Inqilab Logo

শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শিল্পীদের নিয়ে রাজপথে নামার হুঙ্কার দিলেন সিদ্দিকুর

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:১৩ পিএম

বর্তমানে গোটা বিশ্বজুড়ে বইছে ‘পাঠান’ ঝড়। দীর্ঘ চার বছর পর প্রেক্ষাগৃহে বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের নতুন সিনেমা। তাই ‘পাঠান’ সিনেমাটি ঘিরে বাংলাদেশের দর্শকদেরও রয়েছে তুমুল আগ্রহ। এ কারণে দেশীয় একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সাফটা চুক্তির মাধ্যমে সিনেমাটি দেশে আনার চেষ্টা করছে। এরমাঝেই বলিউড সিনেমা বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিলে শিল্পীদের নিয়ে রাজপথে নামবেন বলে হুঙ্কার দিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান।

বলিউড সিনেমার আমদানি প্রসঙ্গে সিদ্দিক বলেন, ‘আমি সবসময় বিদেশি সিনেমার বিপক্ষে। কারণ, আমার দেশের সিনেমারই অবস্থা ভালো নয়। বিদেশি সিনেমা দেশে আনার মতো যোগ্যতা এখনো আমাদের হয়নি। একটা সুস্থ মানুষের সঙ্গে কখনোই একটি অসুস্থ মানুষ দৌড়ে পারবে না। তেমনই আমাদের সিনেমা পুরোপুরি সুস্থ নয়। বিদেশি সিনেমার সঙ্গে দেশের সিনেমা কখনোই প্রতিযোগিতায় টিকে নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশি সিনেমা দেশে মুক্তি দেওয়া হলে প্রয়োজনে শিল্পীদের নিয়ে আমি রাজপথে নামব। এর আগে একবার শিল্পীরা কাফনের কাপড় পড়ে রাজপথে নেমেছিল। তখন আমাকে বলেছিল কিন্তু সেসময় আমি আসিনি। তবে এবার আর বসে থাকব না। সংগঠন বা শিল্পীরা উদ্যোগ নিলে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ব। তারা যদি উদ্যোগ না-ও নেয় তাহলে শিল্প সংস্কৃতির কথা চিন্তা করে নিজেই উদ্যোগ নেব। তবুও বিদেশি সিনেমা আমদানি ঠেকাতে হবে। আমি শুধু একা নই, সবাইকে নিয়ে প্রতিবাদে শামিল হবো। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সবাইকে জানিয়ে মাঠে নামব। বাংলা সিনেমা, নাটক ও সংস্কৃতিকে যারা ভালোবাসে সেদিন তারাও রাজপথে নামবে।’

বাংলা সিনেমার অবস্থা ভালো নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আগে সিনেমার অবস্থা ভালো করতে হবে তারপর বিদেশি সিনেমা আনার বিষয়ে ভাবতে হবে। এমন অবস্থায় বিদেশি সিনেমা আসলে আমাদের জন্যই ক্ষতি হবে। বিদেশি সিনেমা আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রতিযোগিতায় যাওয়ার মতো এখনো বাংলাদেশের সিনেমা যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এই মুহূর্তে বিদেশি সিনেমা আনার চিন্তা মানে বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। এরকম চিন্তা থেকে সরে আসতে হবে। এ ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কঠোর হওয়ার অনুরোধ করব।’

এই অভিনেতা বলেন, ‘আমাদের সিনেমার স্পিড শক্তিশালী নয়। আগে নিজেদের জায়গা পোক্ত করতে হবে তারপর অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। বিদেশি সিনেমা আসলে লাভের চেয়ে আমাদের ক্ষতিই বেশি হবে। এমনিতেই দর্শক প্রেক্ষাগৃহে দেশি সিনেমা দেখতে যায় না। বিদেশি সিনেমা আসলে আরও বেশি দেশি সিনেমা থেকে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাছাড়া বিদেশি সিনেমা চালানোর মতো আমাদের সেরকম মানসম্মত সিঙ্গেল স্কিন নেই। সিনেপ্লেক্সে বিদেশি সিনেমা চালালে প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের লাভ নেই। তাতে সিনেপ্লেক্স লাভবান হবে। বাংলা সিনেমা মুমুর্ষু অবস্থায় আছে। যারা বিদেশি সিনেমা আনার জন্য ভাবছেন তারা না বুঝেই এসব করছেন। আশা করি, আপনারা সুস্থ মাথায় বিষয়টি চিন্তা করবেন। একজন শিল্পী হিসেবে বিদেশি সিনেমা আমদানির পক্ষে আমি নই।’

‘বলিউডের সিনেমাতে আপত্তি নেই, তবে লাভের ১০ শতাংশ চায় শিল্পী সমিতি’-নিপুণ আক্তারের এমন বক্তব্য টেনে সিদ্দিক বলেন, ‘তিনি যে কথা বলেছেন তার জন্য আমাদের দেশে এখনো সে জায়গা তৈরি হয়নি। এটা বলার জন্য বলা। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম কিছু বলতে হবে তাই বলে দিলাম। যারা এসব ধরনের কথা বলে তাদের আগে মিশন ও ভীষণ চিন্তা করতে হবে। কথা বলার আগে নিজের এডুকেশন চিন্তা করে বলতে হবে। শিল্পীদের অনেক চিন্তা-ভাবনা করে মন্তব্য করতে হয়। তাই কথা বলার আগে ভেবে চিন্তে কথা বলতে হবে। বিতর্কিত কথা বলে আলোচনায় থাকতে ভিউ বাড়ানোর চিন্তা করবেন না। বিতর্কিত কথা বলে বেঁচে থাকার মূল্য নেই।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শনের প্রতিবাদে এর আগে ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি কাফনের কাপড় পরে রাজপথে নেমেছিলেন ঢালিউড তারকারা। সেসময় ব্যানার হাতে নিয়ে স্লোগান দিয়েছিলেন ঢালিউড শীর্ষ নায়ক শাকিব খান, জায়েদ খান, রুবেল, অমিত হাসান, আহমেদ শরীফ, পরীমণিসহ সেলিব্রেটি তারকারা। সঙ্গে ছিলেন সোহানুর রহমান সোহান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকসহ নামি-দামি পরিচালকরাও।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ