলাদেশকে একটি বিদেশী তাবেদার নাস্তিকবাদ সরকার নাস্তিকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি প্রথমেই এই সরকারের পদত্যাগ দাবী করবো একটি মাত্র কারণেই, আজকে এদেশের আলেম-ওলামা আছেন, পীর মাশায়েকরা আছেন,এদেশে ৯৫ ভাগ মুসলমান বসবাস করেন। আর এদেশের পাঠ্যপুস্তকে ডারউইনের থিউরি নিয়ে এসেছেন, আমরা নাকি বানর থেকে বিবর্তন হয়ে মানুষ হয়েছি। তাহলে কোরয়ানের যে ঐশী বাণী, আমরা বিবি আদম হাওয়া থেকে মানুষের সৃষ্টি, তাহলে কোরআন মিথ্যা হয়ে যাবে। তাহলে এই সরকারের, শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবী করা এদেশের মানুষের সবার নৈতিক দ্বায়িত্ব। এই নাস্তিকতাকে পাঠ্যপুস্তকে নিয়ে এসেছে আমাদের কোমলমতি বাচ্চারা আগামীদিনে এদেশে নাস্তিক হয়ে বড় হবে, তারা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তাদের মুসমানিত্ব থাকবে না ঈমান থাকবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই সরকার যেমনিভাবে লুট করেছেন, যেমনিভাবে দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছেন বিগত ১৪ বছরে ১৪ লক্ষ কোটি টাকা এই দেশ থেকে পাচার করেছেন।কানাডায় হাজার হাজার বাড়ি করেছেন আওয়ামী পরিবারের লোকেরা। কানাডায় যারা আগের থেকে বসবাস করেন আমাদের যেসমস্ত মেধাবী ছেলেমেয়েরা কানাডায় গিয়ে লেখাপড়া করে উচ্চ চাকুরি করেন লজ্জায় তাদের মাথা হেট হয়ে গেছে। কানাডায় তারা সংগঠন করেছেন আওয়ামী ঘরানার লোকেরা যেন কানাডায় বাড়ি কিনতে না পারেন এজন্য কানাডার সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কানাডার সরকার আইন করেছে তারা বাংলাদেশের আওয়ামী লুটেরাদের বাড়ি কিনতে দেবে না। তাই এখন তারা দুবাই গিয়েছেন, দুবাইতে ইতিমধ্যে সাড়ে সাতশত বাড়ি কিনেছেন। আর দেশের মানুষ ভাত পায় না। একেক বাড়ির দাম দুইশ, তিনশ কোটি টাকা।
কারো নাম উল্লেখ না করে ববরকত উল্লাহ বলেন, আপনাদের মাদারীপুরের একজন সন্তান মাত্র চার বছরের এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ছিলেন। উনি চার বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ টি বাড়ির মালিক হয়েছেন।তারা এমনিভাবে দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছেন।
তিনি বলেন,শেখ হাসিনা সংসদে একটি আইন পাশ করেছেন কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে কেউ অভিযোগ করতে পারবে না। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ লুন্ঠন করে। আওয়ামী পরিবারের লোকেরা বিশ্ব ধনীদের খাতায় নাম লেখিয়েছেন।
বরকতউল্লাহ বলেন, যখন বাংলাদেশে কিছু বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এখন তো বিদ্যুৎ আমাদের টুকরিতে করে ফেরি করে বিক্রি করতে হবে। আজকে বিদ্যুৎ দাম যেভাবে বেড়েছে। আজকে মধ্যবিত্ত, নিন্মবিত্তের নাভিশ্বাস। আজকে এক পরিবার থেকে ৬০ জন এমপি আছেন বাংলাদেশে। এইটা পৃথিবীর ইতিহাসে নাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উদেষ্টা জহিরুল হক শাহাজাদা মিয়া বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডামে মুক্তিযুদ্ধে গেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ১০ দফা বাস্তবায়ন করে দেশে গণতন্ত্র কায়েম করবো।হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে কোন নির্বাচন হবে না।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ১০ দফা মানতে হবে, নির্দলীয় সরাকার দিতে হবে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে তবেইু বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ওবায়দুল কাদের আগে বলতেন খেলা হবে খেলা হবে। এখন বলেন ভুয়া ভুয়া। ওনার মাথায় রোগ দেখা দিয়েছে।
আরেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এ সংগ্রাম।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সমস্য সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর বলেন, শেখ হাসিনার দিন শেষ, খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ। ওবায়দুল কাদের যতই কায়দা করুক শেষ রক্ষা হবে না। আমাদের হাতে আর সময় নেই চূড়ান্তদ আন্দোলনই আমাদের গড়ে তুলতে হবে।
এ বিভাগীয় সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি এফ এম কাইয়ুম।
উপস্থোপনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরিয়া ওরফে স্বপন ও জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল।
আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আজম খান ও আফজাল হোসেন খান পলাশ, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুল আলম, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম,গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক মো. রফিকুজ্জামানসহ প্রমুখ।
ফরিদপুর বিত্রনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বরকত উল্লাহ বুলু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।