Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা

| প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : আগামী ২৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেড়েছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা। চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের প্রার্থীরা দিনরাত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নেরই শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোষ্টার ও ব্যানার। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটার ও সাধারণ জনগণের মাঝে তাদের লিফলেট বিতরণ করছেন। গোটা জেলা এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তুঙ্গে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৪২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ১৫টি সাধারণ সদস্য পদের মধ্যে ১০টি পদে ৩৫ জন এবং ৫টি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদের মধ্যে ২টি ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যেই ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে এবং ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে রয়েছেন। এছাড়াও ১টি সাধারণ সদস্য পদে একজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ওয়ার্ডের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দের পর ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে রয়েছেন সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে আসাদুজ্জামান চৌধুরী, ৮নং ওয়ার্ডে আবুল কাশেম ভূইয়া, ১০নং ওয়ার্ডে মোঃ আইয়ূব আলী ভূইয়া, ১৪নং ওয়ার্ডে আবদুল হক এবং ১৫নং ওয়ার্ডে আবদুল আওয়াল। সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ১নং ওয়ার্ডে শাহীন আক্তার খানম, ২নং ওয়ার্ডে মোছাঃ স্বপ্না বেগম এবং ৫নং ওয়ার্ডে সনি আক্তার। এছাড়াও ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর, সুহিলপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, রামরাইল, সুলতানপুর, মাছিহাতা ও বাসুদেব ইউনিয়ন) একমাত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাদেকুর রহমান শরীফ-(তালা)। প্রতীক বরাদ্দের পর এই ওয়ার্ডের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মোঃ মনির খান-(উটপাখী) ও মোঃ শাহিন ভূইয়া (টিফিন ক্যারিয়ার)। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে একজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত। অপর দুইজন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। অবশ্য জেলা আওয়ামী লীগের দাবি চেয়ারম্যান পদে দলের একক প্রার্থী রয়েছেন। বাকি দু’জন আওয়ামী লীগের কেউ নয়। আওয়ামী লীগের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এ.কে.এম এমদাদুল বারী- (চশমা), বিদ্রোহী প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুল আলম-(আনারস) এবং মোবারক হোসেন-(ঘোড়া)। ২নং সাধারণ ওয়ার্ডে (নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক, গুনিয়াউক, পূর্বভাগ, হরিপুর, চাপরতলা, ধরম-ল ইউনিয়ন এবং সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। এরা হলেন সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ (ঘুড়ি), গোলাম সামদানী (হাতি) ও ফারুকুজ্জামান ফারুক (তালা)। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে (সরাইল উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল, চুন্টা, কালিকচ্ছ, নোয়াগাঁও, সরাইল ও শাহবাজপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ সোলাইমান মিয়া (তালা), মোঃ মনিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল) ও মোঃ পায়েল হোসেন মৃধা (অটোরিকশা)। এই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম (হাতি) নির্বাচন থেকে ঘোষণা দিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে (সরাইল উপজেলার পানিশ্বর উত্তর ইউনিয়ন এবং আশুগঞ্জ উপজেলার আশুগঞ্জ, চরচারতলা, দুর্গাপুর, আড়াইসিধা, তালশহর পশ্চিম ও লালপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ কবির আহমেদ (হাতি) ও এসএম সেলিম জাহাঙ্গীর (তালা)। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে (আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ও তারুয়া ইউনিয়ন এবং সদর উপজেলার বুধল, তালশহর (পূর্ব), সাদেকপুর, নাটাই (উত্তর)ও নাটাই (দক্ষিণ) ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ হালিম শাহ লিল মিয়া (হাতি), মোঃ বাবুল মিয়া (ঘুড়ি), মোঃ আবদুল বাছির (উটপাখী), মোহাম্মদ হোসেন (তালা) ও মোঃ অহিদ মিয়া (টিউবওয়েল)। এই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী মোঃ মোমিন খান (অটোরিকশা) প্রতীক বরাদ্দের পর ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে (বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি, চান্দুরা, ইছাপুরা উত্তর, চম্পকনগর, হরষপুর, পত্তন ও চরইসলামপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ জহিরুল ইসলাম ভূইয়া (তালা) ও আলমগীর কবির (টিউবওয়েল)। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে (আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ও ধরখার ইউনিয়ন এবং কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর, কসবা (পশ্চিম), কসবা পৌরসভা, কায়েমপুর ও বায়েক ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোহাম্মদ মনিরুল হক (ঘুড়ি), মোঃ মোশাররফ হোসেন (অটোরিকশা) ও মোঃ ইয়াছিন মিয়া (তালা)। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে (নবীনগর উপজেলার বড়াইল, বীরগাঁও, কৃষ্ণনগর, নাটঘর, বিদ্যাকুট, নবীনগর পূর্ব ও কাইতলা উত্তর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ আবুল হোসেন আজাদ (টিউবওয়েল), মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (ঘুড়ি) ও মোঃ নাসির উদ্দিন (তালা)। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (নবীনগর উপজেলার নবীনগর (পশ্চিম), বিটঘর, শিবপুর, শ্রীরামপুর, লাউরফতেহপুর, ইব্রাহিমপুর ও নবীনগর পৌরসভা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন প্রার্থী। এরা হলেন কবির হোসেন (হাতি), মোহাম্মদ সেলিম (বক), মোঃ জাকির হোসেন সাদেক (টিউবওয়েল), বোরহান উদ্দিন আহমেদ (তালা) ও শফিকুল ইসলাম (ঘুড়ি)। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর, রসুল্লাবাদ, সাতমোড়া, শ্যামগ্রাম, বড়িকান্দি, ছলিমগঞ্জ ও রতনপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ মিজানুর রহমান (টিউবওয়েল), মোঃ মাহবুব রেজা (ঘুড়ি), এ কে এম মোজাম্মেল হক (বৈদ্যুতিক পাখা) ও জসিম উদ্দিন (তালা)। সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। এরা হলেন সৈয়দা নাখলু আক্তার (দোয়াত-কলম) ও আলেয়া বেগম চৌধুরী (টেবিল ঘড়ি)। সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। এরা হলেন নূরুন্নাহার বেগম (দোয়াত-কলম) ও রাজিয়া বেগম (ফুটবল)। এদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এ কে এম এমদাদুল বারীর (চশমা) পক্ষে জেলার প্রতিটি উপজেলায় মতবিনিময় সভা ও ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের নেতৃত্বে দলীয় নেতারা প্রতিদিন দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। দলের অপর দুই বিদ্রোহী প্রার্থীও নিজেদের মতো করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। অ্যাডভোকেট সৈয়দ এ কে এম এমদাদুল বারীর (চশমা) প্রতীক তাদের দলের সমর্থিত ও একক প্রার্থী। দলীয় প্রার্থীর পক্ষেই দলীয় নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান পদে অপর দুই প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই। তারা দলেরও কেউ নয়। এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল-মামুন বলেন, জেলা পরিষদের ১৫টি সাধারণ সদস্য পদের মধ্যে ৫ জন প্রার্থী এবং ৫টি সংরক্ষিত সদস্য পদের মধ্যে ৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে রয়েছেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলায় ১৩৯৬ জন জনপ্রতিনিধি ভোটার থাকার কথা থাকলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে সীমানা নিয়ে বিরোধের কারনে মামলা মোকদ্দমা থাকায় এবং জনপ্রতিনিধিদের মৃত্যুজনিত কারণে মোট ১৩৬৭ জন জনপ্রতিনিধি আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ