রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বোরো ধান রোপণে ব্যাস্ত সময় পার করছেন নাঙ্গলকোটের কৃষকরা। কেউ জমি তৈরি করে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ করেছেন, আবার কেউ কেউ ধান রোপণ শেষে পরিচর্যা শুরু করেছেন। তবে এবার বোরো আবাদের শুরুতেই কৃষকেরা বাড়তি খরচের মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে ডিজেল তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায়, জমিতে হাল চাষ ও সেচ দিতে খরচ বেড়েছে তাদের।
এদিকে বীজ, সার ও শ্রমিকের মজুরির পেছনেও বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে কৃষকদের। গত বছরের তুলনায় সব মিলিয়ে এবার বিঘা প্রতি একজন কৃষকের ব্যয় বেড়েছে অন্তত ২৫ ভাগ টাকা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে তিন চাষে ট্রাক্টর খরচ ছিল ১২০০ টাকা। তবে এ বছর চাষে খরচ হচ্ছে ১৮০০ টাকা। সেচ খরচ ছিল বিঘাপ্রতি ১৫০০ টাকা। সেখানে এবার খরচ হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা। একই সঙ্গে বিঘা প্রতি চারা রোপণের খরচও বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে। উপজেলার রামারবাগ গ্রামের কৃষক ইমরান হোসেন চলতি মৌসুমে এক একর জমি বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুত করছেন। এর জন্য বীজতলার চারাও তৈরি করেছেন তিনি। এখন জমি তৈরি করে চারা রোপণ করছেন। ইমরান হোসেন বলেন, ‘চারা রোপণ পর্যন্ত ইতোমধ্যে বিঘা প্রতি গত বছরের চেয়ে ১৫০০ টাকা বেশি খরচ হয়েছে।
উপজেলার সাতবাড়িয়া, বক্সগঞ্জ, বাঙ্গড্ডা, আদ্রা, পেড়িয়া, মৌকরা, রায়কোট, জোড্ডাসহ সকল ইউনিয়নের প্রায় একই চিত্র ফুটে উঠেছে। কম মূল্যে শ্রমিক না পাওয়ায় দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে খরচ।
ঢালুয়া ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের কৃষক নন্দ দুলাল নিজ জমিতে ৬ জনের শ্রমিক নিয়ে কাঠা প্রতি (আট শতাংশ) ৬০০ টাকা করে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। তিনিও বলেন, ‘আমরা যারা কৃষক তাদের পুঁজি সামান্য। সবকিছুর দাম বেড়েছে। এই খরচের বাজারে সংসার চালানো দায়। এখন বোরো আবাদে অতিরিক্ত খরচ মেটাতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।’
একই ইউনিয়নের পৌষাই গ্রামের অর্দশ কৃষক এনায়েত মাস্টার বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে শ্রমিকদের সবার নাস্তা ও দুপুরে ভাত খাওয়াসহ জনপ্রতি দৈনিক ৫০০ টাকা মুজুরি দিতে হতো। এই বছর তা ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’
উপজেলার রুদ্রছুমা গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎবিল, সেচ খরচ, হালচাষ খরচ, শ্রমিক খরচ, সার ও কীটনাশক খরচ সবই বেড়েছে। এই অবস্থায় আমাদের চাষাবাদ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কিন্তু জমি চাষ না করেও উপায় নেই। বছরজুড়ে খাবো কি? সরকার যদি সহায়তার হাত বাড়ায় তাহলে কৃষকদের জন্য ভালো হতো।’
নাঙ্গলকোট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ১২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চলতি বছরে বোরো ধান আবাদে কৃষকদের খরচ কিছুটা বেড়েছে। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছি। এখনো প্রায় ৫০ শতাংশ ধান রোপণের কাজ বাকি আছে। আশা করছি কৃষকরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বোরো ধারণের চারা রোপণের কাজ শেষ করবেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।