Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিশুর কান্নায় ভাঙা সংসারে জোড়া লাগলো !

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১০:৩২ এএম

মনোমালিন্যের জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করেন স্ত্রী। সেই মামলার শুনানি চলাকালে তাদের একমাত্র শিশু সন্তানের কান্নায় চোখ আটকে যায় আদালত কক্ষের বিচারকসহ উপস্থিত সবার।
শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করেন বিচারক নিজেই। আদালতের একটি মানবিক উদ্যোগের পর ভেঙে যাওয়া সংসার আবারও জোড়া লেগেছে। আদালত কক্ষেই তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে-২ এ এমনই ঘটনা ঘটেছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে কর্মচারী শিমুল পারভেজের সঙ্গে ২০২১ সালের ২ এপ্রিল জান্নাত ফেরদৌসের বিয়ে হয়। তাদের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাঁটাখালী এলাকায়। নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে গতবছরের অক্টোবরে তাদের সংসার ভেঙে যায়। গত ১২ অক্টোবর শিমুলের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুক মামলা করেন জান্নাত ফেরদৌস।

বৃহস্পতিবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজজামানের আদালতে মামলার জামিন শুনানি চলছিল। আসামির কাঠগড়ায় শিমুল এবং সাক্ষীর জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মামলার বাদী জান্নাত ফেরদৌস। কোলে তার ছয় মাসের শিশুটি কাঁদছিল। জান্নাতের চোখ গড়িয়েও পড়ছিল পানি। এসময় মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শিমুল। দুই পক্ষের আইনজীবী পক্ষে-বিপক্ষে তাদের বক্তব্য রাখছিলেন। ওই সময়ই আদালতের দৃষ্টি পড়ে ছোট্ট শিশুটির ওপর। আদালত তাদের কাছে জানতে চান শিশুটির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাদী ও আসামি আপস করতে চান কিনা। তখন জান্নাত ও শিমুল পরস্পরের বিপক্ষে অভিযোগ করতে শুরু করেন। দোষ ত্রুটি উল্লেখ করেন দুজনই।

এসময় আদালত তাদের উদ্দেশে কিছু উপদেশমূলক কথা বলেন। তাদের ছোট্ট সন্তানের ভবিষ্যতের কথাও বলেন। একপর্যায়ে তারা দুজনই আপস করতে রাজি হন। এজন্য আদালতের মধ্যস্থতা চান। এসময় দুই পক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে আদালত তার বিচারকার্য শেষে আদালত কক্ষের ভেতরেই উভয় পক্ষের আইনজীবী, অভিভাবক ও বার সমিতির নেতাদের উপস্থিতিতে কাজি ডাকেন। পরে এক লাখ টাকা দেনমোহরে পুনরায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে শেষে সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়।

সূত্র আরও জানায়, পরে আদালতের বিচারক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজজামান স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই তার খাস কামরায় ডেকে নিয়ে সুন্দর করে সংসার করার উপদেশ দেন। শিশুটিকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ আদরও করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা বলেন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজ্জামান স্যার মানবিক বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় আদালত কক্ষে এ ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একটি সংসার জোড়া লাগলো।



 

Show all comments
  • প্রবাসী-একজন ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১১:১৭ এএম says : 0
    বিবাহ বিচ্ছেদ বলতে উপরোক্ত সংবাদে কি বলা হলো ঠিক বুঝলাম না; ওটা কি তালাক ছিল, নাকি তালাক ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছিলেন। যদি ওটা তালাক হয়ে থাকে, তাহলে মহিলাটির অন্যত্র বিবাহ এবং তালাক না হয়ে থাকলে ইসলামী বিধান অনুযায়ী এই পুনুর্বিবাহ জায়েজ হয়েছে কি?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ